Skip to content

সুলতানা জেসমিনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেয়েছে পুলিশ

সুলতানা জেসমিনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেয়েছে পুলিশ

বাংলাদেশের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাব হেফাজতে মারা যাওয়া নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেয়েছে পুলিশ। রবিবার (২ এপ্রিল) বিকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ থেকে প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জেসমিনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে কি উঠে এসেছে তা নিয়ে কেউ কথা বলছেন না। রাজশাহী নগর পুলিশের(আরএমপি) মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। তবে প্রতিবেদনে কি আছে তা বলতে পারছি না।”

আদালতে প্রতিবেদন পৌঁছানোর আগে স্পর্শকাতর এই বিষয় নিয়ে কেউ কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। জেসমিনের মৃত্যুর পর ২৫ মার্চ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে তিন সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড ময়নাতদন্ত করে। এই বোর্ডের প্রধান ছিলেন রামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন।

রবিবার রাতে ডা. কফিল বলেন, “ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন অফিস সময়ের মধ্যেই পুলিশকে দেয়া হয়েছে। মৃত্যুর কারণ কি এসেছে সেটা আমি গণমাধ্যমকে বলতে পারব না।” মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুভাষ চন্দ্র বর্মনও প্রতিবেদনের বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।

রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন বলেন, “আমি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে শুনলাম যে রিপোর্ট এসেছে। কী রিপোর্ট এসেছে সেটা আমি জিজ্ঞেস করিনি। রিপোর্ট কোর্টে গেলে সবাই জানতে পারবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র‌্যাব

উল্লেখ্য, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র‍্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র‍্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র‍্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।

সূত্র: ভয়েজ অব আমেরিকা