Skip to content

বন্য হরিণ পালক তরুণ ইয়ু কুও

এওয়েন খ্য জাতি চীনের সংখ্যালঘু জাতিগুলোর একটি। এওয়েন খ্য মানে পাবর্ত্যঞ্চলীয় বনে বসবাসকারী মানুষ। উত্তর চীনের তা সি আন লিং পাবর্ত্যঞ্চলের গভীরে অনেক এওয়েন খ্য জাতির মানুষ বাস করে। তারা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে হরিণ পালন ও শিকার করে জীবন ধারণ করছে। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর সরকারের সাহায্যে তারা নির্দিষ্ট স্থানে বাস শুরু করে। বর্তমানে অন্তর্মঙ্গোলিয়ার গেন হ্য শহরে কিছু কিছু এওয়েন খ্য জাতির মানুষ পাহাড়ের পাদদেশে তাদের পুরোনো জীবনধারা এবং হরিণ পালনের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।

ঊনত্রিশ বছর বয়সী ইয়ু কুও এওয়েন খ্য জাতির একজন তরুণ। প্রাথমিক স্কুলে পড়ার বয়সে তিনি পাহাড় থেকে বের হয়ে চীনের দক্ষিণাঞ্চলে লেখাপড়া করতে যান। পরে তিনি বেশ কয়েকটি বড় শহরে কাজ করেন। হরিণ পালনে মাকে সাহায্য করার জন্য ২০১৮ সালে তিনি গেন হ্য শহরে ফিরে আসেন। ব্যস্ত শহর থেকে নিরিবিলি বনাঞ্চলে ফেরার পর ইয়ু কুও’র জীবনেও প্রশান্তি এসেছে।

শীতকালে সাদা তুষারে ঢাকা তা সিং আন লিং অঞ্চলের তাপমাত্রা মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে নেমে আসে। ইয়ু কুও পরিবারের হরিণ বনাঞ্চলে পালন করা হয়। হরিণের যত্ন নিতে ইয়ু কুও সব সময় পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করেন। পাহাড়ি জীবন শহরের জীবন থেকে একদম আলাদা। গত কয়েক বছরে ইয়ু কুও লোকালয় থেকে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করছেন। জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ, পানি ফুটানো, রান্না করা এবং হরিণ পালনসহ সব কাজই নিজে করেন তিনি। বন তার আবাসস্থল। কেবল হিম হাওয়া এবং বৃক্ষ অতিক্রম করা সূর্যালোক ইয়ু কুও ও তার হরিণের পদাঙ্ক উপলব্ধি করতে পারে।

২০২২ সালের গ্রীষ্মকালে ইয়ু কুও ভিডিও প্ল্যাটফর্মে তার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা শেয়ার করা শুরু করেন। তিনি চান এওয়েন খ্য জাতির মানুষের প্রকৃত জীবন তুলে ধরতে। আরামপ্রিয় হরিণ, সাদা তুষার, খাদ্য অনুসন্ধানকারী পাখিসহ স্নিগ্ধ সুন্দর দৃশ্য অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

বর্তমানে এওয়েন খ্য জাতির মানুষের জন্য স্থানীয় সরকার-নির্মিত আবাসে থাকে হিটিং সিস্টেম, পানি সরবরাহ এবং নেটসহ আধুনিক সব ব্যবস্থা। লেখাপড়া করা এবং চিকিৎসা নেওয়াও সহজ হয়ে উঠেছে। ইয়ু কুও যেমন মনে করেন – শহর ও বন উভয়ের অস্তিত্ব আছে। আধুনিক সভ্যতা এবং পুরোনো ঐতিহ্য একে অপরকে বাদ দিয়ে নয়, তাদের সহাবস্থান প্রয়োজন। মন যেটা চায়, সে ধরনের জীবন কাটানো যায় এখানে। এটিই ইয়ু কুও’র বনাঞ্চলে ফেরার মূল কারণ। তিনি প্রকৃতির সঙ্গে থাকার আনন্দ অনুভব করেন।

বার্তা সূত্র