প্রাণ ফিরে এসেছে সিনেমার গানে। ‘সাদা সাদা কালা কালা’, ‘চলো নিরালায়’, ‘আটটা বাজে দেরি করিস না’ এগুলো কাছাকাছি সময়ে জনপ্রিয় হওয়া সিনেমার গান। সিনেমা হিট করার পেছনে গানের যে বিরাট ভূমিকা রয়েছে, তা একবাক্যে সবাই স্বীকার করেন। ‘সাদা সাদা কালা কালা’ ও ‘চলো নিরালায়’ গান দর্শকদের হলে টেনে নিয়ে গেছে। সেই ধারাবাহিকতায় গেল রোজার ঈদের সিনেমার গানও শ্রোতাদের মাঝে ছড়িয়ে যায়। বিশেষ করে শাকিব খানের ‘লিডারÑ আমিই বাংলাদেশ’ ছবির ‘সুরমা সুরমা’, ‘কথা আছে’, ‘লোকাল’ সিনেমার ‘খেলা হবে’ গানও ছিল আলোচনায়।
এবার ঈদে মুক্তি পেয়েছে বেশ কিছু সিনেমা। সদ্য মুক্তি পাওয়া এসব সিনেমার গানও ঝড় তুলেছে চারদিকে। ছবি মুক্তির আগেই শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার গান ‘কুরবানি কুরবানি’ বাজতে শোনা যায় সারাদেশে। গানটির ইউটিউব ভিউ ৮০ লাখ ছাড়িয়ে। এতে কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন কলকাতার আকাশ সেন।
প্রহেলিকা সিনেমার ‘মেঘের নৌকা’ গানটিও মন ছুঁয়ে গেছে দর্শকের। আসিফ ইকবালের কথায় গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন ইমরান ও কোনাল। গানের দৃশ্যে মাহফুজ আহমেদ ও বুবলীর রসায়নে মন ভরেছে দর্শকের। একই সিনেমার আরেক গান কিশোর ও স্বরলিপির গাওয়া ‘হৃদয় দিয়ে’ও প্রশংসিত হয়েছে। এটির কথাও লিখেছেন আসিফ ইকবাল।
আরফান নিশোর ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার আইটেম গান ‘কলিজা আর জান’ দর্শকহৃদয়ে সাড়া ফেলেছে। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন কনা। গানের কথা লিখেছেন রাসেল মাহমুদ ও আরাফাত মহসিন। সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন আরাফাত মহসিন। আইটেম গানটিতে নুসরাত ফারিয়ার অনবদ্য পারফরম্যান্স মন কেড়েছে দর্শকের। তানজীব সারোয়ারের কথা সুরে, তানজীব ও অবন্তী সিঁথির কণ্ঠে এ সিনেমার আরেক গান ‘গা ছুঁয়ে বলো’ প্রশংসিত হয়েছে শ্রোতা-দর্শকের কাছে। গানটির সংগীত পরিচালনা করেছেন সাজিদ সরকার।
এবারের ঈদের সিনেমার গানের সবচেয়ে বড় চমক ছিল একটি নাম। তিনি হলেন প্রিন্স মাহমুদ। বাংলা সংগীতের প্রিন্স। অসংখ্য কালজয়ী গানের এই স্রষ্টার সুরে হিমেল আশরাফ পরিচালিত শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার ‘ঈশ্বর’ গানটি এসেছে ব্যাপক আলোচনায়। ‘ঈশ্বর কি তোমার আমার মিলন লিখতে পারতো না…’ জনপ্রিয় গীতিকার সোমেশ্বর অলির গানের কথাগুলো এখন সবার মুখে মুখে। প্রাণ ছুঁয়ে গেছে এই গান। এক সপ্তাহ পেরোতেই এই গানের ভিউ ৯০ লাখ ছাড়িয়ে। গীতিকবি প্রিন্স মাহমুদ যেমন উচ্ছ্বসিত, উচ্ছ্বসিত অলি নিজেও। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন রিয়াদ।
শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার টাইটেল ট্র্যাকটিও সুন্দর। গানের কথা লিখেছেন গীতিকবি আসিফ ইকবাল। কণ্ঠ দিয়েছেন বালাম ও কোনাল। দীর্ঘদিন পর বালামের কণ্ঠ শ্রোতাহৃদয়ে দোলা দিয়েছে। বালামের কণ্ঠ সিনেমার গানে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে, এমন সমালোচনা চললেও পরিচালকরা এই কণ্ঠশিল্পীকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে পারেন। গানের দৃশ্যায়ন সুন্দর। কলকাতার নায়িকা ইধিকা পালের সঙ্গে শাকিব খানের রসায়নও ছিল বেশ। এ সিনেমায় জাহিদ আকবরের কথায় সাজিদ সরকারের সুর ও সংগীতায়োজনে ‘গভীরে’ শিরোনামের গানটিও মন ছুঁয়েছে শ্রোতাদের।
ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার এ গানগুলো এখন শ্রোতা-দর্শকের মুখে মুখে। সিনেমায় দর্শক টানতে এসব গান ব্যাপক ভূমিকা রাখছে বলেই মনে করেন অনেকে। ঢাকাসহ সারাদেশের প্রেক্ষাগৃহ এখনও হাউসফুল। আগামীতেও ঢাকার সিনেমা ও সিনেমার গানে প্রাণ ছুঁয়ে যাক শ্রোতা-দর্শকের।