সিপিএম ত্রিপুরায় উপজাতি ভোট যুদ্ধে
সিপিএম উপজাতি ভোট ফিরে পেতে আবার লড়তে হবে টিপ্রামোথার সঙ্গে। আর এই লড়াইয়ে এবার প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস প্রধান তথা টিপ্রামোথা সুপ্রিমো প্র্দ্যোৎকিশোর মাণিক্য দেববর্মার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে সিপিএমকে। সিপিএম এই যুদ্ধে মুখ করছে তাদের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীকে।

উপজাতি মহলের প্রধান মুখ সিপিএমে
সিপিএম এবার ত্রিপুরায় ৪৭ আসনে লড়ছে। এবার একপ্রকার স্পষ্ট যে তাদের মুখ এবার জিতেন্দ্র চৌধুরী। স্বাভাবিকভাবেই তিনি জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী। তিনি একজন আদিবাসী নেতা। আদিবাসী নেতাকে জোটের তরফে তুলে ধরা হচ্ছে উপজাতি মহলের প্রধান নেতা হিসেবে।

মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে যে নামে আস্থা
টিপ্রা প্রধান প্রদ্যোৎকিশোর মাণিক্য দেববর্মার থেকেও তাঁর গ্রহণযোগ্যতা যে বেশি, তা বোঝাতে তৎপর সিপিএম। এমনকী জোটসঙ্গী কংগ্রেসও তাদের প্রাক্তনী প্রদ্যোৎকিশোরের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে রাখছে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীকে। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে সামনে আনার কৃতিত্বও কংগ্রেসের।

উপজাতি নেতা হিসেব উঠে আসা
৬৫ বছর বয়সী জিতেন্দ্র চৌধুরী ১৯৯৩ সালে বিধানসভায় পা দেন। তিনি দশরথ দেবের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে লড়ে পশ্চিম ত্রিপুরা আসন থেকে জয়ী হন। ২০১৮ সালে তিনি সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নির্বাচিত হন। তিনিই দলের উপজাতি অধিকার প্যানেলের জাতীয় আহ্বায়কও।

ত্রিভাষিক নেতা হওয়ার সুবিধা
মৃদুভাষী জিতেন্দ্র বাংলা, ইংরেজি, কোকবোরোক ভাষায় দক্ষ। অর্থাৎ ত্রিভাষিক নেতা। জোটের নেতারা বলছেন, টিপ্রামোথা সুপ্রিমো তথা প্রাক্তন কংগ্রেসি প্রদ্যোৎকিশোর দেববর্মার থেকে অনেক বেশি একজন ভূমিপুত্র জিতেন্দ্র চৌধুরী। যাঁর বিপরীতে তাঁর লড়াই একজন উপজাতি নেতা হিসেবে, সেখানে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি ভাষা অর্থাৎ বাংলা এবং ককবোরোকে সাবলীলভাবে কথা বলেন না।

এক জোট হয়ে লড়তে আশাবাদী
যদিও বামপন্থীরা টিপ্রামোথা প্রশ্নে নিশ্চুপ থাকছেন। আঞ্চলিক দলের সঙ্গে তারা মিত্রতা বজায় রাখতে চাইছেন। জিতেন্দ্র চৌধুরী স্বয়ং বলেন, “আমরা এখনও কিছু আসনে স্থানীয় পর্যায়ে এক ধরনের বোঝাপড়ার চেষ্টা করছি এবং আমরা আশাবাদী যে, আমরা এক জোট হয়ে লড়তে পারব এবার। আমাদের লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে।”

শূন্য থেকে শুরু করতে হবে
২৫ বছর ত্রিপুরা রাজ্যের উপজাতীয় অঞ্চলগুলি বামদের দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। উপজাতি অঞ্চলে এতটাই বামেদের প্রভাব ছিল যে, বামেরা ২১ থেকে আসন গণনা শুরু করত। মানে ২০টি উপজাতীয় অধ্যুষিত আসনে তাদের জয় ছিল নিশ্চিত। কিন্তু ২০১৮ সালে বিজেপি-আইপিএফটি জোট ২০টির মধ্যে ১৮টি আসনে জিতেছিল। এখন সেখানে দাপট টিপ্রামোথার। ফলে সিপিএম তথা বামেদের এবার শূন্য থেকে শুরু করতে হবে।