Skip to content

দেশের অখণ্ডতার পক্ষে বিজেপি, ‘গোর্খাল্যান্ড’ নিয়ে এখনই ভাবতে নারাজ গেরুয়া শিবির   

দেশের অখণ্ডতার পক্ষে বিজেপি, ‘গোর্খাল্যান্ড’ নিয়ে এখনই ভাবতে নারাজ গেরুয়া শিবির   

প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লিঃ বছর গড়ালেই সাধারণ নির্বাচন। পরিবর্তন বনাম প্রত্যাবর্তনের লড়াইকে কেন্দ্র করে রাজ্য স্তরে সক্রিয়তা শুরু হয়েছে বিজেপি শিবিরে। সেই সূত্রে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, পশ্চিমবঙ্গকে বিশেষ নজরে রাখা হচ্ছে। বিজেপির ‘গড়’ উত্তরবঙ্গ নিয়েও রয়েছে বিশেষ ভাবনাচিন্তা। তবে বাংলা ভাগ, পৃথক রাজ্য গঠন তথা গোর্খাদের দাবিদাওয়া নিয়ে এখনই কোন সিদ্ধান্ত নিতে রাজি নয় গেরুয়া শিবির।

বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি দিল্লির এক পাঁচতারা হোটেলে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখোমুখি হয়েছিলেন বিজেপি জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং অশ্বিনী বৈষ্ণব, অনুরাগ সিং ঠাকুর, পীযুষ গয়েল, রাজনাথ সিং-এর মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার বিশিষ্ট সদস্যরা। সেখানেই উত্থাপিত হয় উত্তরবঙ্গের সার্বিক পরিস্থিতিও৷ সূত্রের দাবি, উত্তরবঙ্গ নিয়ে পৃথক ও স্বতন্ত্র কিছু ভাবনাচিন্তা আছে শীর্ষ নেতৃত্বের৷ ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের দিকে দিকে পদ্মফুল ফোটায়, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে দলীয় কর্মকাণ্ড ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে বিজেপি৷ তবে শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, উন্নয়নই হবে শেষ কথা, কিন্তু বাংলা ভাগ, গোর্খাদের দাবি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি এখনও৷ তাঁদের মতে, পুরনো দাবি-দাওয়া থাকতেই পারে, তবে তা নিয়ে কিন্তু এমন কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে না যা দেশের একতা, অখন্ডতা, স্বার্থের পরিপন্থী৷ প্রশ্ন উঠেছে, তবে কী গোর্খাল্যান্ড, কামতাপুর, সীমাঞ্চল ইত্যাদি পৃথক রাজ্যের দাবিদাওয়া থেকে কী তবে সরে দাঁড়াল গেরুয়া শিবির? স্বাভাবিক ভাবেই এ নিয়ে কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে। এই প্রসঙ্গে অবশ্য তাদের স্বগতোক্তি – ‘কেন পৃথক রাজ্যের দাবি উঠছে বার বার সেটাও কিন্তু ভেবে দরকার। রাজ্য সরকারের অপশাসনই তার কারণ।’

জেপি নাড্ডা সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় সদস্যের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকারের মদতে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে গোটা রাজ্যে৷ সংখ্যালঘু তোষণ চলছে৷ তবে নেতৃত্ব আশাবাদী এমন পরিস্থিতি বেশিদিন থাকবে না। জনতাই পরিবর্তন আনবে, যেমন হয়েছে আগে৷ কতদিন ধরে জনতাকে দমিয়ে রাখা হবে? একদিন না একদিন তারা প্রতিবাদে মুখর হবেই৷ সেদিনই সন্ত্রাসের রাজত্বের অবসান ঘটবে, জানিয়েছেন গেরুয়া শিবিরের মাথা-রা।

আগামী মাসে বিজেপি সভাপতি নিজে বাংলায় যাবেন, রাজ্য সফরে আসবেন একঝাঁক কেন্দ্রীয় নেতাও৷ জেলা, রাজ্যস্তরের নেতা-কর্মী ও সদস্য দের সঙ্গেও বৈঠকে বসা হবে৷ দার্জিলিং থেকে শুরু করে সুন্দরবন পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক শক্তির করা হবে মূল্যায়ণ। এক্ষেত্রে উঠে আসে দুর্নীতির প্রসঙ্গ। তাদের মতে, এখন বাংলার অপর নাম দুর্নীতি৷ সব স্তরের দুর্নীতি সামনে আসছে৷ তারা মনে করছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো নিজে এই দুর্নীতির শিখরে বসে আছেন৷

বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব দাবি করেছেন, আশার কথা এই যে বাংলার সাধারণ মানুষ রুখে দাঁড়াতে শিখে গেছেন, তাঁরা প্রতিবাদ করছেন সমস্বরে৷ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে লড়াই করার পরেও হয়তো পঞ্চায়েতে রিগিং আর সন্ত্রাস করে জিতবে তৃণমূল, কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে তা হবে না৷ সংখ্যালঘু তোষণের মূল্য চোকাতে হবে তৃণমূলকে৷ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নব জোয়ার যাত্রা প্রসঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ‘আমরা সব কিছুই লক্ষ্য রাখছি৷  এটাও দেখছি যে বাংলার জনতা হাতের সামনে পেয়ে কিভাবে অভিষেককে প্রশ্নবাণে নিশানা করছেন৷’

বার্তা সূত্র