জানা গেছে, পাকিস্তানের আহমেদাদি সম্প্রদায়ের মানুষজন নিজেদের মুসলিম বলে দাবি করলেও, তা মানতে নারাজ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের অধিকাংশ।
১৯৭৪ সালে পাক সংসদ আহমেদাদি সম্প্রদায়কে অমুসলিম হিসেবে ঘোষণা করে। সেই সঙ্গে এই সম্প্রদায়ের মানুষজনদের ইসলাম ধর্ম প্রচার এবং হজ যাত্রার উপর জারি করা হয় নিষেধাজ্ঞা। বর্তমানে পাকিস্তানে প্রায় ১০ লক্ষের বেশি এই সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ সেপ্টম্বর আহমেদাদি সম্প্রদায়ের মসজিদ তিনটিতে ভাঙচুর চালনো হয়।
Anantnag Encounter : অনন্তনাগের ঘটনায় পালটা জবাবে ফের এয়ারস্ট্রাইক? আতঙ্কে ঘুম উড়ল পাকিস্তানের
সেই সঙ্গে পাক পঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ আহেমেদাদিদের মাজারের তোরণ সরিয়ে ফেলে বলে অভিযোগ। ১৯৮৪ সালে পাক হাইকোর্ট সংখ্যালঘুদের ধর্মীয়স্থান ভাঙচুরের বিরুদ্ধে জারি করেছিল নিষেধাজ্ঞা। হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভাঙচুর চালানো হয় বলে দাবি। পাক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও দাবি করেছে যে মসজিদগুলি ভাঙচুরে সামিল হয়েছিল তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি)-এর কর্মীরা।
পঞ্জাবের শেখুপুরা, বাহাওয়ালনগর এবং বাহাওয়ালপুরে আহমেদাদি সম্প্রদায়ের তিনটি মসজিদে হামলা চালানো হয়েছিল। এছাড়াও, চলতি বছরে আহমেদাদি সম্প্রদায়ের একাধিক উপাসনার স্থান পুলিশের মদতে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। তাদের উপাসনাস্থান ভাঙচুর নিয়ে পুলিশের ভূমিকার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আহমেদাদি সম্প্রদায়ের মানুষ।
Muslim Population in World: হিজাব-হালাল থেকে দাড়ি বা ফেজ টুপিতে নিষেধাজ্ঞা, কোন কোন দেশ মুসলিমদের উপর অকথ্য অত্যাচার?
পাকিস্তানের নাগরিক হয়েও, তাদের মৌলিক অধিকারের উপর আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তারা। মসজিদ ভাঙচুরের ঘটনায় নিন্দায় সরব হয়েছে পাকিস্তানের মানবাধিকার সংস্থাগুলি। সুরক্ষা দেওয়ার জন্য লাহোর হাইকোর্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তা না মানায়, আদালত অবমাননা হয়েছে বলে মনে করছে তারা। পাকিস্তানে আহমেদাদি সম্প্রদায়ের অবস্থা দিন দিন করুণ হচ্ছে বলেও সংস্থাগুলির তরফে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
Anantanag Encounter : অনন্তনাগের ঘটনায় ফুঁসছে উপত্যকা, বিক্ষোভে সামিল বিভিন্ন সংগঠন
এ ব্যাপারে পাক সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যও মানবাধিকার সংস্থাগুলির তরফে করা হয়েছে আবেদন। পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্থানের উপর হামলা নতুন কিছু নয়। গত কয়েক মাসে পঞ্জাব প্রদেশের হিন্দুদের একাধিক মন্দিরে দুষ্কৃতী হামলা ঘটেছিল। বেশ কয়েকটি হিন্দু মন্দির গুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। মন্দিরের পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের উপরও নেমে এসেছে অত্যাচার। অভিযোগ উঠেছে ধর্মান্তকরণেরও।