তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের অধীনে আরো দুটি খাল খনন করে, অভিন্ন নদী থেকে আরো বেশি পানি প্রত্যাহার করার পরিকল্পনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটি এ উদ্বেগ জানিয়েছে বলে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
সোমবার (৬মার্চ) অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকের পর, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিএনপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,“(স্থায়ী কমিটির) বৈঠকে মনে হয়েছে যে, বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে একটি চুক্তি সই না করেই আরো দুটি খাল খননের পরিকল্পনা, বাংলাদেশকে (অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য অংশ থেকে) বঞ্চিত করার চেষ্টা।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বিএনপির নীতিনির্ধারকরা আক্ষেপ করে বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের ননজানু বৈদেশিক নীতির কারণে এবং পানিবণ্টন চুক্তি সইয়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায়, বাংলাদেশের মানুষ তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য অংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।” তারা ভারতের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
ভারতীয় সংবাদ আউটলেট দ্য টেলিগ্রাফের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের অধীনে, আরো দুটি খাল খনন করতে ও সেচের পানি সরবরাহ করতে প্রায় এক হাজার একর জমির অধিগ্রহণ করেছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিস্তা ও জলঢাকা থেকে পানি তোলার জন্য একটি ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা পর্যন্ত খনন করা হবে এবং তিস্তার বাম তীরে আরেকটি ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল তৈরি করা হবে। এতে প্রায় এক লাখ কৃষক উপকৃত হবে।
তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প ১৯৭৫ সালে ভারত সূচনা করেছিলো। উত্তরবঙ্গের ৯ দশমিক ২২ লাখ হেক্টর কৃষি জমিতে সেচ পরিকল্পনার আওতায়, তিস্তা নদীর পানি নদীর উভয় তীরে খালের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়।
বাংলাদেশের পরিবেশ ও পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদী থেকে পানি ভারতের প্রত্যাহারের কারণে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর অংশ শুকিয়ে গেছে। এই প্রকল্পটি কৃষি, বাস্তুতন্ত্র এবং বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে।
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকট নিরসনের জন্য বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের অপেক্ষায় রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি’র এমন চুক্তির বিরোধিতা করে আসছেন।