Skip to content

বাংলাদেশে ২৪ ঘন্টায় করোনা সংক্রমিত ৩ জন

বাংলাদেশে ২৪ ঘন্টায় করোনা সংক্রমিত ৩ জন

মহামারীতে মৃতের সংখ্যা নিয়ে ডব্লিউএইচওতথ্য

বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২০ ও২০২১ সালে করোনাভাইরাস মহামারীতে বাংলাদেশে২৯ হাজারের কম মানুষ মারা গেছে। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার অনুমান- দেশে করোনায় প্রকৃত মৃতের সংখ্যাএক লাখ ৪১ হাজার; যা সরকারি গণনার চেয়ে প্রায়৫গুণ বেশি।

গত বছরের (২০২২) ৫ মে প্রকাশিত ডব্লিউএইচও’রএক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে।

ডব্লিউএইচও’র অনুমান অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ২০২০সালের ১ জানুয়ারি এবং ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরএর মধ্যে করোনা মহামারীর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বাপরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি৪৯ লাখ( পরিসীমা ১ কোটি ৩৩ লাখ থেকে ১কোটি ৬৬ লাখ)। যা বর্তমান সরকারিপরিসংখ্যানের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। গতবছরের শেষ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মাত্র ৫৪ লাখ মৃত্যুরকথা জানা যায়।

এই সংখ্যার মধ্যে সরাসরি করোনভাইরাসজনিতকারণে বা স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মহামারির প্রভাবের জন্যদায়ী কারণগুলোর প্রভাবজনিত মৃত্যুও অন্তর্ভুক্তরয়েছে। যেমন- হাসপাতালগুলো করোনা রোগীতেপূর্ণ থাকায় চিকিত্সা নিতে না পারায় অনেকক্যান্সারের রোগী চিকিৎসা নিতে পারেনি।

তবে, লকডাউন এবং বাড়ি থেকে কাজ করার ফলেমোটর-যান দুর্ঘটনা বা পেশাগত আঘাতের মতোনির্দিষ্ট কিছু দুর্ঘটনার ঝুঁকি কম থাকার কারণে, মহামারী চলাকালীন মৃত্যুর আনুমানিক সংখ্যাপ্রভাবিত হতে পারে।

ডব্লিউএইচও’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ মৃত্যু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ এবংআমেরিকায় ঘটেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে করোনায় ৪৭ লাখ মৃত্যুহয়েছে। যা দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানের ১০ গুণএবং বিশ্বব্যাপী করোনায় মৃত্যুর প্রায় একতৃতীয়াংশ।

নিউ ইয়র্ক টাইমস, এপ্রিলের মাঝামাঝি প্রতিবেদনপ্রকাশ করেছিল যে, ভারত সরকারের আপত্তিরকারণে ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদন প্রকাশে বিলম্বহচ্ছে। তা না হলে এটি এপ্রিলের শুরুতে প্রকাশপাওয়ার কথা ছিল।

ভারত সরকার বলেছে, ডব্লিউএইচও’র নেয়াপদ্ধতিটি সম্পর্কে তাদের ‘উদ্বেগ’ রয়েছে। তবে, অন্যান্য গবেষণায় বিশ্বে করোনায় মৃত্যুর অনুমানডব্লিউএইচও’র থেকেও বেশি।

এই বিষয়ে গবেষণার মধ্যে, ল্যানসেটে প্রকাশিতগবেষণা সম্ভবত সবচেয়ে প্রভাবশালী। এতে বলাহয়, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের৩১ ডিসেম্বর এর মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১ কোটি ৮২ লাখঅতিরিক্ত মৃত্যু হয়েছে।

প্রভাবশালী ইনস্টিটিউট অফ হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ডইভালুয়েশন (আইএমএইচই) এর একটি দলেরপরিচালিত সমীক্ষা বলছে, করোনায় বাংলাদেশেমৃত্যুর সংখ্যা চার লাখ ১৩ হাজার, যা সরকারিপরিসংখ্যান থেকে ১৫ গুণ বেশি। সে সময়, একজনবাংলাদেশের একজন সরকারি কর্মকর্তা এটিকে‘অনুমানমূলক’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।

ডব্লিউএইচও-এর অনুমানে ২০২০ সালের জানুয়ারিথেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৪ মাসের মধ্যেবয়স ও লিঙ্গের ভিত্তিতে অতিরিক্ত মৃত্যুহারঅন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তারা নিশ্চিত করে যে, বিশ্বব্যাপী, নারীদের তুলনায় পুরুষদের মৃত্যের সংখ্যা বেশিছিল (পুরুষ ৫৭ শতাংশ ও নারী ৪৩ শতাংশ ) এবংপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এ হার বেশি ছিল।

ডব্লুএইচও’র ডেটা, অ্যানালিটিক্স এবং ডেলিভারিরসহকারী মহাপরিচালক ডা. সামিরা আসমাবলেছেন, “অতিরিক্ত মৃত্যুর পরিমাপ মহামারিরপ্রভাব বোঝার জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান।মৃত্যুর প্রবণতার পরিবর্তন, সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদেরমৃত্যুহার কমাতে এবং কার্যকরভাবে ভবিষ্যতেরসংকট রোধে নীতি নির্দেশক তথ্য প্রদান করে।অনেক দেশে ডেটা সিস্টেমে সীমিত বিনিয়োগেরকারণে, অতিরিক্ত মৃত্যুর প্রকৃত মাত্রা প্রায়ই লুকিয়েথাকে।”

ডব্লিউএইচও’র করা পরিসংখ্যানের পদ্ধতিগুলোসংস্থাটির ‘টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ ফরকোভিড-১৯’- এর মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এটিরসহ-সভাপতি অধ্যাপক ডেবি ব্র্যাডশ ও ডক্টর কেভিনম্যাককরম্যাক।

ডব্লিউএইচও বলেছে, বাংলাদেশে, বিশেষ করে ২০২০সালের জুন-জুলাই-আগস্ট সময়ের মধ্যে, অতিরিক্তমৃত্যুর হার প্রথমবার বৃদ্ধি পেয়েছে। ডব্লিউএইচওঅনুমান করেছে, সাধারণ পরিস্থিতিতে প্রত্যাশিতমৃত্যুর চেয়ে, অতিরিক্ত ৩০ হাজারের বেশি মানুষমারা গেছে।

মহামারীর প্রথম বছর শেষে বাংলাদেশে ৪৬ হাজার৪১ জন মানুষের অতিরিক্ত মৃত্যু হয়েছিল। দ্বিতীয়বছর, এপ্রিল ১৪ হাজার ২৭৬ জনের, জুনে ১৩হাজার ১৩ জনের, জুলাইয়ে ২০ হাজার ৩০ জনেরএবং আগস্টে ১৮ হাজার ৯১৫ জনের অতিরিক্তমৃত্যু হয়।

ডব্লিউএইচও’র হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সালেরডিসেম্বর নাগাদ বাংলাদেশে অতিরিক্ত মৃত্যুর সংখ্যাএক লাখ ৪০ হাজার ৭৬৪ জনে পৌঁছেছে।

সূত্র: ভয়েজ অব আমেরিকা