মত্ত অবস্থায় স্থানীয়দের গালিগালাজ ও
মারধর করার প্রতিবাদ জানানোয় এক বিজেপি সমর্থকের বৃদ্ধা মাকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল উত্তর
২৪ পরগনার বনগাঁয়। মৃতের নাম কানন রায় (৬২)। বাড়ি গাইঘাটা থানার মানিকহীরা দেশপাড়া এলাকায়। ওই
ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সমীর মল্লিক তৃণমূল কর্মী। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার এক তৃণমূল নেতার
ঘনিষ্ঠ হিসাবেও তাঁর পরিচিতি। সমীরকে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলে ওই নেতার বাড়িতে
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করা
হয় বলেও অভিযোগ। সমীরকে গ্রেফতার করার দাবিও জানান বিক্ষুব্ধেরা। পর পুলিশ গিয়ে
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত সমীরকে।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, কানন দেবীর পুত্র জয়ন্ত রায় বিজেপি
সমর্থক। ওই বৃদ্ধাও বিজেপি করতেন। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, বুধবার রাতে বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় জয়ন্ত এবং তাঁর
স্ত্রীর উদ্দেশে মত্ত অবস্থায় গালিগালাজ করেন সমীর। প্রতিবাদ
জানালে জয়ন্তকে তিনি মারধর করেন বলে
অভিযোগ। সেই সময় মারামারি ঠেকাতে যান জয়ন্তের মা। অভিযোগ, সেই
সময় সমীর ওই বৃদ্ধার মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করেন। তাঁকে বাঁচাতে এলে বৃদ্ধার পুত্রবধূকেও
মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন:
জখম ওই বৃদ্ধাকে রাতেই স্থানীয়েরা চাঁদপাড়া
গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে বারাসত স্টেট জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত
করা হয়। কিন্তু সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা বৃদ্ধাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রাতেই
পুলিশ গ্রেফতার করে সমীরকে।
এর পর থেকেই এলাকায় একটু একটু ক্ষোভ জমতে শুরু
করে বলে স্থানীয়দের একাংশের দাবি। ওই অংশের মতে, তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার যুব নেতা নিরুপম রায় এই ঘটনায় মদত দিয়েছেন। তিনি তৃণমূলের
বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি এবং গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাদক্ষ।
তাঁর বাড়ির সামনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা ভিড় জমাতে শুরু করেন।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, তৃণমূলের যুব
সভাপতি হওয়ার পর থেকেই এলাকায় নিজের প্রভাব খাটান নিরুপম।
তবে নিরুপম সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি
বলেন, ‘‘যে এই জঘন্য অপরাধ করেছে, সেই সমীরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি
জানাচ্ছি। তবে আমি এর সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত নই। আমার বাড়িতে পরিকল্পনামাফিক
বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে।’’
মৃতার পুত্র জয়ন্তের দাবি, তাঁরা
বিজেপির সঙ্গে যুক্ত বলেই বুধবার রাতে তাঁদের গালিগালাজ করা হয়েছিল। যা থেকে গোলমালের সূত্রপাত। ধৃত সমীরের কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনিও।
এ বিষয়ে বনগাঁ
পুলিশ জেলার সুপার জয়িতা বসু বলেন, ‘‘যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই সমীর মল্লিককে
গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিটা আমরা তদন্ত করে দেখছি।’’
Google News,
X (Twitter),
Facebook,
Youtube,
Threads এবং
Instagram পেজ)