Thursday, January 16, 2025

সপ্তাহে শীর্ষে

প্রাসঙ্গিক বার্তা

ঢাকা আজও বায়ুদূষণে শীর্ষে, সকালের বাতাসের মান খুবই অস্বাস্থ্যকর

জেনে নিন আজ সকালের ঢাকার বাতাসের মান। আজ শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ বায়ু দূষণে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। বিশ্বজুড়ে বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউ এয়ারের তথ্য অনুযায়ী আজ ঢাকার বাতাসের মান খুবই অস্বাস্থ্যকর।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ৭ টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত একিউআই সূচকে ২৭৬ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় বায়ু দূষণে ১ নম্বর স্থানে রয়েছে ঢাকা শহর।

বায়ুদূষণে শীর্ষ ১০ দূষিত শহরের তালিকা

২৭৬ স্কোর নিয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকার প্রথম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।

২২০ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর।

২০০ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে উগান্ডার কাম্পালা।

১৮৩ স্কোর নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি।

১৮০ স্কোর নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর।

১৭৫ স্কোর নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে চীনের হাংচৌ।

১৬৭ স্কোর নিয়ে সপ্তম স্থানে রয়েছে ইরানের তেহরান।

১৬৭ স্কোর নিয়ে অষ্টম স্থানে রয়েছে ভারতের কলকাতা।

১৬৪ স্কোর নিয়ে নবম স্থানে রয়েছে আফগানিস্তানের কাবুল।

এবং, ১৫৯ স্কোর নিয়ে দশম স্থানে রয়েছে উজবেকিস্তানের তাসখন্দ।

উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।

একিউআই স্কোর অনুযায়ী-

  • ০ থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসের মান ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়।
  • ৫১ থেকে ১০০ স্কোর, বাতাসের মান মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়।
  • ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য বাতাসের মান অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।
  • ১৫১ থেকে ২০০ স্কোর, অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।
  • ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরের মধ্যে থাকলে খুব অস্বাস্থ্যকর।
  • এবং স্কোর ৩০১ এর উপরে থাকলে বাতাসের মান ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।

বায়ু দূষণ কি বা বায়ু দূষণ কাকে বলে?

বায়ু দূষণ বলতে বায়ুমণ্ডলে এমন সব ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি বোঝায় যা মানুষের স্বাস্থ্য, প্রাণী, উদ্ভিদ ও পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এটি মূলত এমন পরিস্থিতি যেখানে বায়ুতে ধূলিকণা, ক্ষতিকারক গ্যাস (যেমন কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড) বা রাসায়নিক উপাদান মিশে যায়, যা বায়ুর গুণগত মানকে নষ্ট করে এবং বায়ুমণ্ডলের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলোকে পরিবর্তন করে দেয়।

বায়ুদূষণের বিভিন্ন উৎস রয়েছে, যেমন:

  • যানবাহনের ধোঁয়া: যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ু দূষণের অন্যতম প্রধান উৎস। এতে কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড ইত্যাদি ক্ষতিকারক গ্যাস থাকে।
  • শিল্প ও কলকারখানার ধোঁয়া: শিল্প-কলকারখানা নির্গত গ্যাস ও ধোঁয়া বায়ুকে দূষিত করে। এতে সালফার ডাই অক্সাইড, অ্যামোনিয়া, এবং বিভিন্ন রাসায়নিক থাকে।
  • ইটভাটার ধোঁয়া: ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া বায়ু দূষণের আরেকটি অন্যতম কারণ।
  • বর্জ্য ও জৈব পদার্থ পোড়ানো: জৈব পদার্থ ও বর্জ্য পদার্থ পোড়ানোর ফলে ক্ষতিকর ধোঁয়া সৃষ্টি হয় এতে বায়ুতে ক্ষতিকারক উপাদান ছড়িয়ে পড়ে।
  • প্রাকৃতিক উৎস: কিছু প্রাকৃতিক উৎস, যেমন আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ধূলিঝড় এবং বন দাবানল ইত্যাদির ফলে সৃষ্ট ধূলিকণা এবং গ্যাস বায়ুদূষণের কারণ হতে পারে।

বায়ুদূষণের গুরুতর স্বাস্থ্যগত প্রভাব রয়েছে। বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসের রোগ, ক্যান্সার, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়াও, বায়ুদূষণ পরিবেশের ক্ষতি করতে পারে, যেমন বন ধ্বংস, ফসলের ক্ষতি, এবং জলবায়ুর পরিবর্তন।

বায়ুদূষণ মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। বায়ুদূষণ সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর। এই সমস্যা মোকাবেলায় সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নিতে হবে।

বায়ু দূষণের অবস্থা জানা, নিজেকে এবং আপনার পরিবারকে দূষণ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সহায়তা করে।

বার্তা সূত্র

পাঠক প্রিয়