Saturday, March 15, 2025

সপ্তাহে শীর্ষে

প্রাসঙ্গিক বার্তা

ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারের বাড়ি ষষ্ঠ দিনের মতো ভাংচুর চলছে, ‘হাড় পাওয়া গেছে’ দাবি সিআইডি’র

ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার বঙ্গবন্ধু জাদুঘর ভবন ভাঙার ষষ্ঠ দিনেও থামেনি মানুষের ঢল। বিভিন্ন অংশ ভেঙে অবশিষ্ট যা আছে, তা নেওয়ার কার্যক্রম এখনো চলছে।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুই ভবনের মাঝের দুই অংশে কয়েকজনকে মাটি খুঁড়তে দেখা যায়।

কি করছেন জানতে চাইলে এক ব্যক্তি বলেন, “কিছু পাওয়া যায় কিনা দেখছি। একজন তার, পাইপ— এগুলো পেয়েছেন। এখানেও অবশ্যই কিছু পাবো।”

তিনি আরও বলেন, “আপনারা যে যার ইচ্ছা দেখতে পারেন, কিছু পান কিনা। আমরা যেমন নিজ উদ্যোগে এসেছি, আপনারাও দেখতে পারেন। কেউ বাধা দিবে না।”

আরেকজন দর্শনার্থী বলেন, “আমি আজই প্রথম এসেছি। সবার কাছে শুনেছি। আজ দেখতে এলাম।”

এদিকে বাড়ি ভাঙার পরদিন থেকে লোকমুখে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় গুঞ্জন ওঠে, বাড়ির নিচে ‘আয়নাঘর’ পাওয়া গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গোপন বন্দীশালায় নিয়ে মানুষ নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে, এই গোপন বন্দীশালাগুলো ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিত।

ওদিকে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন খানকে উদ্ধৃত করে প্রথম আলো লিখেছে, “কিছু হাড় বা আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “সিআইডির ক্রাইম সিনের একটি দল সকালে গিয়েছিল। তারা সেখান থেকে অপরাধ সংক্রান্ত কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে। এগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর বলতে পারবেন আসলে আলামতগুলো কীসের।”

৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ধানমন্ডি ৩২ ঘিরে যা যা হচ্ছে

গত বুধবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার ভাষণের ঘোষণা দেওয়া হলে তার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সংগঠনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “হাসিনাকে বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ দেওয়াকে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী জনগণের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ হিসেবে দেখি।”

পরে ওইদিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ফেসবুকে আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, “আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।”

তারপর রাত ৮টার পর থেকেই ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জড়ো হতে শুরু করে ছাত্র-জনতা। ৯টার দিকে ভবনটির তৃতীয় তলায় অগ্নিসংযোগ করা হয়।

সাড়ে ১০টার দিকে বাড়িটির সামনে একটি ক্রেন নিয়ে আসা হয়, পরে আসে একটি এক্সক্যাভেটর।

নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ফেসবুক পেইজে ৫ আগস্ট আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

আর এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ৫ আগস্টের পর দ্বিতীয় দফায় ঢাকাসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি, কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা শুরু হয়।স্থানীয় গণমাধ্যম এবং বিভিন্ন জেলার সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানা যায়, ঢাকা ছাড়াও খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, সিলেট, নোয়াখালী, ফেনী, রংপুর শেখ হাসিনার আত্মীয় এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে অন্তবর্তী সরকার দাবি করে, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা শক্তভাবে প্রতিহত করা হবে।

এতে বলা হয়, “অন্তবর্তী সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠী সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করছে। সরকার এ ধরনের কর্মকাণ্ড শক্তভাবে প্রতিহত করবে।”

সরকার নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রস্তুত। কোনো ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হলে দায়ী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেবে এবং দোষীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবে বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।

–ভয়েজ অব আমেরিকা

পাঠক প্রিয়