Skip to content

শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় দণ্ডিত ব্যক্তি গ্রেপ্তার

শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় দণ্ডিত ব্যক্তি গ্রেপ্তার

বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ায়, শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত রিপন হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দিবাগত রাতে, কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের পাশে নিজবাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার রিপন হোসেন(৪৭) কলারোয়া পৌরসভার বাসিন্দা।

র‌্যাব-এর সাতক্ষীরা ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর গালিব জানান, “র‌্যাব সদস্যরা জানতে পারে, রিপন হোসেন কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স সংলগ্ন তার বাড়িতে গ্রেপ্তার এড়াতে শয়ন কক্ষের খাটের নিচে বিশেষভাবে তৈরি সুড়ঙ্গে বসবাস করছেন। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।” শুক্রবার (১৯ মে) দুপুরে তাকে কলারোয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান মেজর গালিব।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সকাল ১০টার দিকে, তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে যশোর ফিরে যাওয়ার পথে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে সড়কের ওপর একটি যাত্রীবাহী বাস (সাতক্ষীরা-জ-০৪-০০২৯) আড়াআড়ি করে রেখে, শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালায় বিএনপি নেতাকর্মীরা।

এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, সাংবাদিকসহ ১০ জনকে মারপিট করা হয়। এ মামলায় গত ১৮ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব ও রিপন হোসেনসহ ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন সাতক্ষীরার একটি আদালত। এছাড়া ৪৪ জনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন একই আদালত। গ্রেপ্তার এড়াতে রিপন হোসেন দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র‌্যাব

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র‍্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র‍্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র‍্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।

সূত্র: ভয়েজ অব আমেরিকা