দ্য ওয়াল ব্যুরো: লন্ডন সফরে গিয়ে প্রায় রোজই বোমা ফাটাচ্ছেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। কড়া ভাষায় পাল্টা জবাবও দিচ্ছে বিজেপি। কিন্তু তাতে না দমে প্রতিদিন নতুন নতুন ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদীর সময়ে দেশের পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরতে আক্রমণের নয়া বাণ ছুড়ছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি।
রাহুল এবার তির ছুড়েছেন সংসদের দুই কক্ষের পরিচালকদের বিরুদ্ধে। অনেকের মতে যা বিস্ফোরণ। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় এবং লোকসভার স্পকার ওম বিড়লার নাম না করেই ওয়ানাডের কংগ্রেস সাংসদ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের (British Parliament) ভাষণে বলেছন, আমাদের সংসদে বিরোধীদের বলতে দেওয়া হয় না। মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ঘটনাচক্রে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে রাহুলের জন্য নির্ধারিত মাইক্রোফোনটি খারাপ ছিল। রাহুল সেটির সামনে দাঁড়িয়েই ভাষণ দেন। কংগ্রেস নেতা বলেন, এখানে তো যান্ত্রিক কারণে মাইক্রোফোনটি অচল। আমাদের সংসদে সচল মাইক অচল করে রাখা হয়। কথা বলার সুযোগ নেই। বিরোধীরা বলতে উঠলেই মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে রাহুল অতীতে সাতবার নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন। কিন্তু সরাসরি সংসদকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাননি। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা কমনওয়েলথ ভুক্ত দেশগুলির প্রিসাইডিং অফিসার সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। স্বভাবতই রাহুল স্পিকারের ভূমিকাকে কাঠগড়ায় তোলায় বিড়লার অস্বস্তি বাড়বে। সাম্প্রতিক অতীতে কোনও বিরোধী নেতা বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে এমন কড়া ভাষায় দেশের সংসদকে কাঠগড়ায় তোলেননি।
রাহুলের অসন্তোষের চড়া সূরে আক্রমণের কারণ অবশ্য অজানা নয়। চলতি লোকসভার অধিবেশনে আদানি ইস্যুতে রাহুলের তোলা পাঁচটি প্রশ্ন সংসদের কার্যবিবরণী থেকেই বাদ দিয়ে দিয়েছেন স্পিকার ওম বিড়লা। অন্যদিকে, রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গের ভাষণ থেকে রাজনৈতিক ইঙ্গিতপূর্ণ শায়েরির অংশও বাদ দিয়েছেন চেয়ারম্যান ধনকড়।
রাহুল লন্ডনে এ পর্যন্ত তিনটি সভায় ভাষণ দিয়েছেন। প্রত্যেক ভাষণে তিনি একটি করে বিষয় তুলে ধরছেন। প্রথম ভাষণে নিশানা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। বলেন, ভারতে গণতন্ত্র বিপন্ন। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রতিষ্ঠানকেই সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে। বিরোধীদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইডি, সিবিআই বিরোধীদের পিছু নিয়েছে।
আর একটি সভায় কংগ্রেস নেতা আরএসএসের বিরুদ্ধে মুখ খুলে এই সংগঠনের কাজকর্মকে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে তুলনা টেনে বলেন, ওরা সব সংগঠনকে দখল নিয়েছে। হিন্দুত্ববাদীদের আগ্রাসন চলছে দেশে।
রাহুলের সমালোচনা নিয়ে বিজেপি-সহ সঙ্ঘ পরিবারের অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধে দেশের অবমাননার অভিযোগ তুলেছে। তাদের অভিযোগ, কংগ্রেস নেতা বিদেশের মাটিতে ভারতের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করছেন। এখন দেখার সংসদের নিন্দা করায় দেশে ফেরার পর তাঁকে লোকসভার স্পিকারের সাজার মুখে পড়তে হয় কিনা।
অনুব্রতকে কচুরি খাওয়ানো হল শক্তিগড়ে, ফের কনভয় রওনা দিল কলকাতার দিকে