Skip to content

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাস চলাচলে স্বস্তি যাত্রীদের

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাস চলাচলে স্বস্তি যাত্রীদের

কর্মব্যস্ত জীবনে রাজধানী ঢাকায় নাগরিকদের যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থাকতে হয়, সেখানে এখন দ্রুতই শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যাওয়া যাচ্ছে। যানজটের নগরীতে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যেন নাগরিকদের মনে একটুখানি স্বস্তির সুবাতাস এনে দিয়েছে।

উদ্বোধনের পর থেকে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত গাড়িই চলছিল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে। এ নিয়ে উত্তরা-ফার্মগেট এলাকায় যাতায়াতকারীদের আক্ষেপও থাকলেও সেটি এখন ঘুচে গেছে। গত পাঁচ দিন ধরে পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলছে বিআরটিসির বাস সার্ভিস।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর চালু হওয়ার প্রথম দিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রী বিআরটিসির বাস সার্ভিসে চলাচল করেন। এরপর থেকে প্রতিদিনই বাড়ছে নিয়মিত যাতায়াত করা যাত্রীর সংখ্যা। যাত্রীরাও এই বাস সার্ভিসে সন্তুষ্টিও প্রকাশ করেছেন।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার খামারবাড়ী প্রান্তে খেজুর বাগান অংশে বিআরটিসির বাস সার্ভিসের টিকিট কাউন্টারে ঘুরে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। তাদের অনেকেই জানান,  প্রথমবারের মতো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অভিজ্ঞতা নিতে এসেছেন। আবার নিয়মিত যাতায়াত করা যাত্রীর সংখ্যাও কম না।

কাউন্টারে থাকা টিকেট বিক্রেতারা জানান, শুরুতে ৮টি বাস দিয়ে চলাচল করলেও প্রতিদিনই যাত্রীসংখ্যা বাড়ায় পাঁচ দিনের মাথায় সেই সংখ্যা বেড়ে ১৩টি হয়েছে। ১০ মিনিট পরপর বাসগুলো ছেড়ে যায়। প্রতিটি বাসই দৈনিক গড়ে ছয়টি করে ট্রিপ (আসা-যাওয়া) দেয়। আপাতত প্রতিদিন রাত ৯টা পর্যন্ত এই বাস সার্ভিস চালু রয়েছে।

যাত্রীরা যা বলছেন

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিআরটিসির বাস সার্ভিসে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তারা জানান, ২০ থেকে ৩০ মিনিটে ফার্মগেট থেকে উত্তরা জসীমউদ্দীন পৌঁছানো এক অসম্ভব বিষয় হলেও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বদৌলতে তা সম্ভব হয়েছে। 

তারা আরও জানান, বিআরটিসির বাসগুলো রাজধানীতে চলাচলকারী অন্যান্য বেসরকারি বাসের তুলনায় যাত্রীবান্ধব। এছাড়া এই রুটের বিআরটিসির বাস সার্ভিসের ব্যবস্থাপনাও সন্তোষজনক।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা মামুন হায়দার নামে এক যাত্রী বলেন, “আমি গত তিন দিন ধরে এই বাস সার্ভিস ব্যবহার করছি। অফিস শাহাবাগ হলেও কষ্ট করে খেজুর বাগান এসে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে করে বাড়ি ফিরি। যানজট না থাকলে ২০ মিনিটেই এয়ারপোর্ট চলে যাই। আর যানজটের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩৫ মিনিট লাগে। তবে এতেও কোনো সমস্যা নেই। কারণে আগে অন্যান্য বাসে যেতে প্রায় দুই-আড়াই ঘণ্টা সময় লেগে যেত।”

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী টুটুল বলেন, “এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বিআরটিসির সার্ভিস চালুর প্রথম দিনেই বাসে চড়েছিলাম। আজ (শনিবার) আবার যাবো। এখানে যাত্রার অভিজ্ঞতা চমৎকার।”

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশ বিমানবন্দরে এলাকার কাওলা থেকে ফার্মগেট উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সাধারণ যাত্রীদের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে বিশেষ বাস সার্ভিস চালু করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)।

ভাড়া ব্যবস্থা

বিআরটিসি সূত্রে জানা যায়, খেজুরবাগান থেকে এয়ারপোর্ট রোড পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার যাত্রার জন্য ৩৫ টাকা এবং জসিমউদ্দিন রোড পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার যাত্রার জন্য ৪০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে কিলোমিটার প্রতি ভাড়া হবে ২ টাকা ৪৫ পয়সা। ই-টিকেটিংয়ের মাধ্যমে এই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।



বার্তা সূত্র