ভোটের আগে বিহার (Bihar) রাজ্যে বিপুল বিনিয়োগের ঘোষণা করল মোদী সরকার। ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (Indian Oil Corporation) বিহারের বারাউনি রিফাইনারির সম্প্রসারণে ২১,০০০ কোটি টাকারও বেশি…
ভোটের আগে বিহার (Bihar) রাজ্যে বিপুল বিনিয়োগের ঘোষণা করল মোদী সরকার। ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (Indian Oil Corporation) বিহারের বারাউনি রিফাইনারির সম্প্রসারণে ২১,০০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করবে বলে ঘোষণা করেছে। এই প্রকল্পে রিফাইনারির উৎপাদন ক্ষমতা বছরে ৬ মিলিয়ন টন থেকে ৯ মিলিয়ন টনে উন্নীত হবে।
আইওসির এই বিশাল বিনিয়োগ বিহারের শিল্পোন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হতে চলেছে। বারাউনি রিফাইনারি, যা বর্তমানে বছরে ৬ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করে, সেটি সম্প্রসারিত হয়ে বছরে ৯ মিলিয়ন টন উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন করবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে কেবলমাত্র জ্বালানি উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে না, বরং কর্মসংস্থানের সুযোগও বৃদ্ধি পাবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে বারাউনি রিফাইনারি আরও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে জ্বালানি উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব হয়ে উঠবে। এছাড়া, এই প্রকল্পে আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণ এবং দক্ষতার উন্নতিতেও বিনিয়োগ করা হবে।
আইওসির এই প্রকল্প শুধু উৎপাদন বৃদ্ধি নয়, বরং বিহারে কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগও তৈরি করবে। নির্মাণপর্বে অনেক মানুষের সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া, প্রকল্পটি চালু হওয়ার পরেও রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনার জন্য বহু দক্ষ ও অদক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হবে।
বিহারের জন্য এই বিনিয়োগের ঘোষণা ভোটের আগে মোদী সরকারের একটি কৌশলগত পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে। বিহার দীর্ঘদিন ধরে শিল্পোন্নয়নের অভাবে ভুগছে। এই বিনিয়োগ বিহারের সাধারণ মানুষের মধ্যে উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ভোটের আগে রাজনৈতিক সমর্থন জোগাড় করার একটি চেষ্টা বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিহারে এই ধরনের বৃহৎ বিনিয়োগের মাধ্যমে কেন্দ্র সরকার রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে সচেতনতার বার্তা দিতে চায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন যে এই প্রকল্প বিহারের অর্থনৈতিক কাঠামোকে শক্তিশালী করবে। কেন্দ্র সরকারের দাবি, এই ধরনের প্রকল্প বিহারের যুবসমাজকে কর্মসংস্থানের সুযোগ এনে দেবে এবং রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা কমাবে।
বিহার দীর্ঘদিন ধরে শিল্পোন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। এই বিনিয়োগ রাজ্যের শিল্পোন্নয়নের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। বিশেষ করে, এটি বিহারের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিরোধীরা অবশ্য এই বিনিয়োগের সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তাঁদের অভিযোগ, ভোটের আগে এই ধরনের প্রকল্পের ঘোষণা শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন এবং কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতিগুলো ঠিকমতো পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিরোধী নেতারা।
বিহারে আইওসির এই বিনিয়োগ রাজ্যের উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। ভোটের আগে এই প্রকল্পের ঘোষণা বিহারের সাধারণ মানুষের মধ্যে উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে প্রকল্পটি সময়মতো বাস্তবায়িত হয় এবং প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করা হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।