Saturday, March 15, 2025

সপ্তাহে শীর্ষে

প্রাসঙ্গিক বার্তা

ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর রোডের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে এখনও ভাংচুর চলছে

ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙার চতুর্থ দিন রাতেও উৎসুক জনতার ভিড় কমেনি।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার পর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভাঙন এখনও চলছে। তবে এবার বহিরাগতরা এসে ভাঙা ভবন থেকে ব্যবহার্য ইট, লোহা খুলে নিয়ে যাওয়ায় ব্যস্ত।

দেখা যায়, ফুটপাতে বিশাল আকৃতির কন্টেইনার ভাঙছেন কয়েকজন। ঝালাই করে বড় বড় লোহার পাত খুলে নেওয়া হচ্ছে বিক্রির জন্য।

গত বুধবার ভাঙন শুরুর পর থেকেই চলছে ইট, পাথর, লোহাসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী লুটপাট। প্রথম দিকে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা থাকলেও এখন জায়গাটি একেবারে উন্মুক্ত। ফলে অবশিষ্ট যা কিছু আছে, অনায়াসে তা নিয়ে যাচ্ছে লোকজন।

৩২ নম্বরে আসা অনেকেই জানান, এখানে কী হয়েছে, এখনও কী চলছে—তা দেখতে এসেছি। কেউ কেউ আবার স্মৃতি হিসেবে রাখতে ছবি তুলতে এসেছেন বলে জানান।

গত বুধবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার ভাষণের ঘোষণা দেওয়া হলে তার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “হাসিনাকে বক্তব্য প্রকাশের সুযোগ দেওয়াকে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী জনগণের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ হিসেবে দেখি।”

পরে ওইদিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ফেসবুকে আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, “আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।”

তারপর রাত ৮টার পর থেকেই ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জড়ো হতে শুরু করে ছাত্র-জনতা। ৯টার দিকে ভবনটির তৃতীয় তলায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। সাড়ে ১০টার দিকে বাড়িটির সামনে একটি ক্রেন নিয়ে আসা হয়, পরে আসে একটি এক্সক্যাভেটর।

নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ফেসবুক পেইজে ৫ আগস্ট আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। আর এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ৫ আগস্টের পর দ্বিতীয় দফায় ঢাকাসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি, কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা শুরু হয়।

স্থানীয় গণমাধ্যম এবং বিভিন্ন জেলার সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানা যায়, ঢাকা ছাড়াও খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, সিলেট, নোয়াখালী, ফেনী, রংপুর শেখ হাসিনার আত্মীয় এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে অন্তবর্তী সরকার দাবি করে, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা শক্তভাবে প্রতিহত করা হবে।

এতে বলা হয়, “অন্তবর্তী সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠী সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করছে। সরকার এ ধরনের কর্মকাণ্ড শক্তভাবে প্রতিহত করবে।”

সরকার নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রস্তুত। কোনো ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হলে দায়ী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেবে এবং দোষীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবে বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।

–ভয়েজ অব আমেরিকা

পাঠক প্রিয়