
ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগ নেতা কাউসার হাসান কায়েস ও সাব্বির হোসাইনকে বেধড়ক মারধরের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত দুজনকে তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে সাব্বির আহমেদকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছুটি দেওয়া হলেও গুরুতর আহত কাউসার হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ধানমন্ডি পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কাউসারের মাথায়, চোখে জখমের চিহ্ন রয়েছে আর সাব্বিরের মাথায়, ঘাড়ে ও হাতে জখমের চিহ্ন রয়েছে।
আহত ছাত্রলীগ নেতা কাউসার হোসেন জানান, রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট সংলগ্ন আমতলী গেটের সামনে দিয়ে বের হওয়ার সময় একটি মোটরসাইকেল সামনাসামনি হয়। আমাদের বাইকের সামনে এসে তারা বলে নেশা করেছিস নাকি। এ সময় তারা আমাদের গালমন্দ করতে থাকে।
তিনি বলেন, এরপর আমরা স্যরি বলে সেখান থেকে চলে আসি। ক্যাম্পাসে (ঢাকা কলেজে) ফেরার পথে শহীদ মিনার এলাকায় পৌঁছানোর পর চারটি বাইক আমাদের পথ গতিরোধ করে। বাইক থেকে নেমে পথ গতিরোধ করার কারণ জানতে চাইলে ওরা আবারও গালমন্দ করতে থাকে। এ সময় কে তোরা? ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ করোস, তাই না? এসব কথা বলে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় শহীদ মিনার এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশ এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
কাউসার বলেন, আমার ধারণা এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত। হামলাকারী প্রত্যেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
ধারণা করা হচ্ছে, সাত কলেজ ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যে টানাপোড়েন চলছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
এদিকে ঘটনার পরপরই ঢাকা মেডিকেল কলেজে আসেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
হামলার বিষয়ে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার ওপর হামলা হয়েছে, এমন খবর শুনে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মেডিকেলে আসি। এসে দেখতে পাই এখানে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কয়েক’শ নেতাকর্মী ছুটে এসেছেন। তাদের আহত সহযোদ্ধাদের পাশে থাকার জন্য। মূলত, ঢাকা মেডিকেল মোড়ে চা পান করার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। আহত দুজনই বেশ জখম হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।
তিনি বলেন, এদের মধ্যে একজন (কাউসার হোসেন কায়েস) গুরুতর আহত হয়েছেন। তার মাথায় এবং বাম চোখে জখম হয়েছে। আরেকজনের (সাব্বির আহমেদ) কাঁধে ঘাড়ে আঘাত পেয়েছেন। সাব্বির আহমেদকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে ওষুধপত্রসহ ঢাকা কলেজে তার হলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর গুরুতর আহত কাউসার হোসেনকে ঢামেকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ধানমন্ডি পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর।
কারা হামলা করেছে এ বিষয় জানতে চাইলে ইনান বলেন, প্রাথমিকভাবে বলতে পারছি না। এটি খতিয়ে দেখব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অবগত করব যেন হামলাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে পারেন। একইসঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত এমন অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, কারা হামলা করেছে সেটি এখনও আমার জানা নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ ছাত্রলীগকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অধীনে নিয়ে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক ইনান বলেন, এটি একটি সাংগঠনিক বিষয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাজ হবে। গঠনতন্ত্র ছাত্রলীগের সকল নেতাকর্মীদের কাছে সংবিধান।
তিনি বলেন, গঠনতন্ত্রে যেভাবে ছাত্রলীগের ইউনিট সমূহের কমিটি গঠন করার কথা রয়েছে সেভাবেই কাজ করা হবে।