Skip to content

বাংলাদেশ বিমান অর্ডার পুনর্বহাল করতে বিল পাস

বাংলাদেশ বিমান অর্ডার পুনর্বহাল করতে বিল পাস

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে প্রণীত আইন বাতিল করে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর আমলের ‘বাংলাদেশ বিমান অর্ডার’ পুনর্বহাল করতে জাতীয় সংসদে বিল পাস করা হয়েছে। 

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) ‘বাংলাদেশ বিমান অর্ডার ১৯৭২ পুনর্বহাল ও সংশোধন’ বিল পাস হয়। এটি ভূতাপেক্ষভাবে ২০০৭ সালের ১১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনের প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণসম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোনো প্রকার মৌলিক পরিবর্তন না করেই সামরিক সরকার ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ বিমান করপোরেশন অর্ডিন্যন্স দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে প্রণীত বাংলাদেশ বিমান অর্ডার রহিত করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে প্রণীত সকল আইন তার রাজনৈতক দর্শন ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে সম্পৃক্ত, বিধায় উক্ত আদেশটি পুনর্বহালসহ সংশোধন করে এই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আইনটি অনুমোদিত হলে সরকারি কোম্পানি হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের পরিচালনাসহ পরিচালনা পর্ষদ অবলুপ্তকরণ, নতুন পরিচালক নিয়োগ করা, ব্যবস্থাপনা এজেপি চুক্তি অবসায়ন এবং সংঘস্মারক বা সংঘবিধি অথবা কোনো সনদ, চুক্তি বা দলিল পরিবর্তন বা সংশোধনের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি ও আদর্শের প্রতিফলন নিশ্চিত করা হবে।

বিলটি পাসের সময় আলোচনাকালে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারি অভিযোগ করেন, বিমানে টিকেট পাওয়া যায় না। কিন্তু, বিমান খালি যায়। বিমানবন্দরে মিষ্টি খেতে টাকা চাওয়ার অভিযোগ আসছে। একজন মহিলা ফেসবুকে লিখেছেন, প্রধান গেট থেকে শুরু করে বিমানে ঢোকা পর্যন্ত…। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, মিষ্টি খাবো, মামা মিষ্টি খাওয়ার টাকা দেন। মিষ্টি খাওয়ার টাকা দিতে দিতে ছোট বাচ্চাকে নিয়ে বিমানে উঠেছেন। এরকম নজির ঘটেছে। এটা তো হতে পারে না। একটা বিমানবন্দর জাতির ভাবমূর্তি তৈরি করবে। বাংলাদেশ বিমান দেশের ইমেজ। সারা পৃথিবীতে ৮০ লাখ বাংলাদেশি আছে। তারা বিমানকে প্রথম পছন্দ হিসেবে দেখতে চায়। টিকেটের দাম অনেক বেশি। টিকিট পাওয়া যায় না, সিট পাওয়া যায় না। কিন্তু, বিমান খালি যায়, ফেরত আসে। অনেক ক্ষেত্রে লস খায়। 

বিমানের অনিয়ম, অভিযোগ নিয়ে বলে শেষ করা যাবে না, উল্লেখ করে গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, মন্ত্রী সজ্জন ব্যক্তি। আমি মনে করেছিলাম, তিনি বিমানের ভালো ইমেজ নিয়ে আসবেন। কোনো সরকারের সময়ই বিমানকে ভালো অবস্থানে দেখিনি।

তিনি বলেন, প্রবাসে আমাদের অনেক ছেলে-মেয়ে আছে। তারা দেশে আসতে চায় না। অনিয়ম-বৈষম্যের কারণে দেশে আসতে চায় না। এর মধ্যে রিটার্ন টিকিটসহ ঢাকা-ম্যানচেস্টার বিমানভাড়া সর্বনিম্ন ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৫২ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২ লাখ ১৪ হাজার ৯৯ টাকা। অন্যদিকে, এক পথের ভাড়া ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সিলেট-লন্ডনের ভাড়া সর্বনিম্ন ১ লাখ ৩৭ হাজার ২১০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২ লাখ ৮২ হাজার টাকা। প্রকৃতপক্ষে, তাদের বাংলাদেশকে আসতে অনুৎসাহী করা হয়।

বিমানবন্দরে হয়রানির কারণে প্রবাসীরা, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশমুখী হয় না বলে দাবি করেন মোকাব্বির খান। যুক্তরাজ্য প্রবাসী অনেকেই বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের নাড়ির সম্পর্ক রয়েছে। আমরা কি সেই সম্পর্ক কাট করে দিতে চাই?

বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, একসময় ছিল, বিমানের টিকিট পাওয়া যেত না। এখন সে অবস্থা নেই। এখন অনলাইনে টিকিট বিক্রি করা হয়। বিমান এখন লাভে চলছে।



বার্তা সূত্র