ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, কল্যাণী: পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার নদিয়ার কল্যাণীতে জনসভা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু অধিকারী বিভিন্ন জায়গায় বিরোধী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করা প্রসঙ্গে তৃণমূল সরকারকে নিশানা করে বলেন, ‘‘ওদের অস্ত্র শেষ। মামলা দিয়ে মিথ্যে গ্রেফতারির চেষ্টা চলছে। আমরা আইনি পথে লড়ব। ইতিমধ্যে শান্তনু ঠাকুর অশোক কীর্তনীয়ারা আদালতে গেছেন। আমার ভাই বিজেপির কার্যকর্তা, তাঁকেও মিথ্যে মামলা দিয়েছে। আদালত নিরাপত্তা দিয়েছে। বিজেপি সরকারে এলে অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিশন বসিয়ে ব্যবস্থা নেব ৷ ’’
শুভেন্দু এও বলেন, ‘‘সিপিআইএম-কংগ্রেসের মত আমরা সেটিং অপজিশন নই। বিজেপি মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করছে। তাই একদিকে কংগ্রেস মাঝখানে তৃণমূল। পটনায় বৈঠকের ছবি থেকেই স্পষ্ট কে সেটিং করছে।’’ আদালতের নির্দেশেও পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনতে গড়িমসির অভিযোগে সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কমিশনের তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনী অবিলম্বে আজকে না আনলেই আগামিকাল আবার মামলা করব বলেও এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্তব্য করেন শুভেন্দু। নদিয়ায় জেলা পরিষদ, বেসরকারি কলেজে কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন আঞ্চলিক স্তরে কিছু হলেও মানুষই আমাদের জানাচ্ছে। আমরা এ ব্যাপারেও প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হব ৷ ’’ এমনটাই জানান শুভেন্দু অধিকারী।
আরও পড়ুন– দেখুন তো, ছবিটিতে প্রথমে কাকে দেখছেন? এর মাধ্যমেই জানা যাবে আপনার মস্তিষ্কের বয়স
তৃণমূলের নির্দলদের বহিষ্কার করা হচ্ছে। কী বলবেন? প্রশ্নের উত্তরে কটাক্ষের সুরে শুভেন্দু অধিকারী বললেন, ‘‘তৃণমূলের আবার বহিষ্কার! স্যান্ডো গেঞ্জি, তার আবার বুক পকেট! বায়রন বিশ্বাসকে সাগরদিঘির ভোট প্রচারে গিয়ে গাদ্দার সর্দার বলে এলো, আবার তাকেই পতাকা দিয়ে বরণ করছে। এই তো শাসকদলের নীতি।’’ এদিনের কল্যাণীর জনসভা থেকে রংহীন পঞ্চায়েত গড়ার ডাক দেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, ‘‘আমরা আবাস যোজনা রং দেখে দিই না। অন্য রাজ্যে রাজনীতি রং দেখে প্রকল্প দেওয়া হয় না। এ রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটাই করেন। আমরা গ্রাম সংসদ বসিয়ে প্রকল্প বন্টন করব। এক বছর আমাদের ক্ষমতা দিয়ে দেখুন না। বিজেপির নয়, মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে তুলব। সেই গ্রামীণ প্রকল্পে যদি তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ পাওয়ার যোগ্য হয় তাহলে তাকেও সেই প্রকল্পের সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত করব না।’’ শনিবার বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার ডাকে কল্যাণীর যে এলাকায় শুভেন্দু অধিকারীর জনসভা ছিল সেটি মূলত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত।
আরও পড়ুন- টেবিলে শুয়ে শুয়ে এসব কী! বড়লোকদের আজব খেয়ালখুশির রহস্য ফাঁস করলেন সুপারইয়টের কর্মী
সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে অধিকাংশই সংখ্যালঘু। সংখ্যালঘুদের শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তাদের উন্নয়ন কিছুই করেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘুদের এনআরসি জুজু দেখিয়ে ২০২১ সালে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অনেক জায়গাতেই আমাদের প্রচার করতে দেননি। এখন সংখ্যালঘুরা তা বুঝতে পেরেই তৃণমূলীদের দুর্নীতিগ্রস্ত পঞ্চায়েত থেকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যে সংখ্যালঘুরা এতদিন তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিল, তারাই আজ তাদের এলাকায় আমাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে ৷’’ শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, ‘‘ভারত সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দফতর বিভিন্ন পঞ্চায়েতকে যে কর্মসূচি দেয়, অন্যান্য সারা দেশে গ্রামে তা গেলেও এ রাজ্যের পঞ্চায়েত গুলোয় সেই পরিষেবার টাকা চুরি করে নিচ্ছে শাসক দল। গ্রাম উন্নয়নের টাকা বিজেপি আটকায়নি। আমরা চুরি আটকেছি।’’
২০২৩ সালে গ্রামগঞ্জের পঞ্চায়েত বিজেপির হাতে তুলে দেওয়ার জন্য এদিন কল্যাণীর জনসভা থেকে আবেদন জানান শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, ‘‘একবার আমাদের সুযোগ দিন। ৬ মাসের মধ্যে গ্রাম বাংলার মানুষের উন্নয়ন ঘটাতে না পারলে ২০২৪ এর লোকসভা ভোটে আর আপনাদের কাছে ভোট চাইব না।’’
Published by:Siddhartha Sarkar
First published:
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bengal BJP, Suvendu Adhikari