Skip to content

নির্বাচন সামনে রেখে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে দেয়া হবেনা

নির্বাচন সামনে রেখে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে দেয়া হবেনা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৩

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার পানালিয়া গ্রামে সার্বজনীন দুর্গাপূজা উৎসব উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়োজিত শান্তি ও সম্প্রীতি সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে দেয়া হবেনা। তোরা বলেন, নির্বাচনের সময় স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির আক্রমণ ও হামলার প্রধান লক্ষ্য হয় ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা যে নজিরবিহীন নৃশংস নির্যাতন চালিয়েছিল আগামীতে আমরা তার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে দেব না।

‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা’র ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার পানালিয়া গ্রামে এ শান্তি ও সম্প্রীতি সমাব আয়োজন করে। পানালিয়ার শিক্ষাব্রতী মাধুরী বণিকের গৃহ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহরিয়ার কবির। প্রধান অতিথি ছিলেন নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্মূল কমিটির সহ সভাপতি শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ ও নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল। অনুষ্ঠানের মধ্যমণি ছিলেন পানালিয়ার সুপরিচিত সমাজকর্মী ও শিক্ষাব্রতী শ্রীমতি মাধুরী বণিক।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতি পাঠাগার মিরপুরের সভাপতি শেখ সেলিম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এবিএম মাকসুদুল আলম, উপদেষ্টা শাহাদাত হোসেন, নবাবগঞ্জ আওয়ামী লীগের সদস্য আমিনুর ইসলাম, কলাকোপা ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং মাধুরী বণিকের ছাত্র সুলতান মাহমুদ ও নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. জামিল উদ্দিন।

পানালিয়া গ্রামের সম্প্রীতি উৎসবের শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা’ আরম্ভ করেছে। বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের পর গত সপ্তাহে আমরা রাজশাহী বিভাগের চারটি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করেছি। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে ধর্ম ও জাতিসত্তা নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিক যেন শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব মুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সে বিষয়ে জনগণকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করা।

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘অসুর যখন ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছিল তখন মা দুর্গাকে দশ হাত দিয়ে মর্ত্যে পাঠানো হয়েছিল অসুর বধের জন্য। খালেদা জিয়াও বাংলাদেশের অসুরের রাজত্ব তৈরি করতে চেয়েছিলেন কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সেই দুষ্টের দমন করেন।’

নির্মূল কমিটির সহ সভাপতি শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ বলেন, ‘সকল ধর্মেই মানুষের দুর্গতি নিরসনের জন্য যুগে যুগে সাম্য ও শান্তির বাণী নিয়ে অবতার এসেছিলেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিকট দেবী দুর্গা সকল অপশক্তির বিনাশকারিণী। তিনি সাম্যের বাণী নিয়ে মর্ত্যে এসেছিলেন। সমাজ থেকে ঝগড়া-বিবাদ, অন্যায়-অবিচার, হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণসহ সকল গর্হিত অপরাধগুলোকে অপসারণ করে ভালোবাসার ও সাম্যের বাণী শুনিয়েছিলেন। ভালোবাসার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না। কিন্তু বর্তমান সমাজে আমরা দেখছি বিএনপি জামায়াত চক্র বিভেদের বাণী ছড়িয়ে দিচ্ছে। তারা সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দিয়ে নিজেদের ফায়দা হাসিল করছে।’

পানালিয়ার শিক্ষাব্রতী মাধুরী বণিক বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজার মূল কথা দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন। আমার গ্রাম পানালিয়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ হতে পারে, কেননা আমার গ্রামের মুসল্লীরা যে ঘাটে ওযু করে নামাজ পড়ে সে ঘাটে হিন্দুরাও স্নান করে মন্দিরে পূজা দিতে যায়। গ্রামের অনেক ভিন্ন ধর্মাবলম্বী আছেন যারা আমাদের এই মন্দির স্থাপনে সাহায্য করেছেন।

তিনি নবাবগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতি পাঠাগারের ২১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন- সভাপতি শ্রী মাধুরী বণিক, সহ-সভাপতি শ্রী দেবদাস বণিক, সমাজকর্মী নূরজাহান বেগম, জনাব বজলুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক শ্রী নয়নতারা বণিক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শ্রী শুভজিৎ বণিক, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী বিপ্লব ঘোষ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সমাজকর্মী শওকত আলী রতন, ছাত্র-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ডা. লিমা আক্তার, ক্রিড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সমাজকর্মী লাবণ্য আক্তার, প্রচার, প্রকাশনা ও দফতর সম্পাদক শ্রী মণি ঘোষ, শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক সমাজকর্মী সাহিদা আক্তার। নির্বাহী সদস্য সমাজকর্মী হোসনেয়ারা বেগম, সমাজকর্মী সামসুর নাহার, সমাজকর্মী ময়না আক্তার, সমাজকর্মী সুমন, শ্রী অজিত সাহা, শ্রী শম্বু সাহা, শ্রী পঙ্কজ সাহা প্রমূখ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শনার্থী ও মাধুরী বণিকের পাঠশালার শিশুদের ভেতর একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে জলখাবার পরিবেশন করা হয়।



বার্তা সূত্র