Thursday, February 13, 2025

সপ্তাহে শীর্ষে

প্রাসঙ্গিক বার্তা

সন্ত্রাসবাদকে সামাল দিতে সিরিয়ার এইচটিএস নেতাদের সঙ্গে জর্দানের যোগাযোগ

বিশ্লেষকরা বলছেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী ইসলামপন্থি শাসকদের যোগাযোগ রক্ষা করে তাদের সংযত রাখার কৌশল গ্রহণ করেছে যাতে তারা তাদের দীর্ঘ অভিন্ন সীমান্তকে সুরক্ষিত রাখতে পারে। সিরিয়ার এই নতুন প্রশাসনের ব্যাপারে জর্দান নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।

গত সপ্তাহে সুইজারল্যান্ডের ডেভসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বৈঠকে জর্দানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান আল-সাফাদি বলেন যে উভয় দেশ যে সব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন তার মোকাবিলার জন্য একেবারে প্রথম দিন থেকেই সিরিয়ার নতুন হায়াত আল-শাম নেতাদের সঙ্গে জর্দান “খুব গভীর ভাবে” সম্পৃক্ত রয়েছে। জর্দান এবং অন্যান্য দেশ সিরিয়ায় একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ব্যবস্থা দেখতে চায় যেখানে সিরিয়ার সংখ্যালঘু ধর্মীয় ও জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব থাকে।

আল-সাফাদি বলেন, “ সন্ত্রাসবাদ হচ্ছে একটি পরিচিত হুমকি । আমরা লক্ষ্য করছি দায়েশ ( ইসলামিক স্টেট) নতুন করে অস্ত্র-সজ্জিত হচ্ছে, নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে। তারা সিরীয় সেনাবাহিনীর মওজুদ থেকে বহু অস্ত্র নিয়েছে। জর্দানে এখনও মাদক পাচার চলছে। এই হুমকি থেকে মুক্ত হতে আমাদের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। সিরিয়ার আগামি দিন সম্পর্কে আমাদের স্বার্থ রয়েছে। সিরিয়ায় যা হবে তার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে আমাদের উপর। সিরিয়া যদি সফল হয় , আমরা সকলেই তাতে লাভবান হবো”।

ওয়াশিংটন ভিত্তিক ইউ.এস ইনস্টিটিউট অফ পিস’এর একজন সিনিয়র উপদেষ্টা ফারাহ বদৌর বলেন জর্দানকে “ সিরিয়ার সঙ্গে তার ৩৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ অভিন্ন সীমান্ত সুরক্ষার মতো অত্যন্ত জরুরি বিষয়টির দিকে” নজর দিতে হবে “ যাতে অস্থিতিশীলতা যেন তার দেশে ছড়িয়ে না পড়ে”।

বদৌর বলেন, হায়াত আল শাম’এর “ সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা জর্দানের স্থিতিশীলতার উপর প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলবে। তিনি ওই গ্রুপের অনলাইন প্রকাশনায় এইচটিএস’এর আল ক্বায়দার সঙ্গে পূর্বেকার সংশ্লিষ্টতার কথা স্মরণ করিয়ে সতর্ক করে দেন, “এইচটিএস’এর এই অন্তর্বর্তী শাসন যদি ব্যর্থ হয়, গোষ্ঠীটি তা হলে জঙ্গিবাদে ফিরে যেতে পারে তাতে নতুন করে সংঘাত শুরু হতে পারে এবং জর্দানের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন হুমকি দেখা দিতে পারে”।

ওয়াশিংটন ভিত্তিক স্টিমসন সেন্টারের অনাবাসিক ফেলো জর্দানের বিশ্লেষক আমের আল-সাবায়লেহ ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন যে জর্দান নিরাপত্তা, লজিস্টিক্স, টেলিযোগাযোগ ও বিদ্যুৎ বিষয়ে উদ্বেগগুলির বিষয়ে একত্রে কাজ করে এই সব প্রচেষ্টার বিষয়ে সমর্থন প্রদান করে, “ দামেস্কর ভাল বন্ধু হতে পারে”।

আল-সাবায়লেহ বলেন, “ এতে উভয়ের জন্য মঙ্গলজনক হতে পারে এমন অবস্থার ভিত্তিতে জর্দানকে সুসম্পর্ক স্থাপনে সাহায্য করতে পারে এবং জর্দান নিশ্চিত ভাবেই সিরিয়ার এই নতুন বাস্তবতা থেকে লাভবান হতে পারে বিশেষত রাজনৈতিক প্রভাব, রাজনৈতিক স্বার্থ এবং অবশ্যই সিরিয়ার পুণর্নিমাণের অংশ হিসেবে। কিন্তু এইচটিএস সিরিয়ার সবটুকু নিয়ন্ত্রণ করছে না। আইসিস( ইসলামিক স্টেট) ক্ষমতা বাড়ছে এবং তারা জর্দানের সীমান্তের কাছে কিছু এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়”।

বদৌর ও আল-সাবায়লেহ আরও সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে এইটটিএস’এর আদর্শ একই ধরণের আন্দোলনে প্রভাব বিস্তার করতে পারে্ যেমন জর্দানের মুসলিম ব্রাদারহুড । বদৌর গাজা সংঘাত নিয়ে জর্দানের মানুষের মনোভাব উপর ব্রাদারহুডের প্রভাব বিস্তার করার প্রচেষ্টা এবং গত সেপ্টেম্বরে সংসদ নির্বাচনে তাদের বিজয় অর্জনের ব্যাপারটি তুলে ধরেন।

আল-সাবায়লেহ বলেন, “ সিরিয়ায় যে ঘটনাটি ঘটেছে তাতে মুসলিম ব্রাদারহুড ও আইসিসের মতো ইসলামি রাজনৈতিক গোষ্ঠীদের ক্ষমতার লিপ্সা বেড়ে উঠতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত তারা এ রকমটি ভাবতে পারে যে তারা যদি মানচিত্রে থাকে তা হলে তারাও কোন কোন ক্ষেত্রে স্বীকৃতি দাবি করতেই পারে”।

বদৌর লেখেন, এমনকী “ যদি এইচটিএস সরকারি দলে পরিণত হতে সফল হয় , তা হলেও ইসলামি দল থেকে তার উৎপত্তি, জর্দানের জন্য অনন্য এক চ্যালেঞ্জ হয়ে থাকছে”।

পরিশেষে তিনি বলেন, “ জর্দানকে এই সব অভ্যন্তরীন ও আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জগুলির মধ্য দিয়েই যেতে হবে যেমন এইচটিএস পথপরিক্রমা এবং তা সিরিয়া, জর্দান ও বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যের জন্য অনিশ্চিত রয়ে গেছে”।

–ভয়েজ অব আমেরিকা

পাঠক প্রিয়