নজরবন্দি ব্যুরোঃ বঙ্গ রাজনীতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জুটি বারবার আলোচনা ও সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু অভিষেক ও মমতার জুটি যে রাজ্য রাজনীতিতে হিট, এবিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই জুটি কলকাতায় অধিকাংশ সময় উপস্থিত থাকলেও জেলায় এবার নজির গরতে চলেছেন তাঁরা। একদিকে তৃণমূলে নবজোয়ার নিয়ে মালদহে উপস্থিত অভিষেক। অন্যদিকে, একাধিক কর্মসূচি নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দুই জনের উপস্থিতির আলোচনার মধ্যেই চোরাস্রোত বইল তৃণমূলে।
আরও পড়ুনঃ জীবনকৃষ্ণর পর অপারেশন কৃষ্ণ, বাড়ি ঘিরছে কেন্দ্রীয় বাহিনী, আজ রাতেই গ্রেফতার!
এদিন তৃণমূল থেকে প্রায় ৪০০ জন নেতা কর্মী যোগ দিলেন সিপিআইএম-এ। একদিকে যখন সাড়ম্বরে তৃণমূলে নবজোয়ার ঘটাচ্ছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায় অন্যদিকে তখন সিপিআইএমের অন্যতম তরুণ নেতা তথা রাজ্যকমিটির সদস্য শতরূপ ঘোষ কার্যত প্রচারের আলোর বাইরে থেকে ঘর ভাঙলেন তৃণমূলের। আজ সকালে মালদার রতুয়া-২ ব্লকের পীরগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতে শতাধিক তৃণমূল কর্মী লাল ঝান্ডা হাতে নেন। পরে বিকেলের দিকে মালদার হরিশচন্দ্রপুরে শতরূপ এবং রাজ্য কমিটির সদস্য তথা মালদা জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রর উপস্থিতিতে প্রায় আড়াইশো তৃণমূল কর্মী যোগ দেন সিপিআইএমে।
কিন্তু কেন এই দলবদল? যোগদান কারীরা প্রশ্ন শেষ করার আগেই উত্তর দিলেন, দুর্নীতি! এক যোগদান কারীর কথায়, ‘তৃণমূল করতাম মমতা বন্দোপাধ্যায়কে দেখে। ভাবতাম উনি(মমতা) কিছু করবেন। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে দেখছি সাধারণ মানুষের জন্যে কিছু করার থেকে বেশি তৃণমূলের নেতারা আখের গোছাচ্ছেন বেশি। যত দিন যাচ্ছে একের পর এক দুর্নীতি সামনে আসছে। যেখানেই তদন্ত হচ্ছে সেখানেই দেখা যাচ্ছে দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। তাই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে তৃণমূল ত্যাগ করে মেহনতি মানুষের দলে নাম লেখালাম।’ এর পরেই সমবেত স্বরে স্লোগান ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’।
মাথাব্যথার কারণ মালদা, মমতা-অভিষেকের সভার আবহে ৪০০ তৃণমূল কর্মী যোগ দিলেন CPIM-এ
এই প্রসঙ্গে শতরূপ ঘোষ বলেন, অভিষেক বন্দোপাধ্যায় যত জোয়ার(তৃণমূলে নব জোয়ার) আনতে ঘুরে বেড়াবে ততই সমর্থন বাড়বে সিপিআইএমের। সাধারণ মানুষ বুঝে গিয়েছেন শ্রমজীবী মানুষের আসল সঙ্গী কারা। বিজেপি আর তৃণমূল আসলে যে একই বৃন্তের দুটি ফুল তাও মনে করিয়ে দেন সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির সদস্য শতরূপ।

সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বাম কংগ্রেস জোটের কাছে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। কার্যত সংখ্যালঘু ভোটের একচ্ছত্র রাশ নিজের হাতে রেখেছিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনেও তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। কিন্তু সেই রাশ যে আলগা হয়েছে তার প্রমান দিয়েছে সাগরদিঘি। উপনির্বাচনে প্রায় ৬৩ শতাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুসিত আসনে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল! সেই ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টাতেই সম্ভবত মালদায় একযোগে উপস্থিত হচ্ছেন মমতা অভিষেক।
Related