চট্টগ্রাম: বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে নগরের জামালখান ও আশপাশের এলাকায় তোরণ, ব্যানার আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। নেতা ও পদপ্রত্যাশীদের ছবিসহ এসব ব্যানারে কেন্দ্রীয় নেতাদের অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি নিজেদের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে ।
বর্ধিত সভা শুরুর আগে থেকেই অনুষ্ঠানস্থলে মিছিলে মিছিলে নেতা-কর্মীদের স্লোগানে মুখর পুরো জামালখান এলাকা।
বর্ধিত সভাকে সামনে রেখে উজ্জীবিত উত্তর, দক্ষিণ ও নগর যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ ও উত্তর জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা সম্পন্ন করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে তিনটায় নগর যুবলীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তাই এরই মধ্যে নেতা-কর্মীদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে অনুষ্ঠিত স্থল।
বর্ধিত সভায় উপস্থিত নগর যুবলীগের একাধিক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় আনতে যুবলীগকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। সংগঠনকে মজবুত, কলঙ্কমুক্ত, দুর্নীতি-অনিয়মমুক্ত করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতারা আমাদের বার্তা দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনের আগে ওয়ার্ড থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত যুবলীগকে শক্তিশালী করতে এখন থেকেই কাজ শুরু করতে হবে।
জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৩ জুলাই মহিউদ্দিন বাচ্চুকে আহ্বায়ক ও দেলোয়ার হোসেন খোকা, দিদারুল আলম, ফরিদ মাহমুদ ও মাহবুবুল হক সুমনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে তিন মাসের জন্য ১০১ সদস্যের চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। দীর্ঘ সাড়ে ৮ বছর হলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ হয়নি কমিটি। ৮ বছর ধরে যুবলীগের নতুন নেতৃত্ব যেমন গড়ে উঠেনি, তেমনি সাংগঠনিক কার্যক্রমও ঝিমিয়ে পড়েছে। নতুন নেতৃত্ব আশাহত হয়ে পড়েছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও নগর যুবলীগ নেতা মোহাম্মাদ আলমগীর টিপু বাংলানিউজকে বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দল গোছাতে এখন থেকে কাজ শুরু করেছি। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আমাদের সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি।
যুবলীগের বর্ধিত সভায় কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম বলেন, যারা চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ ও দাগি অপরাধী তাদের যুবলীগ থেকে বাদ দিতে হবে। কমিটিতে এমন কোনো লোককে বসানো যাবে না যাতে করে বর্তমান পরিচ্ছন্ন যুবলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। যেসব ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে, সেসব কমিটি দ্রুত করে কেন্দ্রকে জানাতে হবে। কমিটিতে পছন্দের মানুষ নয়, যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। যুবলীগকে জননেত্রী শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করতে হবে। যুবলীগে পরিচ্ছন্ন নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে, যোগ্যরাই দলে আসবে।
তিনি বলেন, টাকা আর লবিং করে যারা যুবলীগের কমিটিতে আসার স্বপ্ন দেখছেন, তারা দিবাস্বপ্ন দেখছেন। তাদের এ স্বপ্ন কখনোই সফল হবে না। যুবলীগ করতে হলে শ্রম, মেধা, নিষ্ঠা ও সততার প্রয়োজন। যাদের এসব গুণাবলি থাকবে, তারাই আগামী দিনে যুবলীগে স্থান পাবেন। দুর্নীতি, অসদাচরণ যুবলীগে বরদাশত করা হবে না। শ্রম, মেধা, নিষ্ঠা কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন করতে যুবলীগকেই গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে।
কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ বাংলানিউজকে বলেন, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে যুবলীগকে সুসংগঠিত করতে হবে। যুবলীগের কমিটিতে ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। বর্ধিত সভা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের এ সফরের উদ্দেশ্য তৃণমূল বা ওয়ার্ড পর্যায়ে যুবলীগের পরিচ্ছন্ন নেতাদের তুলে আনা ও সাংগঠনিক ভিত শক্তিশালী করা।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২১
বিই/টিসি