যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউসে আলোচনার আয়োজন করেছেন। আলোচ্যসূচির শীর্ষে থাকছে গাজা ভূখন্ডে হামাস জঙ্গিদের সঙ্গে ইসরায়েলের অস্ত্র বিরতি।
এই অস্ত্র বিরতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মূহুর্তে এই আলোচনা হচ্ছে। অস্ত্র বিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের শর্তগুলি সম্পর্কে সহমত পোষণ করার জন্য ইসরায়েল ও হামাসের হাতে রয়েছে চার সপ্তাহেরও কম সময়। এই শর্তগুলির মধ্যে রয়েছে গাজায় আটক অবশিষ্ট সব জিম্মির মুক্তি, স্থায়ী ভাবে লড়াই থামানো এবং ওই অঞ্চল থেকে ইসরায়েলের প্রত্যাহার।
সোমবার সংবাদদাতাদের ট্রাম্প বলেন,“আমার কাছে এমন কোন নিশ্চয়তা নেই যে শান্তি টেকসই হবে।”
হোয়াইট হাউস সফরের আগেই সোমবার নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে বৈঠক করেন । উইটকফ অস্ত্রবিরতি চুক্তির জন্য চাপ প্রদানের ক্ষেত্রে ছিলেন অন্যতম এক ব্যক্তি।
নেতানিয়াহুর দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায় যে বৈঠকটি ছিল “ইতিবাচক ও বন্ধুত্বপূর্ণ” এবং “দ্বিতীয় পর্যায়ের এই অস্ত্রবিরতি বিষয়ে ইসরায়েলের সামগ্রিক অবস্থান সম্পর্কে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে গিয়ে তিনি তাঁর নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রীসভার সঙ্গে বৈঠক করবেন”।
আশা করা হচ্ছে উইটকফ কাতার ও মিশরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন যেহেতু এই তিনটি দেশ লড়াই বন্ধের জন্য মধ্যস্থতায় তাদের ভূমিকা অব্যাহত রাখছে।
অস্ত্রবিরতি ছাড়াও নেতানিয়াহু বলেন তিনি এবং ট্রাম্প ইরানের আগ্রাসন মোকাবিলা করতে এবং আরব রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা করবেন।
ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে ইসরায়েল ও চারটি আরব রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে মধ্যস্থতা করেছিলেন। তিনি এখন চাইছেন আরও বড় রকমের সমঝোতা যেখানে ইসরায়েল সৌদি আরবের সঙ্গে জোট বাঁধতে পারবে।
তবে সৌদি আরব বলেছে তারা এই ধরণের চুক্তিতে তখনই সম্মত হবে যদি গাজায় যুদ্ধ বন্ধ হয় এবং গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিশ্বাসযোগ্য পথ পরিস্কার হয়। মধ্যপ্রাচ্য ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময়ে ইসরায়েল এই অঞ্চলগুলি দখল করে নেয়।
যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র হবার বিষয়টি সমর্থন করে কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার‘এর বিরোধী।
যুক্তরাষ্ট্র অভিহিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাস এ পর্যন্ত ১৮ জন পণবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে এবং ইসরায়েল শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্ত দিয়েছে।
হামাস জঙ্গিরা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়ে ১২০০ লোককে হত্যা করে এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করায় গাজার যুদ্ধ শুরু হয়।
পনেরো মাসের এই যুদ্ধে ইসরায়েলের পাল্টা আক্রমণে ৪৭,৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে নিহতদের এই সংখ্যার মধ্যে রয়েছে ১৭,০০০ জঙ্গিও যাদেরকে তারা হত্যা করেছে।
এই প্রতিবেদনের কিছু অংশ এপি, এফপি ও রয়টার্স থেকে নেয়া হয়েছে।