Thursday, February 13, 2025

সপ্তাহে শীর্ষে

প্রাসঙ্গিক বার্তা

নারীদের বিনোদনে বাধা দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ অন্তর্বর্তী সরকারের

সম্প্রতি দেশে নারীদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার ঘটনায় ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেসসচিব আবুল কালাম মজুমদার বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে সরকারের উদ্বেগের কথা জানান।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সারাজীবনই নারী অধিকারের পক্ষে কাজ করেছেন।

বিবৃতিতে উপ প্রেসসচিব বলেন, “নারীদের ফুটবল ম্যাচে জোরপূর্বক বাধা দেওয়ার ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছে সরকার।”

আজাদ আরও জানান, নারীরাও বাংলাদেশের নাগরিক।…যারা নারী ও মেয়েদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে অধিকার ক্ষুণ্ণ করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে সরকার।

উপ প্রেসসচিব বলেন, “এরই মধ্যে দিনাজপুর ও জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসনকে স্থগিত ম্যাচগুলো পুনরায় আয়োজন করতে আদেশ দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।”

সম্প্রতি এসব জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসকেরা তাদেরকে জানিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আজাদ আরও বলেন, “শত শত মানুষ ম্যাচগুলো দেখেছেন এবং তাদের জেলার সকল শ্রেণীর মানুষ তাদের উৎসাহিতও করেছেন।”

জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) নারীদের একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। এই খেলা যেন না হতে পারে সেজন্য মঙ্গলবার দুপুরের পরে আশেপাশের মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে কিছু লোক বিক্ষুব্ধ মুসল্লি পরিচয়ে খেলার মাঠে জড়ো হয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরির পর হামলা করে। হামলায় খেলার মাঠের টিনের বেড়া ভাঙচুর করা হয়।

এ ছাড়া, দিনাজপুর জেলার হাকিমপুরে নারী ফুটবল আয়োজনকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার একই কায়দায় হামলার ঘটনা ঘটে। হাকিমপুরে নারী ফুটবল ম্যাচ বন্ধে তৌহিদী জনতার নামে মাইকিংও করা হয়।

নারী ফুটবল ম্যাচ বন্ধে আসকের উদ্বেগ

এদিকে বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এক বিবৃতিতে জয়পুরহাট ও দিনাজপুরে নারী ফুটবল ম্যাচ আয়োজনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি এবং হামলা ও ম্যাচ বন্ধ করার ঘটনাকে সংবিধান, বিদ্যমান আইন ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যত্যয় বলে অভিহিত করেছে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র বিবৃতিতে উল্লেখ করে, বিগত কিছুদিন ধরে আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, তৌহিদি জনতার নামে একটি গোষ্ঠী দেশের নানা জায়গায় মাজার শরীফে সংঘবদ্ধ হামলা, ওরস আয়োজনে বাধা প্রদান, বাউল গান ও কনসার্ট আয়োজনে বাধা সৃষ্টি করছে। এমনকি কোথাও কোথাও ভাঙচুরের ঘটনাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র এ ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়ে বলেছে, আসক মনে করে, নারী ফুটবল ম্যাচ বন্ধসহ মাজারে হামলা ও বাউল শিল্পীদের গানের আসর বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনাগুলো দেশের প্রচলিত আইনে ফৌজদারি অপরাধ। এ ছাড়া, মেয়েদের খেলাধুলার বিরোধিতা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে যা অত্যন্ত অমর্যাদাকর এবং একইসঙ্গে নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকারকে ক্ষুন্ন করছে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানিয়েছে।

–ভয়েজ অব আমেরিকা

পাঠক প্রিয়