Skip to content

ভারতের বারাণসীতে জ্ঞানবাপী মসজিদের জরিপে সম্মতি এলাহাবাদ হাইকোর্টের, চিন্তিত রাজনৈতিক মহল

ভারতের বারাণসীতে জ্ঞানবাপী মসজিদের জরিপে সম্মতি এলাহাবাদ হাইকোর্টের, চিন্তিত রাজনৈতিক মহল

ভারতে জ্ঞানবাপী মসজিদ সম্পর্কিত মামলায় নতুন মোড়। বৃহস্পতিবার ৩ অগাস্ট ভারতের উত্তর প্রদেশে এলাহাবাদ হাইকোর্ট বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের জরিপে সম্মতি দিয়েছে। এই ব্যাপারে বারাণসীর জেলা আদালতের রায় বহাল রেখেছে উচ্চতর আদালত।

রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের মতে, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্ট এই আদেশের উপর নিষেধাজ্ঞা বা নিদেনপক্ষে স্থগিতাদেশ জারি না করলে মামলা সূত্রে সংশ্লিষ্ট পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। ফিরতে পারে মন্দির-মসজিদ রাজনীতি।

প্রায়ই একই মামলা রুজু হয়েছে উত্তর প্রদেশের আর একটি প্রাচীন মসজিদ নিয়ে। মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদ নিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশেই সেখানকার জেলা আদালতে মামলার শুনানি চলছে। মথুরার জেলা আদালতও জ্ঞানবাপীর মতো শাহি ইদগাহ মসজিদ নিয়ে সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল যা ওই আদালতেরই ভিন্ন বিচারপতির এজলাসে নতুন করে শুনানির জন্য পাঠিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার বারাণসীর জ্ঞানবাপীতে জরিপের সিদ্ধান্তে হাইকোর্ট সম্মতি দেওয়ায় মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদ নিয়েও পর্যবেক্ষক মহলে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে।

সেখানে শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান এবং শাহি ইদগাহ মসজিদ নিয়ে বিবাদ পুরনো। হিন্দুদের একটি সংগঠনের দাবি মন্দিরের জমিতে গড়ে উঠেছে মসজিদ। সেটি সরিয়ে নিতে হবে। সেই মামলাতেও মসজিদ রক্ষার জন্য লড়াই করছে মুসলিমপক্ষ।

হিন্দু সেনা নামে একটি সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মথুরার সিনিয়র ডিভিশন আদালত গত বছর ডিসেম্বরে জরিপের নির্দেশ দেয়। ২ জানুয়ারি জরিপ শুরুর আগেই এলাহাবাদ হাইকোর্ট মুসলিমপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে জেলা আদালতের অন্য বিচারককে নির্দেশটি খতিয়ে দেখার আদেশ দেয়। সেই শুনানি এখনও শেষ হয়নি। সেই মামলায় একাধিকবার জ্ঞানবাপীর প্রসঙ্গ এসেছে।

এই মামলায় হিন্দুপক্ষ দাবি করে যে শাহি ইদগাহ মসজিদে হিন্দু মন্দিরের প্রতীক রয়েছে যা প্রমাণ করে মসজিদের নীচে দেবতার গর্ভগৃহ এবং মন্দিরের আরও নির্দশন রয়েছে। হিন্দুপক্ষের দুই আইনজীবী মনীশ যাদব এবং মহেন্দ্র প্রতাপ আদালতে বলেন, শাহি ইদগাহতে হিন্দু স্থাপত্যের প্রমাণ রয়েছে। বৈজ্ঞানিক জরিপে এগুলি সত্য প্রমাণিত হবে।

দু বছর আগে মথুরার জেলা আদালতে এই মর্মে আবেদন করা হয়েছিল। কাছাকাছি সময় বারাণসীর জ্ঞানবাপী মজজিদ চত্বরে শৃঙ্গার গৌরী মূর্তিকে সারা বছর পূজার্চনার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন পাঁচ মহিলা। সেই মামলায় বারাণসীর আদালতের নির্দেশে জরিপ হওয়ার সময় সেখানে থাকা জলাশয় থেকে একটি কালো পাথরের খণ্ড উদ্ধার হয়। হিন্দুপক্ষের দাবি সেটি শিবলিঙ্গ।

শাহি ইদগাহ মসজিদ মথুরা শহরের শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির কমপ্লেক্সের লাগায়ো। হিন্দুদের একাংশের দাবি, মসজিদের জমিটিই শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান বা গর্ভগৃহ। ঔরঙ্গজেব ১৬৬০-৭০ সাল নাগাদ শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থানে নির্মিত প্রাচীন কেশবনাথ মন্দিরটি ধ্বংস করে শাহি ইদগাহ মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন বলে হিন্দুপক্ষের দাবি।

মথুরার জেলা আদালত মামলায় নির্দেশ জারির পর এলাহাবাদ হাইকোর্ট তা খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত রায় দেবে। জ্ঞানবাপীর মসজিদে জরিপ জারি রাখার রায়ের পর মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদের ভবিষ্যৎ রাজনীতির আলোচনায় উঠে এসেছে।

সূত্র: ভয়েজ অব আমেরিকা