বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নীতি ও আদর্শ শুধু এদেশের নয়, সারাবিশ্বের নারী সমাজের কাছেই এক মহা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত । এদেশের নিপীড়িত মানুষের মুক্তি সংগ্রামে তিনি নিজেকে প্রচারের বাইরে রেখে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে থেকে যে অসামান্য অবদান রেখেছেন, আজকের গণমাধ্যমের দায়িত্ব হবে সেই ইতিহাসকে যথাযথভাবে তুলে ধরা। যে ইতিহাস পাঠ করে আজকের নারীরা প্রগতির পথে নিজেদের এগিয়ে নিতে অনেক বেশি অনুপ্রেরণা পাবেন ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরামের (বিজেআরএফ) আয়োজনে ৭ আগস্ট শনিবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ একথা বলেন।
ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীন সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে “বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে বঙ্গমাতার অবদান ও গণমাধ্যম” শীর্ষক এই আলোচনানুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক সংসদীয় স্হায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি।
বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরামের সাধারণ সম্পাদক , বাসস’র বিশেষ প্রতিনিধি, বিএফইউজে নেতা এবং গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য- মহিলা শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি শামসুন্নাহার ভূঁইয়া এমপি, ঢাকা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এডভোকেট আব্দুল বাতেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক এম এ বারী, পেশাজীবি সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী চৌধুরী মানিক এবং ঢাকা সাংবাদিক পরিবার বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আল মামুন প্রমুখ।
সভায় মেহের আফরোজ চুমকী বলেন, ৬৬ -এর ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, স্বাধীনতা সংগ্রামের জনমত সৃষ্টিতে বঙ্গমাতা সব সময় বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে বিশেষ পরামর্শ দিয়ে সাহস যুগিয়েছেন। তিনি বঙ্গমাতার বিশেষ ভূমিকার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বলেন,বঙ্গমাতার আদর্শ সবার কাছে পৌঁছে দিতে গণমাধ্যম কর্মীরা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
শামসুন্নাহার ভুাঁইয়া এমপি বলেন,বঙ্গমাতার বিশেষ অনুপ্রেরণার কারণে বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের সকল ক্ষেত্রে সুফল পাওয়া গেছে। তিনি দেশের সকল নারী সমাজকে বঙ্গমাতার আদর্শ অনুসরণ করার আহবান জানান।
এডভোকেট আবদুল বাতেন বলেন, বঙ্গবন্ধুকে আরও বেশি মহীয়ান করে তুলতে শেখ ফজিলাতুন্নেছার মতো একজন মহীয়সী নারীর সাহচর্য অপরিসীম ভূমিকা রেখেছে।
অধ্যাপক এম এ বারী বলেন, বঙ্গমাতা নিজেকে প্রচারের বাইরে রেখে এদেশের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির সংগ্রামে অত্যন্ত জোড়ালো ভূমিকা রেখেছেন এবং অসীম সাহস ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছাতে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ত্যাগের মহিমা গড়েছেন। সেই ইতিহাস জাতীয় স্বার্থে ব্যাপকভাবে প্রচারের দাবি রাখে। এজন্য গণমাধ্যমকে যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, জাতির পিতার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেসা মুজিবের নীতি ও আদর্শ দেশের নারী সমাজের কাছে পৌঁছাতে গণমাধ্যমকর্মীরা অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীকার আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুকে সবসময় সিদ্ধান্ত নিতে বিশেষ পরামর্শ দিয়ে বিশেষ অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে বঙ্গমাতার ভূমিকা ও অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
বিশিষ্ট সাংবাদিক আতাউর রহমান বলেন, বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন দেশের স্বাধীনতাসহ বঙ্গবন্ধুর সব লড়াই-সংগ্রাম ও আন্দোলনের নেপথ্য প্রেরণাদানকারী ছিলেন ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তিনি বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তাঁর প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অফুরাণ উৎস হয়ে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কারাজীবনের অধিকাংশ সময় বঙ্গমাতা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং ছাত্র নেতাদের কাছে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দিক নির্দেশনা দিতেন।
অন্যান্য বক্তা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে লালন করে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গমাতার আদর্শ ও নীতি প্রচারে গণমাধ্যম ও গণমাধ্যম কর্মীরা যাতে যথাযথ ভূমিকা পালন করে তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন ।