চলমান বিধিনিষেধে রাজধানীর ৩৩টি থানা থেকে গ্রেফতারকৃতদের একযোগে আদালতের গারদখানায় নেওয়া হয়। সেখানে তাদের গাদাগাদি করে রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। বিষয়টি নজরে নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে পুলিশ প্রশাসন ও সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন।
আজ বুধবার (৭ জুলাই) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এই পরামর্শ দেন। এর আগে বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন।
আসাদ উদ্দিন বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি না মানায় যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তাদের ৩৩টি থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রিজন ভ্যানে করে। গাদাগাদি করে প্রিজন ভ্যানে তুলে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আদালতে পাঁচ-ছয়শজনকে, কোনো কোনো দিন আরও বেশি হাজির করা হচ্ছে একসঙ্গে। সেখানে তাদের আত্মীয়রা বাইরে ভিড় করছেন।’
বিষয়টি শেষের দিকে শুনবেন জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের উদ্দেশ্যে আদালত বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেলকে একটু থাকতে বলবেন।
সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, আইনে আছে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হবে। থানা থেকে ডিজিটালি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করলে তো অসুবিধা নেই।
অপর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার বলেন, ‘উনারা মাস্ক পরে বেরোবেন না, মাস্ক কি সরকার সরবরাহ করে দেবে? এতে অপরাধ হয়ে গেল?’ আদালত বলেন, ‘উনি অপরাধের কথা বলছেন না। এখানে পদ্ধতিটি কীভাবে উন্নত করা যায়, তা বলছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে ওই কার্যক্রম পরিচালনা করা যায় সে বিষয়ে চিন্তাভাবনার কথা বলছেন।’
পরে ভার্চুয়ালি আদালতে যুক্ত হন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। তাকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, ‘আইনজীবী আসাদ উদ্দিন একটি বিষয় উপস্থাপন করেছেন। উনি বলছেন, লকডাউন চলাকালে বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ লোককে জরিমানা করা হচ্ছে। তাদের থানায় নিচ্ছে প্রিজন ভ্যানে। একসঙ্গে ৫০ বা ৩০ জনকে থানা হাজতে রাখা হচ্ছে এবং সেখান থেকে কোর্টে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি এখানে যথাযথভাবে বজায় থাকছে না। স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গের জন্য তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা, গ্রেফতার বা আদালতে হাজির করা হচ্ছে। উনার (আসাদ উদ্দিন) উদ্বিগ্নতা এ ক্ষেত্রে থানা থেকে ভিডিও কল বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে করা যায়। এটি অন্যভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করা যায় কিনা।’
অ্যাটর্নি জেনারেল পুলিশ কমিশনারদের সঙ্গে কথা বলে জানাবেন বলে জানান। আদালত সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের সঙ্গেও কথা বলতে বলেন। কেননা, এর সঙ্গে পুলিশ প্রশাসন ও কোর্ট সম্পৃক্ত।