হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হককে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আজ সোমবার (১৯ এপ্রিল) সিএমএম আদালতে তার রিমান্ড চাওয়া হলে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মোহাম্মদপুরের নাশকতা মামলায় তাকে এ রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আদালত প্রাঙ্গণে বাদিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ২০২০ সালের মার্চে বাদিকে মসজিদ থেকে মারধর ও হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় সরাসরি মামুনুল সম্পৃক্ত আছেন। অন্যান্য যারা পলাতক আছেন তাদেরকেও গ্রেপ্তার করতে হবে। তিনি ধর্মীও অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। মামুনুল হক দীর্ঘ দিন পলাতক ছিলেন বলে এর আগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
আসমিপক্ষের আইনজীবী আদালত প্রাঙ্গণে বলেন, এই মামলায় কোনো এক ব্যক্তিকে নাকি মামুনুল হকের নির্দেশে মসজিদ থেকে মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছিল। মামুনুল হক কি করেছেন, কখন করেছেন সে বিষয়ে এখানে কোনো বক্তব্য নেই। গত এক বছর আগের মামলা হলে তাকে এক বছর আগে গ্রেপ্তার করা হয়নি কেনো। গতকাল গ্রেপ্তারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদেরও কোনো রেকর্ড নাই। আসলে পরিকল্পিতভাবে মামুনুল হককে ছোট করতে তার বিরুদ্ধে সাজানো এই মামলা। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ না থাকার পরও তাকে সাত দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে।
তেঁজগাও জোনের ডিসি হারুন আর রশিদ জানিয়েছিলেন, মোহাম্মদপুর থানার নাশকতা ও ভাঙচুর মামলায় সোমবার মামনুলকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
গতকাল রবিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে ২০২০ সালের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এর আগে, পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মামুনুল হককে প্রধান করে ৮৩ জনের নাম উল্লেখ এবং ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৬ এপ্রিল রাতে সোনারগাঁ থানায় পুলিশ বাদি হয়ে দুটি ও একজন সাংবাদিক বাদি হয়ে একটি মামলা করেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দিনে ঢাকায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এলাকায় সংঘাত-নাশকতার ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও দুই থেকে ৩ হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছেন খন্দকার আরিফুজ্জামান নামে এক ব্যবসায়ী। রাজধানীর পল্টন থানায় মামলাটি দায়ের করা এ মামলার এজাহারে এক নম্বর ও হুকুমের আসামি করা হয়েছে মামুনুল হককে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশে সফরকে কেন্দ্র করে হেফাজত ইসলাম যে তাণ্ডব চালিয়েছে তার রেশ কাটতে না কাটতেই সামনে আসে মামুনুল হকের রিসোর্টে নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনা। এ ঘটনার পর একের পর এক অপকর্ম ফাঁস হতে শুরু করে তার বিরুদ্ধে। একাধিক নারী ঘটিত ঘটনা, ফোনালাপ এবং তার তৃতীয় স্ত্রীরও খোঁজ পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা। ফলে এসব বিষয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েন মামুনুল হক। বাড়তে থাকে তার ওপর গোয়েন্দা নজরদারি।