ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এখন উত্তর-পূর্বের জাতিগোষ্ঠীর হিংসাদীর্ণ মণিপুরে। তিনি মঙ্গলবার ৩০ মে রাজ্যের চূড়াইচাঁদপুর জেলায় গিয়েছেন। সেখানে সব রাজনৈতিক দল ও বিবদমান দুই সম্প্রদায় মৈতেই এবং কুকিদের একাধিক গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।
এই বৈঠক শুরুর আগে সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়, হিংসায় নিহতদের পরিবারকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মিলে মোট ১০ লাখ টাকা করে এককালীন ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হবে। সরকারিভাবে নিহতের সংখ্যা ৮০ বলে জানানো হয়েছে।
সরকারের তরফে মঙ্গলবার আরও ঘোষণা করা হয়েছে, অশান্ত এলাকায় দ্রুত জ্বালানি তেল এবং জরুরি পণ্য সামগ্রী প্রচুর পরিমাণে পৌঁছে দেওয়া হবে। যাতে কম দামে খাদ্যপণ্য এবং অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সেখানকার মানুষেরা পেতে পারেন। আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপশি শান্তি ফেরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে এই সব সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সেনা প্রধান মনোজ পাণ্ডে-ও বর্তমানে মণিপুরে রয়েছেন। তিনি সেনা অভিযান পর্যালোচনা করছেন। আস্থা ফেরাতে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথাও বলছে সেনা অফিসারেরা।
এদিকে শাহের সফরের মধ্যেই মহারাষ্ট্রের পুনেতে এক অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার সেনাধ্যক্ষ অর্থাৎ চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ অনিল চৌহান জানান, মণিপুরের পরিস্থিতি শান্ত হতে সময় লাগবে। সেনা বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাছে।
তবে সেখানকার অশান্তি দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ নয় বলে মন্তব্য করেন সেনাধ্যক্ষ। তাঁর কথায়, এটা দুটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত। সেনা সেখানে রাজ্য প্রশাসনকে সাহায্য করতে গিয়েছে। সেনা খুবই কৃতিত্বের সঙ্গে পরিস্থিতি সামলাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন সেনাধ্যক্ষ।
মণিপুরে বর্তমানে ১৪০ কলম অর্থাৎ ১৪ হাজার সেনা জওয়ান মোতায়েন আছে। এছাড়া অসম রাইফেলসের বেশ কিছু ব্যাটেলিয়ন মোতায়েন আছে রাজ্যে। ২০২০-র পর মণিপুর সহ উত্তর-পূর্বের কোনও রাজ্যে এত বিপুল সংখ্যায় সেনা ও আধা সেনা মোতায়েনের নজির নেই।
সেনাধ্যক্ষর বক্তব্যেও আজ সেই প্রসঙ্গ উঠে আসে। তিনি বলেন, উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতে রাষ্ট্র বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেনাকে সীমান্তে বেশি সংখ্যায় মোতায়েন করা হয়। বিশেষ করে চিন সীমান্তে কড়া প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানান, মণিপুরে সেনা মূলত বিবদমান দুই গোষ্ঠীকে অস্ত্র মুক্ত করার কাজ করছে।