বিলুপ্তির সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। হেফাজতের সদ্যসাবেক আমির জুনায়েদ বাবুনগরীকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন এই আহবায়ক কমিটিতে আল্লামা নুরুল ইসলামকে মহাসচিব এবং মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে। কমিটতে অন্য দুজন হলেন, মাওলানা সালাহউদ্দীন নানুপুরী ও দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান।
আজ সোমবার (২৬ এপ্রিল) ভোর রাতে ফেসবুক লাইভে এ কমিটি ঘোষণা করেন হেফাজতের সাবেক ও নবগঠিত কমিটির মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম।
এসময় তিনি বলেন, চলমান অস্থির ও নাজুক পরিস্থিতি বিবেচনায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ও মহানগর কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা পরবর্তী উপদেষ্টা কমিটির পরামর্শক্রমে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলো।
এর আগে রবিবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে হেফাজতে ইসলামের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে সংগঠনটির আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতার পরামর্শে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। ভবিষ্যতে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে এ সংগঠনটির কার্যক্রম শুরু হবে।
মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সারাদেশে বিক্ষোভ-সহিংসতা হয়। এরপর হেফাজতের কেন্দ্রীয় যগ্মমহাসচিব মামুনুল হকসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ১৯ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৭৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৬৯ হাজারের বেশি জনকে আসামি করা হয়েছে।
২০১৩ সালের শাপলাচত্ত্বরের ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এবং গত ২৬ মার্চ রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে তাণ্ডবে সংশ্লিষ্টতা ও উস্কানির অভিযোগে মামুনুলসহ একের পর এক শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার হতে থাকে। এই চাপের মুখে সংগঠনটির নেতারা আপসের পথে হাটার চেষ্টাও করেন। স্বরাাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন। কিন্তু সাড়া পাননি তারা। এরই মধ্যে কওমি মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রচলিত সব ধরনের রাজনীতি থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে কওমি মাদরাসার সমন্বিত সর্বোচ্চ শিক্ষা বোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতিতে শাপলা চত্তর তাণ্ডবের মূল হোতা বলে অভিযুক্ত নেতাদের নেতৃত্বে থাকা হেফাজত আর পথ দেখছে না। বাধ্য হয়ে নেতৃত্ব পাল্টানোর এই ঘোষণা এলো।