শক্তিশালী থেকে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে ‘বিপর্যয়’। আরব সাগরের জলরাশি থেকে জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে ক্রমাগত শক্তি বাড়াচ্ছে সে। ধেয়ে আসছে অতি প্রবল বেগে। ভারতের মৌসম ভবন ইতিমধ্যেই গুজরাতের সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ উপকূলে সতর্কতা জারি করেছে। ভারতের পশ্চিমের অন্য রাজ্যগুলিকেও সতর্ক করা হয়েছে। জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা।
ভারতের মৌসম ভবন জানিয়েছে, বুধবার ১৪ জুন পর্যন্ত গুজরাতের সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ উপকূল বরাবর সমুদ্র প্রবল উত্তাল থাকবে। বৃহস্পতিবার ১৫ জুন আরও বাড়বে দাপট। বিশাল উঁচু উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়বে। বৃহস্পতিবারই ‘বিপর্যয়’-এর ল্যান্ডফল হওয়ার কথা গুজরাত ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী মাণ্ডবী এলাকায়। এর ফলে ভারতের গুজরাতের কচ্ছ ও পাকিস্তানের করাচিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতের গুজরাত, কেরালা, কর্নাটক ও লাক্ষাদ্বীপের মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। ১৪ জুন পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গুজরাতের সৈকত। গুজরাতের কচ্ছ, জামনগর, মোরবি, গির সোমনাথ, পোরবন্দর ও দ্বারকা জেলাতে প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। পাকিস্তান সরকারও সিন্ধু ও বেলুচিস্তানের কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
মৌসম ভবন সূত্রে খবর, পূর্বাভাস অনুযায়ীই গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আরও শক্তি অর্জন করেছে ‘বিপর্যয়’। এখন সেটি পাকিস্তানের করাচি থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং ভারতের গুজরাতের পোরবন্দর থেকে ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে আরব সাগরের ওপর অবস্থান করছে।
এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারতের গুজরাত ও পাকিস্তানের করাচিতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারতের গুজরাত, গোয়া, মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকে প্রভাব পড়বে এই ঘূর্ণিঝড়ের। ১৫০-১৬০ কিলোমিটার বেগে বইবে ঝড়। ল্যান্ডফলের সময় এই ঝড়ের গতিবেগ ১৭০ কিলোমিটারও ছুঁতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে এর জেরেই রবিবার ১৪ জুন রাত থেকেই মুম্বই বিমান বন্দরে ব্যাহত বিমান পরিষেবা। এর জেরে বিমান বন্দরেই আটকে পড়েন অসংখ্য যাত্রী।
রবিবার ১১ জুন মুম্বই বিমানবন্দরে বাতিল করা হয় অথবা পিছিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বিমানের উড়ান। খারাপ আবহাওয়ার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রধান রানওয়ের রাস্তা। এর ফলে, বিপাকে পড়েন অন্তত কয়েকশো যাত্রী।
বিমানবন্দরের মধ্যেই নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন একাধিক যাত্রী। এর ফলে, রাতেই টুইটারে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে যাত্রীদের থেকে বিমান পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার কারণে মার্জনা চেয়ে নেওয়া হয় এয়ার ইন্ডিয়া-র পক্ষ থেকে। খারাপ আবহাওয়ার জেরেই বন্ধ করতে হয়েছে বিমান চলাচল, তবু যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছেন তাঁরা, এমনই বক্তব্য এয়ার ইন্ডিয়ার।