Skip to content

জাপান থেকে প্রাপ্তি

জাপান থেকে প্রাপ্তি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক জাপান সফর বাংলাদেশের জন্য বিশেষ প্রাপ্তি এনে দিয়েছে। এই সফরকে যথেষ্ট সফল বলেই অভিহিত করতে হবে। বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে প্রতিরক্ষা বিষয়ে সহযোগিতাসহ আটটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিষয়গুলো হচ্ছে- কৃষি, শুল্ক, আইসিটি ও সাইবার নিরাপত্তা, শিল্পোন্নয়ন, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ, জাহাজ পুনর্ব্যবহার এবং গণপরিবহন মেট্রোরেল বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি। চীন ও ভারতের পর তৃতীয় দেশ হিসেবে জাপানের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে বাংলাদেশের, যা অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, সর্বোপরি ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে সবিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টোকিও সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সম্পর্ক উপনীত হয়েছে এক নতুন উচ্চতায়। দুদেশের বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ব্যাপক অংশীদারিত্ব থেকে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ উন্নীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। জাপানের প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতি তার দেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন, যা এই ইস্যুতে বাংলাদেশের জন্য হবে সহায়ক। 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানকে বাংলাদেশের দীর্ঘকালের পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, স্বাধীনতা অর্জনের দুই মাসের মধ্যেই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া কয়েকটি দেশের মধ্যে এই দেশটি তাঁর হৃদয়ের খুব কাছের। তিনি যথার্থই বলেছেন, জাপান আমাদের বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার। বাংলাদেশ তার উন্নয়নের জন্য জাপানের অবিচল সমর্থন পেয়েছে এবং স্বাধীনতার পর জাপানের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে সরকারি উন্নয়ন সহায়তা পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার টোকিওর আকাসাকা প্রাসাদের কাছোনমা হলে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য চার বিশিষ্ট জাপানি নাগরিকের হাতে সম্মাননা তুলে দেন, যা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। জাপান এককভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী। জাপানের সহায়তার একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতু। বর্তমানে দেশের অন্যতম বড় দুটি প্রকল্প-মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বন্দর এবং মেট্রোরেল প্রকল্পেও বেশিরভাগ অর্থও দিচ্ছে জাপান।
জাপানের টোকিওতে সে দেশের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক থেকে আগামী দিনে বিশেষ সুফল পাবে বাংলাদেশ এমন প্রত্যাশা অমূলক নয়। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশে সবচেয়ে উদার বিদেশী বিনিয়োগ ব্যবস্থা রয়েছে। জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের যথেষ্ট সুযোগ রয়ে গেছে, যা কাজে লাগাতে সক্রিয়তা জরুরি। জাপান সরকারের উন্নয়ন সহায়তার পাশাপাশি জাপানি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে অধিকতর বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে এমন প্রত্যয় তৈরি হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের মধ্য দিয়ে। তথ্যপ্রযুক্তি ও সমুদ্রসম্পদ আহরণেও সহযোগিতা করতে পারে জাপান। আশার কথা, দেশে জাপানের বিনিয়োগ বেড়েছে, জাপানেও রপ্তানি বেড়েছে বাংলাদেশের। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হবে, যা উভয় দেশের ব্যাপক কল্যাণ ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবেÑ এমনটাই প্রত্যাশিত।



বার্তা সূত্র