Skip to content

৬ মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠি বিভ্রান্তিকর: সেকুলার সিটিজেন বাংলাদেশ

৬ মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠি বিভ্রান্তিকর: সেকুলার সিটিজেন বাংলাদেশ

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা কমে আসা নিয়ে ৬ মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠির তথ্যকে মিথ্যা এবং বাস্তবতা বিবর্জিত বলে আখ্যায়িত করে সেই চিঠি প্রত্যাখ্যান করেছে সেকুলার সিটিজেন বাংলাদেশ। সংগঠনটির নেতারা দাবি করছেন, চিঠিটি পক্ষপাতদুষ্ট এবং তাতে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে, বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হয়েছে।

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এ কথা বলেন।

এতে লিখিত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আহ্বায়ক ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগের অধ্যাপক ড. সুবর্ণ বড়ুয়া, পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. বিমান বড়ুয়া প্রমূখ।

তাপস কান্তি বল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে গত ১৭ মে লেখা এক চিঠিতে দেশটির ছয় কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে যেভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করেছেন তা দেখে আতঙ্কিত ও হতবাক হয়েছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতারা।

তিনি জানান, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের কাছে পাঠানো এক ইমেইলে সেকুলার সিটিজেনস বাংলাদেশের সদস্যরা দাবি করেছেন, মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের উল্লিখিত চিঠিটি পক্ষপাতদুষ্ট এবং তাতে ইতিহাস বিকৃত করে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করা হয়েছে।

তাপস কান্তি বলেন, কংগ্রেস সদস্যদের চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে হিন্দুর সংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে। পাশাপাশি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ একইভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কিন্তু সেখানে উল্লেখ করা হয়নি যে, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থেকেও ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করে। ওই জোটের নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে কোনো আলোচনা করেননি ওই কংগ্রেসম্যানরা।

তিনি আরও বলেন, কংগ্রেসম্যানরা চিঠিতে গত এক দশকে শারদীয় দুর্গাপূজার সংখ্যা সামগ্রিকভাবে সারা বাংলাদেশে বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নেননি। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় ধর্মীয় ও জাতিগত সম্প্রদায়ের মেধাবী তরুণরা সরকারি চাকরি পাননি। একইভাবে, যারা তখন সরকারি চাকরিতে ছিলেন তারা ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে পদোন্নতিসহ নানা ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হন।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বর্তমান সরকারের সময়ে ধর্মীয় ও জাতিগত সম্প্রদায়গত পরিচয় ভুলে যোগ্যতা ও মেধার সঠিক মূল্যায়নের মাধ্যমে সবার সরকারি চাকরি করার অধিকার এবং পেশাগত সুবিধা লাভের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এই বিষয়গুলো মার্কিন কংগ্রেসম্যানরা বিবেচনায় নেননি।

ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বলেন, মনে রাখা উচিত, ১৯৭৫ সালের পরে বাংলাদেশের সংবিধানের অসাম্প্রদায়িক চরিত্র হরণ করা হয়েছিল, সংবিধানের সেই অসাম্প্রদায়িক চরিত্র কিছুটা হলেও এই সরকার ফিরিয়ে এনেছে দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। আমরা সবাই জানি, নির্বাচন এলেই ধর্মীয় ও জাতিগত সম্প্রদায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কংগ্রেসম্যানদের উচিত এবারের নির্বাচনে ধর্মীয় ও জাতিগত সম্প্রদায়গুলোকে নিরাপত্তা প্রদানের জন্যে সরকারকে উৎসাহিত করা। ছয় জনের অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু করা হলে তা হবে বাস্তবতা বিবর্জিত। ওই চিঠির মাধ্যমে জামায়াত-বিএনপির সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের দায়মুক্তির সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।



বার্তা সূত্র