Saturday, March 15, 2025

সপ্তাহে শীর্ষে

প্রাসঙ্গিক বার্তা

ভারতঃ হিন্দুদের উৎসব মহাকুম্ভে যোগ দিয়েছেন ৫০ কোটির বেশি পূর্ণ্যার্থী

ভারতের উত্তরাঞ্চলে প্রয়াগরাজ শহরে জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে যে বিশাল হিন্দু ধর্মীয় উৎসব পালিত হচ্ছে তা বিশ্বের জনবহুলতম দেশের নিরিখেও যেন বিস্ময়কর। কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, মহাকুম্ভ মেলায় আসা পূণ্যার্থীর সংখ্যা গতবারের পরিসংখ্যানকে ছাপিয়ে গেছে; গত ছয় সপ্তাহে ৫০ কোটির বেশি ধর্মপ্রাণ ভক্ত ছুটে যান কুম্ভের টানে।

উত্তরপ্রদেশে এই উৎসব পালিত হচ্ছে। এ রাজ্যের সরকারের দাবি, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের নিরিখে এ বছরের সমাবেশ মানুষের ইতিহাসে বৃহত্তম মিলনমেলা।

হিন্দুরা বিশ্বাস করেন, ত্রিবেণী সঙ্গমের পানিতে পবিত্র ডুব দিলে সকল পাপ সাফ হয়ে যায় এবং মুক্তিলাভে সাহায্য হয়। মহাকুম্ভ মেলায় সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানষ হাজির হয়েছেন; এদের মধ্যে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বহু ধনকুবের, রাজনীতিক ও বলিউড তারকা।

প্রতি ১২ বছরে মহাকুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। অনেক পূণ্যার্থীর কাছে মহাকুম্ভের টান ছিল অনেক বেশি কারণ এ বছরের অনুষ্ঠানকে বিশেষ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে; গ্রহ ও নক্ষত্রেরা এমন এক রেখায় এসেছে যা ১৪৪ বছরে একবার ঘটে।

২৯ জানুয়ারিতে পদপিষ্টের ঘটনা এই উৎসবের মহিমাকে বিঘ্নিত করেছে। এই ঘটনায় ৩০ জন তীর্থযাত্রী নিহত হন; নির্দিষ্টভাবে শুভ হিসেবে বিবেচিত ওই দিন স্নানে অংশগ্রহণ করতে হুড়োহুড়ির মধ্যে তারা পদপিষ্ট হয়েছেন।

তবে, এই মর্মান্তিক ঘটনা উৎসবের উষ্ণতা, উত্তেজনা ও উৎসাহকে খর্ব করতে পারেনি; নদীর তীর বরাবর ৪ হাজার হেক্টর বা ৪০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিশাল অস্থায়ী তাঁবুর এই শহরে লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢল অব্যাহত থেকেছে। এই তাঁবুর শহরে রয়েছে রাস্তা, হাসপাতাল, শৌচাগার ও স্বেচ্ছাসেবীদের চালানো বিনা পয়সার খাবার জায়গা।

তবে মুম্বাইয়ের বাসিন্দা নিখিল শিরোদকরের মতো অনেকের কাছে এই উৎসবে যোগ দেওয়ার অর্থ শুধুমাত্র নদীতে ডুব দেওয়া নয়, বরং সারা জীবনের মতো অন্তত একবার এই অভিজ্ঞতা লাভ করা; বহু প্রাচীন হিন্দু ঐতিহ্যের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপনের একটা সুযোগ করে দেয় এটি।

তিনি বলেন, “আমি এই বিশ্বাসে যাইনি যে ডুব দিলে পাপ সাফ হয়ে যাবে, বরং অনেক বেশি আধ্যাত্মিকতার সন্ধানেই আমার যাওয়া।”

হিন্দু সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয় পুনরুদ্ধার করা বিজেপির কর্মসূচির অংশ। ভারতের পূর্বতন মুঘল শাসকদের আমলে এই শহর এলাহাবাদ নামে পরিচিত ছিল। ২০১৮ সালে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার এই শহরের নাম বদলে রাখে প্রয়াগরাজ; হিন্দু তীর্থস্থান হিসেবে এর পরিচয়কে পুনরুদ্ধার করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

–ভয়েজ অব আমেরিকা

পাঠক প্রিয়