Skip to content

বিএনপিকে বাইরের শক্তি ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, বরং সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিএনপিকে বাইরের শক্তি ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, বরং সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো বহিরাগত শক্তিই বিএনপিকে (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। বরং তারা দলকে (বিএনপি) তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে।

বুধবার (৭ জুন) ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগই গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষা করেছে এবং দেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করেছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, “আজ আন্দোলন-সংগ্রাম হবে এবং আমরা ক্ষমতাচ্যুত হব”। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এক দৃষ্টিকোণ থেকে এটা ভালো যে তারা (বিএনপি) যদি অগ্নিসংযোগ সহিংসতা অবলম্বন করে এবং জনগণকে হত্যা করে তবে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবে না”।

তিনি বলেন, যে শক্তির তালে বিএনপি নাচে তারা ধ্বংস করবে। “আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের ভাবার কিছু নেই”।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ইতিমধ্যে (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে) বলেছেন বিএনপিকে আন্দোলন করতে দিতে। “তারা যে আন্দোলন করতে চায় তাই করুক।আমরা কিছু বলব না”।

তিনি অবশ্য কর্তৃপক্ষকে তাদের চোখ খোলা এবং ক্যামেরা সর্বদা চালু রাখতে বলেছেন যাতে বিএনপি ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের মতো অগ্নিসংযোগ সহিংসতা, মানুষ পুড়িয়ে মারা এবং মানুষ হত্যার পুনরাবৃত্তি করতে না পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, তারা (বিএনপি) উস্কানি দিয়ে ছবিগুলো দেশের বাইরে পাঠাতে পারে। তারা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে না। “আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে এই দেশ আমাদের। আমরা কাউকে এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। যতই স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ আসুক না কেন, বাঙালিরা এর কাছে মাথা নত করে না”।

তাঁর দল জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরাই এ দেশে গণতন্ত্র এনেছি, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। যেহেতু গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রয়েছে, বাংলাদেশ আজ অগ্রগতি এবং আর্থ-সামাজিক উন্নতির সাক্ষী হয়েছে”।

আলোচনায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান ও সিমিন হোসেন রিমি প্রমুখ।

১৯৬৬ সালের এই দিনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) বাঙালিরা স্বায়ত্তশাসনসহ সুনির্দিষ্ট দাবিতে আওয়ামী লীগের ডাকা দিনব্যাপী হরতালে যোগ দেয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর কয়েক মাস আগে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের স্বৈরাচারী শাসন এবং বাঙালিদের ওপর তাদের নিপীড়নের অবসানের জন্য ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেছিলেন।

আওয়ামী লীগের আহ্বানে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ৭ জুন স্বতস্ফূর্তভাবে ৬ দফা আন্দোলনে যোগ দেন এবং প্রদেশজুড়ে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল পালন করেন।

এদিন হরতাল চলাকালে ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ ও আধাসামরিক ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর) গুলি চালালে শ্রমিক নেতা মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১০ জন নিহত হন।

পাকিস্তানি নৃশংসতা প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে তীব্রতর করে ১৯৬৯ সালে ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে পরিণত করে, যা পরবর্তীকালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের রাজত্বের পতন ঘটায়।

সূত্র: ভয়েজ অব আমেরিকা