* সাইমুম হক * নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম বেভারেজের সেজান জুস ফ্যাক্টরীতে ভয়াবহ অগ্নকান্ড সংঘটিত হয়েছে। এতে শিশু ও নারী মিলে কমপক্ষে ৫২ জন শ্রমিক অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাবার কথা প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে। বিপুল সংখ্যক শিশু ও নারীসহ প্রায় ৮ শত শ্রমিকের এই কারখানায় অগ্নিকান্ডের সময় ঠিক কতজন কাজ করছিলেন তা জানা যায়নি।
এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত (বিকেল ৪ টা ৪০ মিনিট) ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রায় ২০ ঘন্টা ধরে জ্বলতে থাকা কারখানার ধ্বংসস্তূপ থেকে একে একে ৫২ টি মরদেহ উদ্ধার করেছেন । এই মৃতদেহগুলোর কোনটিই চেনার মতো অবস্থায় ছিলনা।
ছয় তলা বিশিষ্ট বিশাল কারখানার পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার আগুন এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত জাহান জানিয়েছেন, কারখানাটি থেকে লাশগুলো বের করা হচ্ছে। এখনও চূড়ান্তভাবে বলা যাচ্ছে না, ঠিক কতজন মারা গেছেন। এর আগে আজ শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে আগুনে অন্তত ৫০ জনের মৃত্যুর কথা সংবাদমাধ্যমকে জানায় ফায়ার সার্ভিস।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকার হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার নিচ তলায় এই আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিশাল কারখানায় বিস্তৃতির কারণে ফায়ার সার্ভিসের ১৭ টি ইউনিট প্রাণান্ত চেষ্টা করেও এসময় পর্যন্ত আগুন সম্পূর্ণ নেভাতে পারেনি।
এদিকে ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে কারখানা ভবনের ভেতরে আটকেপড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে দেরি হওয়ায় পুলিশ ও সাংবাদিকদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিক, তাদের স্বজন এবং প্রতিবেশীরা । আজ শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রায় আধা ঘণ্টা রূপগঞ্জের ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় পুলিশের ওপর এলোপাতাড়ি ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষ চলাকালে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে তিনটি সর্ট গান লুট করা হয়। পরে তার দুইটি উদ্ধার হলেও একটি পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে ।