ভারতের অসমে রাজ্য সরকার মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটতে চলেছে। মঙ্গলবার ৯ মে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন এমনটাই। এই পদক্ষেপ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার দিকে আরও এক ধাপ এগোনো বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করার আইনি বিধি নিষেধ খতিয়ে দেখার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করা হবে বলে জানিয়েছে অসম সরকার। সেই কমিটির কাজ হবে এটা দেখা, যে, রাজ্যে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করার আইনি অধিকার সরকারের আছে কিনা। সোমবার ৯ মে একটি ট্যুইট বার্তায় অসমের মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “অসম সরকার রাজ্যে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করার জন্য রাজ্য আইনসভার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই কমিটি মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরীয়ত) আইন, ১৯৩৭-এর বিধানগুলি সংবিধানের ২৫ ধারার সঙ্গে মিলছে কিনা তা পরীক্ষা করবে।”
প্রসঙ্গত, ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বহুবিবাহ এবং নিকাহ হালালার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলার শুনানির জন্য শীর্ষ আদালত ৫ জন বিচারপতির একটি নতুন বেঞ্চ গঠন করবে বলে জানায়। আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়ের এই বিষয়ে দাখিল করা একটি পিআইএল-এর প্রেক্ষিতে এ কথা জানায় বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিমহার একটি বেঞ্চ।
বিচারপতিরা জানান, আগে ৫ বিচারপতির যে বেঞ্চ গঠন করা হয়েছিল, সেখানকার দুজন বিচারপতি ইতিমধ্যেই অবসর নিয়েছেন। এছাড়াও সেই বেঞ্চে এখনও পর্যন্ত অজস্র গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি বাকি রয়েছে। ফলে মুসলিমদের বহুবিবাহ এবং নিকাহ হালার বৈধতা বিষয়ক মামলার শুনানির জন্য নতুন করে একটি পাঁচ সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করা হবে বলে জানান তাঁরা।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধির স্বপক্ষে সওয়াল করে আসছে বিজেপি। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, অর্থাৎ বিভিন্ন ধর্মীয় আইন নিষিদ্ধ করে দেশজুড়ে সমস্ত ধর্মাবলম্বী মানুষদের জন্য একই আইন প্রযোজ্য হবে। হিমন্ত বিশ্বশর্মার এই সিদ্ধান্ত সেই বিধি কার্যকর করার দিকেই আরও একধাপ এগোনো বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।