Skip to content

বিএনপির ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুলসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ—দাবি দলটির যুগ্ম মহাসচিব রিজভীর

বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ঢাকা উত্তর শাখার সদস্য সচিব আমিনুল হকসহ চারজনকে ডিবি পুলিশ বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) ভোরে রাজধানী ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ভোর পৌনে ৪টায় হোটেল আমারির পাশের একটি বাড়িতে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ডিবি পুলিশ যুবদলের ঢাকা উত্তর শাখার সদস্য সচিব মিরাজ, আরেক যুবদল নেতা পল্লব ও আমিনুলের গাড়িচালককে ওই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, শান্তিপূর্ণ অবরোধ চলাকালে যাত্রাবাড়ী থেকে শিল্পী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সঞ্জয় দে রিপন এবং ঢাকা নগর শাখার বিএনপি নেতা শিপনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তারের ফলে দেশে একটি চরম অস্থিরতা ও ভীতির পরিবেশ বিরাজ করছে”।

আমিনুলসহ অন্যদের আটকের প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানান এবং বিএনপির গ্রেপ্তার সব নেতা-কর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন রুহুল কবির রিজভী।

ঢাকায় একটি হোটেল থেকে বিএনপির ১০ নেতা-কর্মী আটক

নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলায় মঙ্গলবারের (৩১ অক্টোবর) সংঘর্ষে ৩ পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ঢাকার গুলশান এলাকার একটি হোটেল থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ১০ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) র‍্যাব সদর দপ্তরের (মিডিয়া উইং) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ইমরান খান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাবের একটি দল গুলশানের একটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে বিএনপি নেতাদের আটক করে।

দেশব্যাপী ৩ দিনের অবরোধের প্রথম দিন মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় বিএনপি, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ৩ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবরোধের সমর্থনে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ওই এলাকায় মিছিল বের করেন। পরে তারা গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। তারা ওই এলাকা দিয়ে যাওয়া বিআরটিসির একটি বাসসহ দুটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের একদল নেতা-কর্মী অবরোধের বিরুদ্ধে মিছিল বের করলে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।

পুলিশ এসে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করলে এলাকাটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে আহত হন ২০ জন পুলিশ।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ জানান, হামলাকারীদের ছুরিকাঘাতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র‌্যাব

উল্লেখ্য, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর র‍্যাবের সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র‍্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র‍্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র‍্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।

সূত্র: ভয়েজ অব আমেরিকা