Thursday, February 13, 2025

সপ্তাহে শীর্ষে

প্রাসঙ্গিক বার্তা

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসায় যুক্তরাষ্ট্র কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের দ্রুত বহিষ্কার করছে

যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ এখন প্রতিদিন শত শত বৈধ কাজগপত্রহীন অভিবাসীকে আটক করে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে, যারা বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে তাদের বহিষ্কার করতে ২০২৪ নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের দেয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

“আমরা অভিবাসন আইন প্রয়োগ করবো,” ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স রবিবার সিবিএস টেলিভিশন নেটওয়ার্কের ‘ফেস দ্য নেশন’ অনুষ্ঠানে বলেন।

হোয়াইট হাউস এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোরসমেন্ট এজেন্সির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম কয়েক দিনে ১,০০০ এর বেশি অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে, যাদের কয়েক’শ গুয়াতেমালা সহ অন্যান্য দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

“এই কাজ বেশ ভালভাবে আগাচ্ছে। আমরা খারাপ অপরাধীদের বের করে দিচ্ছি,” ট্রাম্প শুক্রবার নর্থ ক্যারোলাইনায় হারিকেনে বিধ্বস্ত এলাকায় পুনর্বাসন কাজ পর্যবেক্ষণ করার সময় সাংবাদিকদের জানান।

কোন প্রমাণ না দিয়েই তিনি বলেন, “এরা সব খুনি। এখানে এমন লোক আছে যারা যত খারাপ হতে পারে তত খারাপ। যত খারাপ আপনি দেখেছেন। আমরা আগে তাদের বের করে দিচ্ছি।”

সীমান্তে আরও সৈন্য

হোয়াইট হাউস কিছু ছবি প্রকাশ করে যেখানে হাতকড়া পরানো অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি সি-১৭ সামরিক পরিবহন বিমানে উঠতে দেখা যায়।

ট্রাম্পের “সীমান্ত রাজা” টম হোম্যান এবিসি টেলিভিশন নেটওয়ার্কের “দিস উইক” অনুষ্ঠানে রবিবার বলেন, “সারা দেশে আরও আটক হবে।”

ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে ১,৫০০ সৈন্য মোতায়েন অনুমোদন করেছেন, এবং হোম্যান বলেন, “আপনি এই সংখ্যা আরও বাড়তে দেখবেন। তারা সেখানে সুরক্ষিত সীমান্ত তৈরি করতে গেছে।”

তিনি বলেন যুক্তরাষ্ট্র “যতজনকে আটক করা যায়” ততজনকে ফেরত পাঠাচ্ছে। মূল মনোযোগ হচ্ছে যারা যুক্তরাষ্ট্রে কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। তারপর, যাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা প্রত্যাখ্যান করেছে, তাদের আটক করে ফেরত পাঠানো হবে।

প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মনোনীত “সীমান্ত রাজা” টম হোম্যান। ফাইল ফটোঃ ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫।

“আমরা শুরুর পর্যায়ে আছি,” হোম্যান বলেন।

“এই দেশের আইন লঙ্ঘন করা ঠিক না,” হোম্যান বলেন। তিনি বৈধ কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের, এমনকি যাদের যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করার কোন আদেশ দেয়া হয়নি, তাদেরকেও স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় এক কোটি ১০ লক্ষ বৈধ কাগজপত্রহীন অভিবাসী আছে বলে ধারণা করা হয়। এই সংখ্যা এত বড় যে অনেক কর্মকর্তা মনে করেন তাদের সবাইকে ফেরত পাঠানো অসম্ভব হবে।

“আমাদের যতটুকু অর্থ আছে তা দিয়ে যতটুকু করা যায়, আমরা করবো,” হোম্যান বলেন।

অর্থ বরাদ্দের আহ্বান

ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রেহ্যাম ফেরত পাঠানোর কাজে আরও অর্থ বরাদ্দ করার জন্য কংগ্রেসে তাঁর রিপাবলিকান সহকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

“আমরা ট্রাম্প টিমকে যথেষ্ট অর্থ দেইনি,” গ্রেহ্যাম এনবিসি টেলিভিশন নেটওয়ার্কের “মিট দ্য প্রেস” অনুষ্ঠানে বলেন। তিনি বলেন, হোম্যানের “আরও বেশি অভিবাসী কর্মী নিয়োগ করা প্রয়োজন। তাঁর মেক্সিকোর সাথে সীমান্ত প্রাচীর এবং প্রযুক্তি সম্পন্ন করা প্রয়োজন। এটাকে কার্যকর করতে, তাঁর আটক ব্যক্তিদের জন্য ৪১,০০০ বিছানার জায়গায় ১৫০,০০০ বিছানার প্রয়োজন।”

“কাজেই, বিশেষ করে হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ আমার রিপাবলিকান সহকর্মীদের বলবো, আমরা ইতস্তত করছি আর অভিবাসন পরিকল্পনা দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা দেয়াল তৈরি করছি না, আমরা দেয়ালে আটকে গেছি। টম হোম্যান যে পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন, সেটা কার্যকর করার জন্য তাঁকে প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে হবে। এবং, কংগ্রেসের অর্থায়ন ছাড়া আমরা দেয়ালে বাড়ি খাবো,” গ্রেহ্যাম ঘোষণা দেন।

ট্রাম্পের প্রশাসন মেক্সিকোতে অপেক্ষামান অভিবাসীদের মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সাক্ষাৎকার নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু ট্রাম্পের অভিবাসন-বিরোধী আদেশ আইনগত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। বৈধ কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেয়া শিশুদের নাগরিকত্ব পাওয়ার সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত অধিকার বাতিল করে ট্রাম্পের আদেশ একজন বিচারক ইতোমধ্যেই আটকে দিয়েছেন।

–ভয়েজ অব আমেরিকা

পাঠক প্রিয়