বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ে নিজ বাড়িতে এক অনুপ্রবেশকারীর হাতে বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খান উপর্যুপুরি ছুরিকাঘাতের শিকার হন। অস্ত্রোপচারের পর তিনি বিপদমুক্ত আছেন বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকেরা।
৫৪ বছর বয়সী সাইফ আলী খানকে মেরুদণ্ড, গলা এবং হাতে ছুরিকাঘাত করা হয়। তার চিকিৎসকরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যে তিনি “সম্পূর্ণ সুস্থতার পথে” রয়েছেন।
খানকে অস্ত্রোপচার করা চিকিৎসকদের একজন নীতিন দাঙ্গে বলেছেন, “তার মেরুদণ্ডে ছুরির আঘাতের কারণে থোরাসিক স্পাইনাল কর্ডে গুরুতর আঘাত লেগেছে। ছুরি অপসারণ এবং মেরুদণ্ড থেকে বের হওয়া তরল মেরামতের জন্য অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মধ্যরাতের পর বান্দ্রার অভিজাত এলাকায় নিজের অ্যাপার্টমেন্টে চোর সন্দেহে ওই অনুপ্রবেশকারীকে আটকানোর চেষ্টা করলে তার ওপর হামলা চালানো হয়।
অ্যাপার্টমেন্টে অবস্থান করা এক নারী কর্মীও আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সাইফ আলী খান ভারতের সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক মনসুর আলী খান পতৌদি ও অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরের ছেলে। তিনি বলিউডের আরেক অভিনেত্রী কারিনা কাপুরকে বিয়ে করেছেন। তার আগের পক্ষের মেয়ে সারা একজন বলিউড অভিনেত্রী।
ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা দীক্ষিত গেদাম সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ হামলাকারীকে শনাক্ত করেছে এবং তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। তিনি বলেন, “অভিযুক্তরা ফায়ার এস্কেপ দিয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা কর। ডাকাতির উদেশ্যেই এটি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মনে হচ্ছে।”
সাইফ আলী খান মোট ৭০ টিরও বেশি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন সিরিজে অভিনয় করেছেন। ২০১৮ সালে মুক্তি পাওয়া নেটফ্লিক্সের প্রথম ভারতীয় প্রযোজনা সেক্রেড গেমসহ বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র এবং সিরিজেও অভিনয় করেছেন। তার আর কারিনা কাপুরের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। বলিউডে বেশ সুপরিচিত এই দম্পতি।
চলচ্চিত্র তারকা ও বিরোধী দলের নেতারা নগরীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির মুখপাত্র ক্লাইড ক্রাস্টো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ প্রশ্ন তুলেন,” যদি এরকম হাই প্রোফাইল মানুষের, যাদের নিজের প্রচুর নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে, তাঁদের বাড়িতেই তাদের উপর হামলা হতে পারে, তবে সাধারণ নাগরিকদের কি হতে পারে?”
ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও তার মিত্ররা নভেম্বরের নির্বাচনে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে নির্বাচনে জয়লাভ করেছে। এর রাজধানীই মুম্বাই।
হোটেল ও রেস্তোরাঁ খাতে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। এর ফলে আগের ৫ শতাংশ ভ্যাটই বহাল থাকছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ডেপুটি কমিশনার অ্যান্ড সেকেন্ড সেক্রেটারি বদরুজ্জামান মুনশি।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) অথবা রবিবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হবে।
এনবিআরের এই কর্মকর্তা বলেন, “মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক আইনের মাধ্যমে রেস্টুরেন্ট সেবার ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ মূসক আরোপ করা হয়। পরে সরকার এই সিদ্ধান্ত কিছুটা পরিবর্তন করে পূণরায় ৫ শতাংশে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে জাতীয় রাসস্ব বোর্ড কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বৃহস্পতিবার বা রবিবারের মধ্যে আদেশ জারি করে রেস্তোরাঁ সেবায় আগের (১৫ শতাংশের স্থলে ৫ শতাংশ) মূসক বহাল করা হবে।”
রেস্তোরাঁ মালিলকদের মানববন্ধন বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “গতকাল আমরা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতিকে একটি চিঠি দিয়ে আমাদের সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরও তারা কেন মানববন্ধন করছেন তা দেখার বিষয়। আমরা তাদেরকে অনুরোধ করব, যেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ভ্যাট ৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে—সেকারণে এখন মানববন্ধন করার প্রয়োজন নেই।”
আন্দোলনকারীদের স্ব স্ব স্থানে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধও করেন তিনি।
৯ জানুয়ারি অধ্যাদেশ জারি করে শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক-ভ্যাট বাড়ানো হয়। সেই তালিকায় রেস্তোরাঁও ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে তাঁর বিদায়ী ভাষণে দেশে কতিপয় অতি-ধনী “অলিগার্ক” শিকড় গাড়ছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, একটি “প্রযুক্তি-শিল্প কমপ্লেক্স” আমেরিকানদের অধিকার এবং গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ লঙ্ঘন করছে।
ওভাল অফিস থেকে ভাষণ দেয়ার সময় বাইডেন, যিনি সোমবার প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন, কতিপয় মানুষের হাতে সম্পদ এবং ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেন।
“আজ, আমেরিকায় একটি ব্যাপক সম্পদ, ক্ষমতা এবং প্রভাবের অধিকারী অলিগার্কি আবির্ভূত হচ্ছে, যেটা আক্ষরিক অর্থে আমাদের গোটা গণতন্ত্র, আমাদের মৌলিক অধিকার, আমাদের স্বাধীনতা হুমকির মুখে ফেলছে,” বাইডেন বলেন।
তিনি “কতিপয় অতি-ধনী মানুষের হাতে ক্ষমতার বিপজ্জনক কেন্দ্রিকরণ”-এর দিকে এবং “তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার যদি না থামানো হয় তাহলে তার বিপজ্জনক পরিণতির দিকে” দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
অতীতে সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স সম্পর্কে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ডয়াইট আইজেনহাওারের হুঁশিয়ারির কথা স্মরণ করে বাইডেন যোগ দেন, “আমি সমানভাবে প্রযুক্তি-শিল্প কমপ্লেক্সের সম্ভাব্য উত্থান সম্পর্কে উদ্বিগ্ন, যেটা আমাদের দেশের জন্য প্রকৃত হুমকি হতে পারে।”
ইলন মাস্ক, জাকারবার্গ আর বেযস
বাইডেনের হুঁশিয়ারি আসলো এমন সময়ে যখন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী কিছু ব্যক্তি এবং প্রযুক্তি শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ কর্ণধার সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রাম্পের পক্ষে চলে গেছে, বিশেষ করে নভেম্বর নির্বাচনে তাঁর বিজয়ের পর।
ধনকুবের ইলন মাস্ক ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় সহায়তার জন্য ১০ কোটি ডলার ব্যায় করেন। মেটার মার্ক জাকারবার্গ আর অ্যামাজনের জেফ বেযস-এর মত অন্যান্য কর্মকর্তা ট্রাম্পের অভিষেক ভাণ্ডারে অনুদান দিয়েছেন এবং ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ক্লাবে গিয়ে প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত রিপাবলিকানের সাথে দেখা করেছেন।
ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট-এর বিচার থেকে দায়মুক্তির অবসান ঘটানোর জন্য বাইডেন সংবিধান সংশোধনেরও ডাক দেন। গত বছর সুপ্রিম কোর্ট ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের কাছে পরাজয়ের পর ফলাফল পাল্টে দেয়ার প্রচেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারি অভিযোগ থেকে ট্রাম্পকে দায়মুক্তি দেয়।
ওভাল অফিস থেকে দেয়া ভাষণ ছিল অভ্যন্তরীণ এবং পররাষ্ট্র নীতিতে তাঁর লেগাসি পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে দেয়া কয়েকটি বক্তব্যের সর্বশেষ। দিনের আগে, তিনি ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে দীর্ঘ-প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাগত জানান, যার ফলে মধ্যেপ্রাচ্যে এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা রক্তপাত বন্ধ হতে পারে।
“আমরা সবাই মিলে যা করেছি, তার প্রভাব বুঝতে সময় লাগবে। কিন্তু বীজ রোপণ করা হয়েছে এবং সেগুলো বড় হবে এবং দশকের পর দশক ধরে বিকশিত হবে,” বাইডেন বলেন।
টেলিভিশন বিতর্কে হোঁচট
বাইডেন যেভাবে আশা করেছিলেন, তিনি সেভাবে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করছেন না। তিনি তাঁর বয়স সম্পর্কে ভোটারদের উদ্বেগ উপেক্ষা করে পুনঃনির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করেছিলেন। দ্বিতীয় মেয়াদ শেষে তাঁর বয়স হতো ৮৬।
রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পের সাথে টেলিভিশন বিতর্কে হোঁচট খাওয়ার পর বাইডেন নিজ দলের চাপে নির্বাচনী দৌড় থেকে সড়ে দাঁড়ান। তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে প্রার্থী হিসেবে অনুমোদন করেন, যিনি নভেম্বরে ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হন।
এখন বাইডেন এমন একজনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন, যাকে তিনি দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বুধবার রাতের ভাষণ শুধু তাঁর প্রেসিডেন্সি নয়, রাজনীতিতে পাঁচ দশকের সমাপ্তি টানলো। তিনি এক সময়ে দেশের সর্বকনিষ্ঠ সেনেটর ছিলেন, যখন ১৯৭২ সালে ৩০ বছর বয়সে ডেলাওয়ের রাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন।
বাইডেন ১৯৮৮ এবং ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেন, এবং পরে বারাক ওবামা তাঁকে তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট রানিং মেট হিসেবে বেছে নেন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুই মেয়াদ দায়িত্ব পালন করার পর ধারণা করা হয়েছিল তিনি অবসর নিয়েছেন। কিন্তু ২০২০ সালে তিনি অপ্রত্যাশিত ভাবে ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হিসেবে রাজনীতির মঞ্চে ফিরে আসেন, এবং ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউস থেকে বিতাড়িত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার পাঁচ দিন আগে বুধবার সন্ধ্যায় ওভাল অফিস থেকে তাঁর বিদায়ী ভাষণ দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্প-এর অভিষেকের পাঁচ দিন আগে তিনি এই ভাষণ দিলেন।
বুধবার সকালে প্রকাশিত এক চিঠিতে, বাইডেন স্মরণ করেন, যেভাবে কোভিড-১৯ এবং ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সংসদ ভবন ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার ছায়ার নিচে তাঁর প্রশাসন যাত্রা শুরু করেছিল। ট্রাম্প সমর্থকদের উদ্দেশ্য ছিল ২০২০ নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেয়া, বাইডেন যে নির্বাচনে জয়ী হন।
“চার বছর আগে, আমরা এক বিপদের শীতকাল আর সম্ভাবনার শীতকালের মাঝে দাঁড়িয়েছিলাম,” বাইডেন চিঠিতে বলেন। “কিন্তু আমরা আমেরিকান হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হই এবং আমরা বিপদ পার হই। আমরা আরও শক্তিশালী, আরও সমৃদ্ধ এবং নিরাপদ হিসেবে বেড়িয়ে আসি।”
প্রেসিডেন্টের বিদায়ী ভাষণ আসলো বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথ তার চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করার এক দিন পর। স্মিথ ২০২০ নির্বাচনের পর বেআইনি ভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
স্মিথের রিপোর্টে বলা হয়, ২০২৪ নির্বাচনে ট্রাম্প জয়ী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে বিচার চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। সেটা না হলে প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ ছিল, স্মিথ দাবী করেন।
ট্রাম্প কোন ভুল কাজ করার কথা বার বার অস্বীকার করেছেন এবং বিশেষ কৌঁসুলির কাজকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন।
বাইডেনের বিদায়ী ভাষণ ছিল ওভাল অফিস থেকে তার পঞ্চম এবং শেষ আনুষ্ঠানিক ভাষণ। বাইডেন সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে বক্তব্য রাখেন, যেখানে তিনি তাঁর পররাষ্ট্রনীতির রেকর্ড-এর প্রশংসা করেন।
ছয় মাস আগে ওভাল অফিস থেকে তাঁর আগের ভাষণে বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করেন এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২৪ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে অনুমোদন করেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের সফল নির্বাচনের সময় তিনি যে “আমেরিকার আত্মার জন্য লড়াই” নীতি নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন, বাইডেন সেটার দিকে ফিরে তাকান।
“আমি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি, কারণ আমি বিশ্বাস করেছিলাম যে আমেরিকার আত্মা এখানে জড়িত ছিল,” বাইডেন চিঠিতে লেখেন। তিনি বলেন, আমেরিকা এমন একটি ধারণা যার ভিত্তি হচ্ছে “আমরা সবাই সমঅধিকার নিয়ে জন্মেছি, সৃষ্টিকর্তা কিছু অবিচ্ছেদ্য অধিকার আমাদের দিয়েছেন, যার মধ্যে আছে জীবন, স্বাধীনতা এবং সুখের সাধনা।”
“আমরা কখনোই এই পবিত্র ধারণা পুরোপুরি ধারণ করতে পারি নাই, কিন্তু আমরা সেগুলো থেকে কখনো মুখ ফিরিয়েও নেই নাই,” তিনি বলেন। “এবং আমি বিশ্বাস করি না যে, আমেরিকান জনগণ এখন সেগুলো থেকে সড়ে যাবে।”
বাইডেনের ইতিহাস
বাইডেন তাঁর মেয়াদ শেষ করছেন পররাষ্ট্রনীতিতে সাফল্য দিয়ে। মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি ঘোষণা করেন যে ইসরায়েল এবং হামাস গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে।
“এটা সম্ভব করার পেছনে কারণ শুধু এই না যে, হামাস চরম চাপের মধ্যে ছিল এবং লেবাননে যুদ্ধবিরতি আর ইরান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে আঞ্চলিক প্রেক্ষাপট পাল্টে গেছে – এর পেছনে আমেরিকার লেগে-থাকা এবং প্রচণ্ড পরিশ্রমী কূটনীতিরও অবদান রয়েছে,” বাইডেন বলেন। “এটা অর্জনের জন্য আমার কূটনীতি কখনো থেমে থাকেনি।”
হোয়াইট হাউসে দেয়া বক্তব্যে বাইডেন বলেন যে তাঁর প্রশাসন এই চুক্তিতে মধ্যস্ততা করেছেন, যেটা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব পড়বে মূলত পরবর্তী প্রশাসনের উপর। ট্রাম্প তাৎক্ষণিকভাবে চুক্তির জন্য কৃতিত্ব দাবী করেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে এক বার্তায় বলেন যে, “শুধু মাত্র নভেম্বরে আমাদের ঐতিহাসিক বিজয়ের কারণেই এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্ভব হলো।”
জরিপ সংস্থা গ্যালাপ অনুযায়ী, বাইডেন তাঁর মেয়াদ শেষ করছেন ৩৯ শতাংশ ইতিবাচক রেটিং নিয়ে। তিনি তাঁর প্রশাসনের শেষ কয়েক সপ্তাহ ব্যবহার করেছেন তাঁর লেগাসি পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে।
টেনেসি রাজ্যের ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল ইতিহাসবিদ থমাস শোয়ার্টজ বলেন যে, আগামী চার বছর ট্রাম্প কীভাবে শাসন করেন তা বাইডেনের লেগাসির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
“যদি ট্রাম্পের শাসন বিপর্যস্ত হয় … হয় অর্থনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে এসে, অথবা বিশ্বে যদি যুদ্ধ-বিগ্রহের কারণে আরও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তাহলে বাইডেনের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হবে,” তিনি ভিওএ-কে বলেন। “ট্রাম্প যদি আসলেই গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন যা বাইডেন এবং ডেমোক্র্যাটরা বলেছে, তাহলে আমার মনে হয় বাইডেনকে দূরদর্শী হিসেবে গণ্য করা হবে।”
অন্যদিকে, একটি শক্তিশালী অর্থনীতি হাতে পেয়ে এবং বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়া সমস্যা কমে আসায়, ট্রাম্পের সামনে সুযোগ আছে রনাল্ড রেগানের মত একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবির্ভূত হবার, শোয়ার্টজ বলেন। সেক্ষেত্রে, ইতিহাসবিদরা বাইডেনকে আইনপ্রণয়নের ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য উল্লেখ করবে, কিন্তু “ভালবাসার সাথে স্মরণ করা হবে না।”
‘ঐতিহাসিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি’
হোয়াইট হাউস দেশে এবং বিদেশ বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের সাফল্যের একটি বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করে।
তালিকায় বিশেষ করে উল্লেখ করা হয় “ঐতিহাসিক” অর্থনৈতিক অগ্রগতি, যার ফলে এক কোটি ৬৬ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এবং মোট দেশজ সম্পদ (জিডিপি) ১২.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তালিকায় অবকাঠামোতে বিনিয়োগ, পরিবেশ-বান্ধব জ্বালানি, এবং বাইডেন-প্রণীত আইনের মাধ্যমে কম্পিউটার চিপ উৎপাদনকারী সেমিকন্ডাক্টর, চিপস অ্যাক্ট উল্লেখ করা হয়।
হোয়াইট হাউস যুক্তি দেখায় যে, ন্যায্য করনীতি এবং যেখানে সাহায্য দেয়া প্রয়োজন সেখানে সাহায্য দিয়ে বাইডেন প্রশাসন “আরও শক্তিশালী, ন্যায্য অর্থনীতি” পুনর্নির্মাণ করেছে। এর ফলে, সমাজের নিচের স্তর থেকে অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
বাইডেন তাঁর চিঠিতে বলেন যে, “এই জাতিকে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে সেবা করা ছিল আমার জীবনের বড় সুবিধা।”
“আমি আমার হৃদয় আর আত্মা আমাদের দেশকে দিয়েছি। এবং আমেরিকান জনগণের ভালবাসা এবং সমর্থন আমাকে লক্ষ গুন বেশি আশীর্বাদ দিয়েছে।”
গাজায় অস্ত্রবিরতি ও পণবন্দি চুক্তির ঘোষণাকে বুধবার স্বাগত জানিয়েছন জাতিসংঘের মহাসচিব। এই চুক্তি রবিবার থেকে কার্যকর হবে।
আন্তোনিও গুতেরেস সংবাদদাতাদের বলেন,“আমি, মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীদের এই চুক্তি সম্ভব করার লক্ষ্যে তাদের নিবেদিত প্রচেষ্টার প্রশংসা করছি। একটি কূটনৈতিক নিস্পত্তি খুঁজে পেতে তাদের অবিচল প্রতিশ্রুতি এই অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তাদের প্রতিশ্রুতিকে বহাল রাখতে এবং এটা নিশ্চিত করতে যে এই চুক্তি যেন সম্পুর্ণ ভাবে বাস্তবায়িত হয়”।
যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের সঙ্গে এই মধ্যস্ততায় যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল-সানি দোহায় সংবাদদাতাদের বলেন যে এই চুক্তির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ হচ্ছে ৪২ দিন। এই সময়ের মধ্যে, হামাস ৩৩ জন পণবন্দিকে মুক্তি দিবে যারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়লে সন্ত্রাসী হামলার সময় থেকে হামাসের হাতে বন্দি হয়ে রয়েছে। এর পরিবর্তে ইসরায়েলও বহু ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিবে।
আল সানি বলেন প্রথম পর্যায়টি বাস্তবায়িত হওয়ার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের বিস্তারিত বিষয়টি সম্পর্কে সম্মতি পাওয়া যাবে।
১৫ মাস আগে হামাসের আক্রমণের ফলে এই সংঘাত শুরুর সময় থেকেই জাতিসংঘের প্রধান অস্ত্রবিরতি ও পণবন্দিদের মুক্তির দাবি করে আসছেন। এই সংঘাত গাজার কুড়ি লক্ষেরও বেশি অধিবাসীর জন্য মারাত্মক মানবিক সংকট তৈরি করেছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে গাজায় ৪৬,০০০ ‘এর ও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আরও হাজার হাজার লোক আহত হয়েছে।
গুতেরেস বলেন, “আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে এই সংঘাতে যে মারাত্মক দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তার প্রশমন করা। জাতিসংঘ এই চুক্তি বাস্তবায়নকে সমর্থন দিতে এবং অসংখ্য ফিলিস্তিনি যারা দূর্ভোগের শিকার তাদের জন্য মানবিক ত্রাণ বৃদ্ধি করতে প্রস্তুত।
মানবিক সাহায্য
বলা হচ্ছে এই চুক্তির প্রথম পর্যায়ে প্রতিদিন গাজায় ৬০০টি ট্রাক ভর্তি মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিধান রয়েছে। আইন লংঘন ও ফিলিস্তিনিদের বেপেরায়া হয়ে ওঠায় যানবহরগুলো প্রায়শই লুট করা হয়। গুতেরেস বলেন এটা জরুরি যে গাজা জুড়ে ত্রাণ বিতরণে “ উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা” দূর করতে হবে যাতে ত্রাণ বিতরণ বৃদ্ধি করা যায়।
মহাসচিব বলেন, “ আমাদের পক্ষ থেকে আমরা তাই-ই করবো যা মানবিক ভাবে সম্ভব এটা জেনেও যে আমরা গুরুতর চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবো। আমরা আশা করি আমাদের এই প্রচেষ্টার পাশাপাশি অন্যান্য মানবিক সংগঠন, বেসরকারি ক্ষেত্র ও দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগও এ ধরণের প্রচেষ্টা চালাবে”।
গুতেরেস বলেন যে আন্তর্জাতিক সমাজ যেন ভুলে না যায় বৃহত্তর লক্ষ্যের কথা- ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের জন্য দুইটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা।
তিনি বলেন, “আমি সকল পক্ষ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে ফিলিস্তিনি, ইসরায়েলি ও ব্যাপকতর অঞ্চলের জন্য উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণের লক্ষ্যে একটি বিশ্বাসযোগ্য পথ সৃষ্টির সুযোগ গ্রহণ করতে। দখলদারিত্ব শেষ করে এবং আলোচনার মাধ্যমে দু’টি রাষ্ট্র সমাধানের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব ও আগেকার সমঝোতা অনুযায়ী শান্তি ও নিরাপত্তার মধ্যে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র সৃষ্টি এখন জরুরি অগ্রাধিকারের বিষয়”।
বৃহত্তর অঞ্চল
তাঁর ২০২৫ সালের কর্মসূচির বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বুধবার দিনে আরও আগে দেওয়া ভাষণে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের দিকে এবং বাশার-আসাদ পরবর্তী সিরিয়া ও পরিবর্তিত ইরানের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে গুতেরেস বলেন মধ্যপ্রাচ্য নতুন রূপ নিচ্ছে যদিও এর ফলাফল অনিশ্চিত।
গুতেরেস ওই অঞ্চলের ক্রীড়কের প্রসঙ্গে বলেন, “ গোটা অঞ্চলে উগ্রবাদিদের আমাদের অস্বীকার করা উচিৎ যারা শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের প্রতি বাধা স্বরূপ”।
হামাস ও ইসরায়েল একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তি সম্পাদন করেছে যার ফলে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জঙ্গি গোষ্ঠীটির কাছে কিছু পণবন্দী মুক্তি পাবেন বলে মধ্যস্ততাকারীরা এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বুধবার জানিয়েছেন।
ওয়াশিংটনে নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে মার্কো রুবিও’র শুনানীর সময়ে এই খবরটি জানান যুক্তরাষ্ট্র সেনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জিম রিশ।
এই খবরটি দেওয়ার সময়, তিনি সতর্ক থাকার কথাও বলেন।
তিনি বলেন, “এটি উদযাপনের আগে আমাদের অবশ্যই দেখতে হবে কি ভাবে তা কার্যক্ষম হয়”।
এই সংবাদটিকে দ্বিপাক্ষিক ভাবে স্বাগত জানানো হয়। রিশকে প্রত্যুত্তরে ডেমক্র্যাট সেনেটর ক্রিস মারফি বলেন, “ এটি নিশ্চয়ই একটি ভাল খবর”।
তবে দ্য এসোসিয়েটড প্রেসের এক খবরে বলা হয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে হামাসের সঙ্গে অস্ত্র বিরতি চুক্তি এখনো সম্পাদিত হয়নি এবং চূড়ান্ত বিষয়গুলি এখনো ঠিক করা হচ্ছে।
অস্ত্র বিরতির প্রস্তাবের মূল বিষয়গুলো বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়িত করা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দ্য এসোসিয়েটড প্রেসকে এটা নিশ্চত করেছেন যে “কিছু” পণবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে জঙ্গিরা ইসরায়েলে আক্রমণ চালানোর পর থেকে তারা যাদেরকে পণবন্দি করে রেখেছে তাদের মুক্তি দিবে এবং একই সঙ্গে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিবে।
ইসরায়েলি সৈন্যরা গাজা থেক পর্যায়ক্রমে সরে আসবে এবং কিছু ফিলিস্তিনি যারা এই সংঘাতে বাস্তচ্যূত হয়েছে তাদেরকে ফেরত আসতে দিতে হবে এবং ফিলিস্তিনি অসামরিক লোকজনের জন্য সহায়তা বাড়াতে হবে।
মধ্যস্থতাকারীরা যখন অস্ত্রবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য চাপ দিচ্ছেন তখনও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে তারা গাজার উত্তরাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে রাতে বিমান হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে তারা গাজা সিটি, খান ইউনিস ও দেইর আল বালাহতে হামাসকে লক্ষ্যবস্তু করে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার বলেন নিরাপত্তার বিষয়ে ইসরায়েল কোন আপস করবে না এবং ভবিষ্যতে তারা যদি গাজা থেকে কোন ধরণের হুমকির সম্মুখীন হয়, তা হ’লে তারা হস্তক্ষেপ করবে।
জাতিসংঘ মঙ্গলবার জানায় যে সম্ভাব্য অস্ত্রবিরতির আলোকে তারা গাজায় মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের নেতৃত্বে কয়েক মাস ধরে চলা আলোচনা লড়াই বন্ধ করতে ব্যর্থ হয় তবে সাম্প্রতিক সময়ে যখন যুক্তরাষ্ট্র ২০ জানুয়ারি নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতাগ্রহণ ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চার বছরের মেয়াদ সমাপ্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন এই আপস আলোচনা নতুন গতি পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন মঙ্গলবার যুদ্ধোত্তর পুণর্নিমাণ ও গাজার শাসন ব্যবস্থা নিয়ে শেষ মূহুর্তে পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক পলিসি গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাটলান্টিক কাউন্সিলে ব্লিংকেন বলেন, “ গত ১৫ মাসের কৌশলগত অর্জনগুলো নিশ্চিত করার ও তা বহাল রাখার এবং উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণের ভিত্তি রচনার জন্য আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে আমরা প্রায়ই লক্ষ্য করেছি একজন স্বৈরশাসকের জায়গায় আরেকজন স্বৈরশাসককে আসতে যার ফলে সংঘাত ও বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পায়”।
ব্লিংকেন বলেন যে এই পরিকল্পনায় আশা করা হচ্ছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জরুরি কাজগুলি সম্পাদনের জন্য ও অঞ্চলটির উপর নজরদারির জন্য একটি অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষ গঠনের লক্ষ্যে “আন্তর্জাতিক অংশীদারদের” আমন্ত্রণ করবে। তিনি বলেন অন্যান্য অংশীদাররা, বিশেষত আরব রাষ্ট্রগুলি স্বল্প মেয়াদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চত করতে সেনাবাহিনী পাঠাতে পারে।
এই নিরাপত্তা মিশন গাজা ও পশ্চিম তীরকে একত্রিত করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের পথ পরিস্কার হওয়ার উপর নির্ভর করছে। ব্লিংকেন বলেন তখন কাজ হবে, “ মানবিক ও পুনর্নিমাণ প্রচেষ্টার জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হিসেব অনুযায়ী সেই থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ৪৬,৫০০ লোককে হত্যা করা হয়েছে তবে ইসরায়েল বলছে যে এই মৃতের সংখ্যার মধ্যে হাজার হাজার হামাস যোদ্ধারাও রয়েছে।
গাজার অধিকাংশটাই লড়াইয়ের সময়ে অবহেলিত হয় এবং মানবিক সংকটের মুখোমুখি হয়। সেখানকার ২৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যূত হয়ে পড়ে।
এই প্রতিবেদনে কিছু তথ্য এসেছে এপি, এফপি ও রয়টার্স থেকে।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বুধবার বলেন, ভারতীয় মহাসাগর অঞ্চলে আন্তর্জাতিক শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। তিনি বলেন, প্রধান বাণিজ্য রুটে শক্তিশালী নৌ উপস্থিতি তার দেশের সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার।
রাজনাথ সিং কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২০ সালে ভারত-চীনের হিমালয় সীমান্তে সংঘর্ষে ২৪ জন সেনা নিহত হওয়ায় চীনের সাথে ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘটার পরথেকে চীন ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীন ৩৭০টির বেশি জাহাজ নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম নৌবাহিনী।
ভারতীয় মহাসাগরের দ্বীপ দিয়েগো গর্সিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের একটি যৌথ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।
ধারাবাহিক আলোচনার পর অক্টোবরে একটি চুক্তি হওয়ার পর চীন ও ভারতের সেনারা দুটি মুখোমুখি অবস্থান থেকে সরে এসেছে। তবে ভারতের সেনাপ্রধান এই সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেন, “একটি বিষয়ে অচলাবস্থা” এখনো অব্যাহত রয়েছে।
মুম্বাই শহরে একটি সাবমেরিন এবং দুটি নৌবাহিনীর জাহাজ প্রবর্তন করার সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, “বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্যের বড় একটি অংশ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল দিয়ে অতিবাহিত হয়। ভূ-কৌশলগত কারণে এই অঞ্চলটি আন্তর্জাতিক শক্তি প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও অংশ হয়ে উঠছে।”
তিনি বলেন, ভারতের বাণিজ্যের ৯৫ শতাংশই ভারতীয় মহাসাগর অঞ্চলের সাথে যুক্ত। “এই পরিস্থিতিতে একটি শক্তিশালী ভারতীয় নৌবাহিনীর উপস্থিতি আমাদের সর্ববৃহৎ অগ্রাধিকার হয়ে উঠেছে,” তিনি বলেন।
বাংলাদেশ, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে বিনিয়োগ ও উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোতে বেইজিং প্রভাব বাড়ানোয় চীনকে মোকাবিলা করার চেষ্টা করেছে ভারত।
নয়াদিল্লি ২০৩৫ সালের মধ্যে ১৭৫টি জাহাজের শক্তিশালী নৌ বাহিনী তৈরির পরিকল্পনা করেছে। স্থানীয়ভাবে তৈরি উপাদান ব্যবহারের ওপর নয়াদিল্লি ক্রমবর্ধমানভাবে জোর দিচ্ছে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, জাহাজের নির্মাণের গতি চীনের তুলনায় ধীর। চীন যেখানে বছরে প্রায় ১৪টি যুদ্ধজাহাজ তৈরি করে, সেখানে ভারতের জাহাজ নির্মাণের সংখ্যা মাত্র চারটি।
২০২৫ সালের নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয়পত্র বইয়ের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দসংবলিত গ্রাফিতি রাখা ও বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকার মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
১২ জানুয়ারি ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামের একটি সংগঠন এনসিটিবির কাছে বিক্ষোভ করলে গ্রাফিতিটি সরিয়ে ফেলা হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় পাঠ্যবইয়ে গ্রাফিতিটি পুনর্বহালের দাবিতে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এনসিটিবির সামনে কর্মসূচি পালন করতে যায় সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার ব্যানারে একটি দল।
অন্যদিকে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী অখণ্ড ভারতের কল্পিত গ্রাফিতি সংযোজনের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তিসহ পাঁচ দফা দাবিতে এনসিটিবি ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে যায় স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুই গ্রুপ এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে আলাদাভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে। তবে দুপুর ১টার দিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয় এবং পরবর্তীতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই দল।
এ ঘটনায় দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে।
পাহাড়ি আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি অলিক মৃ বলেন, স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি হামলা চালিয়ে আমাদের ১১ সদস্যকে আহত করেছে।
তার দাবি, এনসিটিবি পাঠ্যবইয়ে এবার ‘আদিবাসী’ লেখা গ্রাফিতি যুক্ত করেছিল। তার বিরুদ্ধে ‘মব’ তৈরি করা হয়। পরে আদিবাসী লেখা গ্রাফিতি বাদ দেওয়া হয়েছে। ওই গ্রাফিতি পুনর্বহাল করতে হবে।
এদিকে স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টির আহ্বায়ক জিয়াউল ইসলাম বলেন, আদিবাসী শব্দটি কোনো জাতিগত পরিচয় নয়। কাজেই আদিবাসী শব্দের বিরোধিতা করলে রেসিজম (বর্ণবাদ) হয় না।
তার অভিযোগ, আমরা তাদের ওপর হামলা চালাইনি। তারাই আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে আমাদের অন্তত ১৪ জনকে আহত করেছে।
আহতদের মধ্যে ৯ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মতিঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহিমেনুল ইসলাম জানান, স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টির সদস্যরা আদিবাসী বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দিলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ভারত এবং তালিবান নেতৃত্বের মধ্যে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে দেশ দুটি সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি আফগানিস্তানে ভারতের প্রভাব বাড়ানোর একটি বড় পদক্ষেপ। কৌশলগত কারণেই তালেবানের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ বাড়ছে।
ভূ-রাজনৈতিক কারণে আফগানিস্তানের গুরুত্ব ভারতের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্পর্ক ভারতের নিরাপত্তার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু পাকিস্তানের সাথে তালিবানের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, ভারতের সাথে তালিবানের যোগাযোগ আরও দৃঢ় হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
গত সপ্তাহে দুবাইতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি এবং তালিবানের কার্যনির্বাহী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে ভারত “নিকট ভবিষ্যতে” আফগানিস্তানে উন্নয়ন প্রকল্পগুলিতে জড়িত হওয়ার এবং স্বাস্থ্য খাত ও শরণার্থী পুনর্বাসনে আরও সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে সম্মত হয়েছে। দুই পক্ষই বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা করেছে।
ভারতকে একটি “গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক এবং অর্থনৈতিক অংশীদার” বলে উল্লেখ করে আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চাই।”
২০২১ সালে তালিবানের আফগানিস্তান দখলের পর একটি বড় পরিবর্তন নির্দেশ করছে এই বৈঠক । ভারতের কাবুলের সঙ্গে দুই দশকের সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টার জন্য একটি বড় কূটনৈতিক ধাক্কা হিসেবে এসেছিল তালিবানের আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়া।
উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান ভয়েস অফ আমেরিকাকে ইমেইলে মন্তব্য করেছেন, “নয়াদিল্লির দৃষ্টিভঙ্গি একটি বাস্তবসম্মত, এই দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে যে তালেবানকে বিচ্ছিন্ন করা আফগানিস্তানে তাদের লক্ষ্য অর্জন করা আরও কঠিন করে তুলবে।
উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান ভিওএ-কে ইমেইল মন্তব্যে বলেছেন, “নয়াদিল্লির দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবসম্মত। কারণ এটা সত্যি যে, তালিবানকে বিচ্ছিন্ন রাখলে আফগানিস্তানে ভারতের লক্ষ্য পূরণ আরও কঠিন হয়ে উঠবে।”
তালিবানের প্রত্যাবর্তন নয়াদিল্লির আশঙ্কার কারণ হয়ে উঠেছিল। ভারতের ধারণা, আফগানিস্তান পাকিস্তানি জঙ্গিদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠতে পারে। এই জঙ্গিরা তিন দশক ধরে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সহিংস বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের নিরাপত্তা স্বার্থের পরিপন্থী কোন কাজ না করে নয়াদিল্লির মধ্যে আস্থা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে নতুন তালিবান নেতৃত্ব।
২০২২ সালে আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে খাদ্য ও ওষুধ পাঠানো শুরু করে ভারত। একই বছর একটি ছোট “প্রযুক্তিগত দল” নিয়ে কাবুলে তার মিশন পুনরায় চালু করে দেশটি।
বুধবার দিনের শুরুতে পাঁচ ঘণ্টার অচলাবস্থার অবসানের পর সিউলে অবস্থিত কড়া প্রহরাধীন মাউন্টেন কমপাউন্ড থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ।
ইউনের গাড়িবহর দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে এসে পৌঁছানোর পর তাকে গত মাসে সামরিক আইন জারির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিদ্রোহের অভিযোগ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরবর্তীতে তাকে রাজধানীর কাছে একটি ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।
কর্তৃপক্ষের হাতে এখন ৪৮ ঘণ্টা সময় আছে। এর মধ্যে ঠিক করতে হবে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে, নাকি তাকে মুক্তি দেওয়া হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে এটাই ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টকে পুলিশী হেফাজতে নেওয়ার প্রথম ঘটনা।
বুধবার দিনের শুরুতে ইউনের বাসভবনের বাইরে ক্ষমতাসীন দলের ৩০ জন আইনপ্রণেতা তাকে আটকের প্রচেষ্টা বানচাল করার জন্য মানববন্ধন তৈরি করেন। ইওনহাপ সংবাদমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে।
তবে তদন্তকারীরা জানান, প্রেসিডেন্সিয়াল নিরাপত্তা বাহিনী এবার আর আগেরবারের মতো ইউনকে আটকের প্রচেষ্টায় তেমন কোনো বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেনি। গতবার ইউনকে আটক করার প্রচেষ্টার সময় তারা মানব-ব্যারিকেড গঠন করে ইউনকে সুরক্ষা দেন।
এক ব্রিফিংয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার দুর্নীতি দমন সংস্থা জানায়, বুধবার “তেমন কোনো” সংঘাত দেখা দেয়নি।
গত মাসে সামরিক আইন জারির দায়ে ইউনকে অভিশংসিত করা হয়েছে। তিনি তার ঐ আদেশের পক্ষে “রাষ্ট্রবিরোধী মহলকে নির্মূল করা” এবং “সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক আইনকে সুরক্ষিত রাখার” যুক্তি দেন।
দেশটির সাংবিধানিক আদালতে অভিশংসনের সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে ইউনকে পদচ্যুত করা হবে।
ইউনের আইনজীবীরা তাকে আটকের প্রচেষ্টার সমালোচনা করে বলেছেন, এটি রাজনৈতিক মদদপুষ্ট উদ্যোগ। তারা আরও যুক্তি দেন, আদালত তাকে আটকের পরোয়ানা জারি করলেও তাদের এরকম কোনো এখতিয়ার নেই এবং প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অভিযোগের তদন্ত করারও কোনো এখতিয়ার নেই দেশটির দুর্নীতি দমন সংস্থার।