Skip to content

পণ্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সংসদে সমালোচনার মুখে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি

পণ্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সংসদে সমালোচনার মুখে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি

বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি’র বিরুদ্ধে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। কড়ার সমালোচনার মুখে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যদি বিরোধী দলের কোনো সদস্যকে মন্ত্রণালয় পরিচালনার দায়িত্ব দেন, তবে পদত্যাগ করতে তার কোনো সমস্যা নেই।

সোমবার (২৬ জুন) গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত কাট মোশন নিয়ে আলোচনা চলাকালে টিপু মুনশি’র বিরুদ্ধে প্রথম সমালোচনা মুখর হন।নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় বাণিজ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরাও।

ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায়, জাতীয় পার্টির এমপি রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, “মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেল কী করে?” তিনি বলেন, “এত বড় মন্ত্রণালয়। মন্ত্রীর গতিশীলতা না থাকলে দাম বাড়বে। একজন মানুষ কাজ করলে আর সবাই ঘুমালে দেশ চলবে না। বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “ইচ্ছা করলে অবশ্যই সম্ভব। কিন্তু আপনি যদি মনে করেন ব্যবসাটা আমারই, তাহলে এটা দেশ ও জনগণের জন্য দুঃখজনক।”

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, “গত কয়েক মাসে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমলেও, দেশে এর প্রভাব পড়ছে না। বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ছিলো ৬ শতাংশ, এখন মনে হয় ১০ শতাংশ এবং এটা ক্রমবর্ধমান। মূল্যস্ফীতি মানুষের আয় শুষে নিচ্ছে। মূল্যস্ফীতির কারণে সাবান, রুটি সবকিছুর আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “সিন্ডিকেট আছে। এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। সেই সিন্ডিকেট শক্তিশালীও। কিন্তু তারা কি সরকারের চেয়ে শক্তিশালী? আমি মনে করি না তারা সরকারের চেয়ে শক্তিশালী হতে পারে। সরকারের মধ্যে কোনো সিন্ডিকেট থাকলে তা চিহ্নিত করতে হবে।”

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, “বাজারে গেলে মানুষ বিরক্ত হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজার মনিটরিং করছে না। বাণিজ্যমন্ত্রী একজন মুক্তিযোদ্ধা। কেন তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।”

সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, “পেঁয়াজের বাজারে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। কিছু কোম্পানি চিনির বাজারে দৈনিক ১৭ কোটি টাকা লুটপাট করছে। দেড় মাসে ব্রয়লার মুরগির বাজারে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী কিছুই করতে পারছেন না।”

আলোচনা-সমালোচনার জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, “পণ্যমূল্য বাড়ছে ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতির’ প্রভাবে। আর দেশে যে ‘সিন্ডিকেটের’ কথা বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব। তবে, জটিলতাও আছে।”

তিনি বলেন, “বাজারে সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়। এটা ঠিক যে বড় বড় গ্রুপগুলো একসঙ্গে অনেক বেশি ব্যবসা করে। আমাদের লক্ষ্য রাখা দরকার; আমরা জেলে ভরলাম, জরিমানা করলাম। সেটা হয়ত করা সম্ভব। কিন্তু তাতে হঠাৎ করে ক্রাইসিস তৈরি হবে, সেটা সইতে তো আমাদের কষ্ট হবে। এজন্য আমরা আলোচনার মাধ্যমে নিয়মের মধ্যে থেকে চেষ্টা করি।’

টিপু মুনশি বলেন, “আমি জানি না কাদের কত বছরের অভিজ্ঞতা আছে রাজনীতিতে। আমি ৫৬ বছর ধরে রাজনীতি করছি। আমি এখন ৪০ থেকে ৪২ বছর ধরে ব্যবসা করছি।

পদত্যাগের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “এখানে একজন তো আমাকে পদত্যাগ করতে বললেন। খুব ভালো কথা বলছেন। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, তিনি (মোকাব্বির) দায়িত্ব নিলে আমাকে ছেড়ে দিয়ে তাকে দায়িত্বটা দিতে পারেন। কোনো সমস্যা নেই আমার।”

সূত্র: ভয়েজ অব আমেরিকা