মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে; বাড়ছে নদ-নদীর পানি। আগামী ৭২ ঘণ্টায় বাংলাদেশের উজানে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এর ফলে আশপাশের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে এবং বিপদসীমা অতিক্রম করে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। সোমবার (১৯ জুন) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এ তথ্য জানিয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরো জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদী বিভিন্ন স্থানে, জলস্তর বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এ অঞ্চলের সব প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে, আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের সকালের (১৯ জুন) বুলেটিনে বলা হয়েছে; আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার অববাহিকা এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের কারণে এই নদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়তে পারে। আর, সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, গোয়াইন, ঝালুখালী, ভূগাই-কংশা, সোমেশ্বরী, ও জাদুকাটাসহ এ অঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।আগামী ২৪ ঘণ্টায়, ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
ভারতের গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, আসাম রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অবিরাম বর্ষণে রাজ্যের নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বাংলাদেশে আসামের বন্যা পরিস্থিতির প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।ছাতক পয়েন্টে সুরমা নদী বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপরে এবং সুনামগঞ্জ জেলার ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণে জেলার সব বড় নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যেই বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিরখোলা এলাকায় প্রধান সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদী সুনামগঞ্জে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর, ভারতের কর্তৃপক্ষ গত ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
জেলা প্রশাসক দিদার আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী জানান, বন্যা মোকাবেলায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।