দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভোট ঘোষণা হওয়া ইস্তক উত্তপ্ত ভাঙড়! এমনকী গণনার দিনও ‘লাশ’ পড়েছে ভাঙড়ে! ভোট পরবর্তী হিংসার নিরিখেও খবরের শিরোনামে দক্ষিণ ২৪ পরগণার এই তল্লাট। তবু এই হিংসা-কবলিত এলাকায় শুভেন্দু অধিকারী যাচ্ছেন না কেন, প্রশ্ন তুলেছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি (Nawsad Siddique)। পাল্টা জবাবে নওসাদকেই দায়ী করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। সেই প্রসঙ্গেই শনিবার নওসাদ বলেন, শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) গুটিয়ে আছেন কেন? উনি বিজেপির বিধায়ক ঠিকই, তবে একইসঙ্গে বিরোধী দলনেতাও বটে। ওঁকে আরও দায়িত্ব নিতে হবে।
শুভেন্দু-নওসাদ আঁতাত আছে বলে বারবার খোঁচা দিয়েছে তৃণমূল। কুণাল ঘোষদের দাবি, নওসাদকে টাকা পয়সা দিয়েও সাহায্য করেন বিরোধী দলনেতা। ফলে শনিবার নওসাদ যা বলেছেন, আগামীদিনে তার ভিন্ন অর্থ খোঁজাও শুরু হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
শুভেন্দু বলেছিলেন, “ভাঙড়ে যেতে আমি রাজি। তার আগে নওসাদকে বলতে হবে, ‘নো ভোট টু মমতা’। ভাঙড়ে যাওয়ার দরজা খুলে দিতে হবে।” বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেছিলেন, নওসাদ তো ভুল বুঝিয়েছেন তাঁর দলের কর্মীদের। বলেছেন বিজেপি সাম্প্রদায়িক।
পাল্টা জবাবে এদিন নওসাদ বলেন, “শুভেন্দুকে বিজেপি নেতার থেকেও বিরোধী দলনেতা হিসেবে বেশি মনে করি। তাঁর কাজ সারা রাজ্যে যেখানে সংবিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে, মানুষের অধিকার ভুলন্ঠিত হচ্ছে, মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, গণতন্ত্র আক্রান্ত হচ্ছে, সেখানে গিয়ে দাঁড়ানো। শুধু ভাঙড়-ক্যানিং-আমতা নয়, গোটা রাজ্যের মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে শুভেন্দুকে।”
নওসাদ আরও বলেন, “রাস্তা খুলে দেওয়ার আমি কে, সে তো খোলাই আছে। উনি শুধু বিজেপির হয়ে কথা বলবেন, এটা তো চলতে পারে না। ওঁকে সারা রাজ্যের মানুষের হয়ে কথা বলতে হবে। সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি-আইএসএফ, যাঁরা তৃণমূলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ তাঁদের হয়ে কথা বলতে হবে।”
মণিপুর নিয়ে মোদীর নীরবতা ‘ব্যাখ্যাতীত, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ’, বলল কংগ্রেস
বাংলার রাজনীতিতে গেরুয়া শিবিরের কোনও নেতার সঙ্গে কোন সংখ্যালঘু নেতার এহেন যুগলবন্দির নজির নেই। অনেকের মতে, এ যেন শঙ্কর-জয়কিষাণের মতো গান বাঁধা চলছে। এমন তালমিল আগে দেখা যায়নি।
নওসাদ শিবিরের মতে, ছোট ভাইজান কুয়োর ব্যাঙ নন। সময় বদলেছে। এখানে সংখ্যালঘু সংখ্যাগুরুর বিষয় নয়। তৃণমূলের হার্মাদদের হাতে হিন্দুরাও আক্রান্ত, মুসলিমরাও আক্রান্ত। ভাঙড় থেকে মুর্শিদাবাদ, সংখ্যালঘু জনভিত্তি আরাবুল থেকে হুমায়ুনদের হাতে আক্রান্ত। তাই কোনও একটি গোষ্ঠীর কথা ভাইজানও বলছেন না। নওসাদ বলছেন, সমষ্ঠির সুরাহার কথা। তৃণমূলের সন্ত্রাস কে তামাম বিরোধী মিলে এককাট্টা হয়ে রুখে দিতে হবে।
নওসাদ এদিন আরও বলেন, “আমি তো ডে ওয়ান থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করে আসছি। বিধানসভাতেও মমতাকে ভোট দিতে বারণ করেছি। মমতাকে ভোট দেওয়া বাংলার গণতন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়।”