আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে সারা দেশে গণঅনশন ও গণসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও তার নেতৃত্বাধীন ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনগুলোর ঐক্য মোর্চা। গতকাল সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। তিনি ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনগুলোর ঐক্য মোর্চার প্রধান সমন্বয়ক। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তারা এই গণ-অনশন ও গণসমাবেশ কর্মসূচি ৮ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পালন করবেন। তার মধ্যে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ১৮টি জেলা ও ২টি মহানগর; ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের ১২টি জেলা ও ২টি মহানগর; ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার সিলেট বিভাগের ৪টি জেলা ও ১টি মহানগর; ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার চট্টগ্রাম বিভাগের ১২টি জেলা ও ১টি মহানগর; ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলা ও ২টি মহানগরে এবং ২২ সেপ্টেম্বর ভোর ৬টা থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর ভোর ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কেন্দ্রীয় গণ–অনশন ও গণ-অবস্থান করা হবে।
এ ছাড়া ৬ অক্টোবর ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। দাবি আদায় না হলে এই মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের গত নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের দ্রুত বাস্তবায়ন, পার্বত্য চুক্তি ও পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের দ্রুত বাস্তবায়ন এবং সমতলেরক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী অধিবাসীদের জন্য স্বতন্ত্র ভূমি কমিশন গঠন।
সংবাদ সম্মেলনে রানা দাশগুপ্ত বলেন, এ সরকার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেনি। আমরা আশা করেছিলাম ২০২১ সালের মধ্যে এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে এ ব্যাপারে কোনোরূপ অগ্রগতি পরিলক্ষিত না হওয়ায় ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের পর থেকে পর্যায়ক্রমে আন্দোলন করে আসছি। এক প্রশ্নের জবাবে রানা দাশগুপ্ত বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ওপর আমরা সর্বশেষ আস্থাও রাখতে চাই। এর পরও যদি অঙ্গীকার বাস্তবায়িত না হয়, তাহলে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের শামিল হবে এবং এটা কোনোভাবে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও এ দেশের অগ্রগতির জন্য শুভ হবে বলে মনে করি না।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিবাস মাঝি। সঞ্চলনা করেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ প্রমূখ। ##