পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৩ সেপ্টেম্বর: বিজেপির কাঁধে ভর দিয়েই পঞ্চায়েত চালাচ্ছে তৃণমূল। কি শুনতে অবাক লাগছে তো। রাজ্যে নজিরবিহীন এই ঘটনা খোদ দক্ষিণ দিনাজপুরেই। যাকে ঘিরে রীতিমতো তোলপাড় এখন রাজ্য রাজনীতি। এককভাবে পঞ্চায়েত দখলের পরেও কেন বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলকে বোর্ড গঠন করতে হল তা নিয়ে স্তম্ভিত খোদ তৃণমূল নেতৃত্বরাও। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর ব্লকের সৈয়দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল ও বিজেপির এমন মেলবন্ধন রীতিমতো সাড়া ফেলেছে রাজ্য রাজনীতিতে। যা নিয়ে কিছুটা অবাক হয়েছেন স্থানীয় নেতৃত্বরাও। তবে এই ঘটনাকে অনেকেই রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা বলেও ব্যাখ্যা করেছেন।
জানা যায়, ২৪ আসন বিশিষ্ট হরিরামপুরের সৈয়দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতটিতে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১২টি আসন লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস। বাকি ১২টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পায় ৩ টি, সিপিএম পায় ৪টি, বিজেপি ও নির্দলের দখলে যায় ২ করে আসন এবং একটি আসন লাভ করে আরএসপি। ১২টি আসন পেয়ে ওই পঞ্চায়েতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও বোর্ড গঠন করতে বাধা পায় শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। জেলা প্রশাসন সুত্রের খবর অনুযায়ী, সৈয়দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের আসনটি এবারে সংরক্ষণ করা হয়েছিল তপশিলী উপজাতিদের জন্য। যেখানে তৃণমূলের জয়ী হওয়া ১২ জন সদস্যদের মধ্যে কেউই তপশিলি উপজাতির না হওয়ায় কিছুটা বেকায়দায় পড়ে শাসক দলের নেতৃত্বরা। এদিকে বিজেপির জয়ী হওয়া দুই সদস্যর মধ্যে একজন তপশিলী উপজাতি হওয়ায় তাকেই টার্গেট করেন তৃণমূল নেতৃত্বরা। চলে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বদের সাথে সমঝোতার প্রক্রিয়াও। আর এর পরেই বিজেপির জয়ী সদস্য সাংখ্যায় হাঁসদাকে উপপ্রধান করে ওই পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল। যাকে ঘিরে জেলায় জোর চর্চার মুখে পড়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বরা। রাজ্যজুড়ে তৃণমূল ও বিজেপির সংঘাত যখন প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে, ঠিক তখন দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরে তৃণমূল ও বিজেপির এই সহাবস্থানের ঘটনা রীতিমতো আলোড়ন ফেলেছে। যদিও এই ঘটনা নিয়ে দলের কর্মীদের জোর চর্চার মুখে পড়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। একইভাবে চর্চার মুখে পড়েছে বিজেপি দলও। রাজ্যজুড়ে চলা শাসক ও বিরোধী শিবিরের সমস্ত নিয়ম-নীতিকে কেন উপেক্ষা করতে হল হরিরামপুরের ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে তা নিয়েই প্রশ্ন উস্কে দিয়েছেন তৃণমূল ও বিজেপি নেতৃত্বদের একাংশ।
যদিও বিষয়টি নিয়ে সৈয়দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনোয়ারা বেগম বলেন, তাদের তৃণমূলের সদস্যদের মধ্যে এসটি না থাকবার কারণে বিজেপিকে নিয়ে বোর্ড গঠন করেছেন। আগামী পাঁচ বছর বিজেপি ও তৃণমূলের সম্মিলিত বোর্ড ভালোভাবেই পঞ্চায়েত চালাতে সক্ষম হবে।
উপপ্রধান সাংখ্যায় হাঁসদা বলেন, তারা দু’জন সদস্য তৃণমূলের সাথে যোগ দিয়ে বোর্ড গঠন করেছেন। তৃণমূলের সাথে তাদের সম্মিলিত বোর্ড আগামীতে ভালোভাবেই পঞ্চায়েত চালাতে সক্ষম হবে।