আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, গ্যাটকো কাজ পাইয়ে দিতে খালেদা জিয়ার কাছে সুপারিশ করেছিলেন আরাফাত রহমান কোকো।
প্রায় ১৪ বছর আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা হয়। কিন্তু এই ১৪ বছরে মামলাটি এগোয়নি একটুও। নানা সময়ে সব আসামিই হাইকোর্ট আসেন মামলাটি বাতিল চাইতে। তেমন দুই আসামি সৈয়দ গালিব ও সৈয়দ তানভীর হাইকোর্টে এসেছিলেন। তারা হাইকোর্টে মামলা বাতিলের আবেদন করেন। সে আবেদনের লিখিত রায়ে বিচাপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বুধবার বলেন, অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। আর এতে সুবিধা নিয়েছিলেন আরাফাত রহমান কোকো।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, এ মামলা খালেদা জিয়াসহ বাকিদের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। নিম্ন আদালতকে রায় পাওয়ার ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে আসামির আইনজীবীরা বলছেন, এ রায় মানতে বাধ্য নয় বিচারিক আদালত।
এরই মধ্যে মারা গেছেন এ মামলার অন্যতম আসামি সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুইয়া ও আরাফাত রহমান কোকো। গ্যাটকোকে কাজ পাইয়ে দিতে কোকোর কাছে তদবির করেন সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী আকবর হোসেনের ছেলে সায়মন।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর জরুরি ক্ষমতা আইনে মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।
অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপরে সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, প্রয়াত মন্ত্রী কর্নেল (অব.) আকবর হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ-সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপরে সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, গ্লোবাল অ্যাগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, গ্যাটকোর পরিচালক সৈয়দ তানভির আহমেদ ও সৈয়দ গালিব আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এ এস এম শাহাদত হোসেন, বন্দরের সাবেক পরিচালক (পরিবহন) এ এম সানোয়ার হোসেন এবং বন্দরের সাবেক সদস্য লুৎফুল কবীর।