বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেছেন, তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী। সোমবার (১৪ আগস্ট) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাক্ষাতের বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। তিনি বলেন, বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা ও আঞ্চলিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা উভয়েই চলমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও সহযোগিতার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ইহসানুল করিম জানান যে সারাহ কুক বলেছেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, ব্রিটেন বিশেষ করে বাংলাদেশের নারীদের শিক্ষায় সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
নতুন হাইকমিশনার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। যাতে প্রত্যাবাসনের পর তাদের কাজে লাগানো যায়। সারাহ কুক বলেন, তারা চান বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। আগামী বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য তাদের দীর্ঘ ২১ বছর (১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬) সংগ্রাম করতে হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের বিজয়ের পর, তারা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বিজয় উদযাপন করেছে, শত শত মানুষকে হত্যা করেছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে এবং সারা দেশের বিভিন্ন গ্রাম লুট করেছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার-কে বলেছেন, “আমরাই বাক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করেছি এবং গণমাধ্যমকে বেসরকারি খাতের জন্য উন্মুক্ত করেছি। এক সময় একটি মাত্র রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল ছিলো, এখন বাংলাদেশে ৪০টির বেশি বেসরকারি চ্যানেল চলছে।”
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যু আন্তর্জাতিক স্পটলাইটে থাকলে তাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত হবে।” রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থানের কারণে কক্সবাজার অঞ্চলের সামাজিক সমস্যা আরো বাড়বে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
জলবায়ু ইস্যুতে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয়ভাবে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডকে আরো এগিয়ে নিতে দুই দেশ চলতি বছরের মার্চ মাসে একটি জলবায়ু চুক্তি সই করেছে।”