দ্য ওয়াল ব্যুরো: আগামী ২২ জুন আমেরিকায় রাষ্ট্রীয় সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। অন্যদিকে, আমেরিকা সফররত রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) প্রতিদিনই নরেন্দ্র মোদীর শাসনে ভারতের গণতন্ত্রের দুরবস্থায় কথা তুলে ধরছেন। বলছেন, দেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান বিজেপি-আরএসএস দখল করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দলকে স্বস্তি দিল হোয়াইট হাউস। বাইডেন প্রশাসনের গণ যোগাযোগ দফতরের শীর্ষ কর্তা জন কির্বি বলেছেন, ভারতে নরেন্দ্র মোদীর শাসনাধীনে গণতন্ত্র জীবন্ত ও মজবুত। এই বিষয়ে কারও সংশয় থাকলে তিনি নয়া দিল্লি গিয়ে পরখ করে দেখতে পারেন আমাদের মূল্যায়ন সঠিক কিনা।
হোয়াইট হাউসের শীর্ষ কর্তার এই মন্তব্য নিঃসন্দেহে রাহুল গান্ধীর জন্য অত্যন্ত অস্বস্তির অন্য দিকে দেশে বিদেশে মোদীর অবস্থান আরও শক্তিশালী হল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
রবি ও সোমবারও রাহুল প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে। বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদী পিছনের দিকে চেয়ে গাড়ি চালান। উনি ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে নারাজ।’ বলেছেন দেশে গনতন্ত্র বিপন্নতার কথাও। গণতন্ত্র নিয়ে বলতে গিয়েই উল্লেখ করেছেন, ‘দেশে দুটি বিচার ধারা আছে। একটি আরএসএস-বিজেপির বিভাজনের বিচারধারা, আর একটি কংগ্রেসের ভারত জোড়ো।’
রাহুলের এমন আক্রমণাত্মক বক্তব্যের মাঝে হোয়াইট হাউসের বিবৃতি যেন কংগ্রেস নেতার প্রতি অনাস্থা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহল। একই সঙ্গে তা মোদীর প্রতি অতিশয় আস্থার বার্তা বলেও মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সফরের এখনও অনেক দিন বাকি। মোদী সে দেশে পৌঁছনোর অনেক আগেই রাহুলের দেশে ফিরে আসার কথা। তাহলে এখনই মার্কিন প্রশাসন কেন ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে মোদীকে সার্টিফিকেট দিল। অনেকেই মনে করছেন, এটা পরোক্ষ রাহুলকে বার্তা।
নীতীশ স্মরণ করালেন, ‘গাইসালের পর পদত্যাগ করেছিলাম’, কী করবেন বৈষ্ণো
তবে, ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে মার্কিন প্রতিক্রিয়া শুধু রাহুল বা কংগ্রেস নয়, এই ইস্যুতে সরব সব দলের জন্যই অস্বস্তির। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, আমেরিকার মূল্যায়নে এখন আর কিছু যায় আসে না। তারা যে বাণিজ্যিক ও সামরিক স্বার্থে বিভিন্ন দেশ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, তা অজানা নয়। ভারত মহাসাগর এলাকায় চিনের প্রভাব ঠেকাতে তারা ভারতকে পাশে চায়। হোয়াইট হাউসের কর্তা স্বীকার করেছেন, মোদীর আসন্ন সফরে সামরিক বোঝাপড়া আরও মজবুত হবে।
২২ জুন প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় সফরে আমেরিকা যাবেন। গত নয় বছরে প্রধানমন্ত্রী প্রায় এক ডজন ভার আমেরিকা গিয়েছেন। তবে সেগুলি সবই সরকারি সফর। এবার যাচ্ছেন রাষ্ট্রীয় সফরে। রাষ্ট্রীয় সফরের গুরুত্ব কূটনীতিতে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। এই সফরের আমন্ত্রণ স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট পাঠিয়েছেন।
আসন্ন সফরে মোদীকে হোয়াইট হাউস অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট প্যালেসে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিবাদন জানানো হবে। সেখানেই রাষ্ট্রীয় নৈশ ভোজের আয়োজন করা হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে। এছাড়া এই সফরে মার্কিন সংসদের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন মোদী। সেটাও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জন্য অত্যন্ত সম্মানের। খুব রাষ্ট্রপ্রধানকে এই সম্মান দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।