Skip to content

নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় কমিটি গঠনের দাবি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় প্রগতিশীল সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং সমমনা দলগুলোর সমন্বয়ে সম্মিলিত সংখ্যালঘু সুরক্ষা পরিষদ গঠনের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজন। যেসব এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বেশি বসবাস, সেখানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ব্যক্তিদের নিয়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠনের বিকল্প নেই। অন্যথায় নির্বাচন ঘিরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা কঠিন হবে। গতকাল বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, নির্বাচন বানচালের জন্য বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রকে ডেকে আনছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাফল্য ও উন্নয়নের ধারা স্তব্ধ, যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার বন্ধ করে দেশকে পাকিস্তানের মতো ব্যর্থ, সন্ত্রাসী, জঙ্গি রাষ্ট্র বানাতে ’৭১ ও ’৭৫-এর খুনিরা ফের মাঠে নেমেছে। সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা আন্দোলনের নামে তাণ্ডব করছে এবং গৃহযুদ্ধের হুমকি দিয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ ও আগ্রাসনের ক্ষেত্র তৈরি করছে।

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় ৭০ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে পারেননি। আগামী নির্বাচনে যাতে সব নাগরিক শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তা সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে আগেই নিশ্চিত করতে হবে।

মানবাধিকার নেত্রী আরমা দত্ত এমপি বলেন, সংখ্যালঘুদের জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ বিশ্বব্যাপী একটি ষড়যন্ত্র চলছে। এজন্য সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা জরুরি।

১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, আমাদের উচিত এখনই শেখ হাসিনাকে ফের ক্ষমতায় আনতে কাজ শুরু করা। অতীতে আপনারা যে নির্বাচনী সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন সেগুলোর সঠিক তথ্য প্রমাণ নিয়ে ইউরোপ-আমেরিকার এম্বাসিগুলোর সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করা দরকার। শেখ হাসিনা যদি ফের নির্বাচিত না হন তাহলে শুধু সংখ্যালঘুরাই নন, গ্রামের পর গ্রাম আওয়ামী লীগারদেরও দেশত্যাগ করতে হবে।

শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ বলেন, নির্বাচন এলেই আমরা আতঙ্কিত হই। কিন্তু তখন আতঙ্কিত না হয়ে সমমনাদের নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ভিকটিমদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি অপরাধীদের শাস্তির জন্য আমরা সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি।

বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মানবাধিকার নেতা নির্মল রোজারিও বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচন ছিল সংখ্যালঘুদের জন্য এক অভিশাপ।

বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় বলেন, ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ধারাবাহিকভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর বর্বর নির্যাতন চালায়। সেসব ভয়ংকর ঘটনা আজও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের তাড়া করে। তাই আমরা চাই না, বাংলাদেশে সেই অপশক্তি ফের ক্ষমতায় আসুক।



বার্তা সূত্র